শাজাহানপুরে কলেজ অধ্যাক্ষের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিল যুবলীগ নেতা !

শাজাহানপুরে কলেজ অধ্যাক্ষের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিল যুবলীগ নেতা ! ছবি-ওহাব

সুপ্রভাত বগুড়া (আবদুল ওহাব শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি): বগুড়ার শাজাহানপুরে গোহাইল ইসলামিয়া হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষের তালা ভেংগে অফিসের ফাইল পত্র তছনছ এরপর নতুন তালা ঝুলিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই প্রতিষ্ঠানটির নবাগত এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ সভপতি আলী ইমাম ইনোকির বিরুদ্ধে। সোমবার ১৯ অক্টোবর এসব তথ্য জানান, ওই কলেজের অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেন মুকুল।

রবিবারের এ ঘটনা প্রসংগে তিনি বলেন, কলেজের গভর্ণিং বডির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় সেপ্টেম্বর মাসে এডহক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে তিন জনের নাম সুপারিশ করা হয়। তারা হলেন, গোহাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু সহ তিনজন সমাজ সেবক। অপরদিকে গভর্ণিং বডির সভাপতি হওয়ার জন্য উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আলী ইমাম ইনোকি বেশ কিছুদিন যাবত জোর জবরদস্তি করে আসছিল।

Pop Ads

কিন্তু প্রাপ্ত তথ্যে তিনি জানতে পারেন তিনি বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় এবং এলাকায় তার গ্রহনযোগ্যতা না থাকায় তাকে কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি জন্য সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি।
তবে শিক্ষা বোর্ডে সুপারিশ না করা হলেও অদৃশ্য ভাবে উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ সভপতি আলী ইমাম ইনোকিকে এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে মনোনীত করে প্রতিষ্ঠানে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।

আর তাকে সভাপতি করার পরেই শারীরিক ও পারিবারিক সমস্যা দেখিয়ে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করে জমা দিয়েছেন গভর্ণিং বডির অপর দুই সদস্য শিক্ষক প্রতিনিধি অরুন কুমার সরকার ও অভিভাবক সদস্য তাজনুর ইসলাম। এ প্রসংগে জানতে চাইলে তারা বলেন, পারিবারিক সমস্য দেখিয়ে তারা কলেজ অধ্যক্ষ বরাবরে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। কারন দায়িত্ব তাদের পক্ষে পালন করা সম্ভব না।

অধ্যক্ষ মুকুল বলেন, এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত হওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিহিংসার জবাব দিতে তিনি তার অফিস কক্ষের তালা ভেংগে ভিতরে প্রবেশ ও অফিসের ফাইলপত্র তছনছ করে নতুন তালা লাগিয়ে দিয়েছেন এবং চাকুরী থেকে বরখাস্ত করার হুমকি দিয়ে আসছেন। এমতাবস্থায় তার অফিস করা ও কলেজ পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

তিনি আরও জানান, একইভাবে গত ১৫ সেপ্টেম্বর তার বাসায় হামলা করে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত ও প্রান নাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ১৬ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করেন ওই কলেজ অধ্যক্ষ।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনায় শাজাহানপুর থানায় যুবলীগ নেতা ইনোকী সহ ৭ জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে মামলাটি রেকর্ড করেনি থানা পুলিশ। এমনকি পুলিশ ঘটনাস্থলেও যায়নি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে শাজাহানপুর থানার ওসি আজিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি সম্পুর্ণ সঠিক না। আর আজকের ঘটনাটি জানা নেই। তবে অভিযোাগ দিলে তদন্ত করে দেখা হবে। এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ সভপতি আলী ইমাম ইনোকি বলেন, অফিস করা আমার অধিকার।

অথচ প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি হওয়া সত্বেও আমি যাতে অফিসে বসতে না পারি ও দায়িত্ব পালন না করতে সেজন্য অধ্যক্ষ ২৮ দিন যাবত অফিস কক্ষ খুলেন না। অর্থাৎ সরকারী নির্দেশনা সত্বেও আমাকে তিনি সভাপতি হিসেবে মানেন না। এমতাবস্থায় শিক্ষকদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন বকেয়া ছিল।। বিষয়টি বারবার বলা সত্বেও অধ্যক্ষ কর্ণপাত না করায় অফিস কক্ষ খুলে শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। তবে অফিসের চাবি অফিস সহকারীকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।