শাজাহানপুরে স্কুলের গাছ কেটে নিল সভাপতির পিতা

শাজাহানপুরে স্কুলের গাছ কেটে নিল সভাপতির পিতা । ছবি-ওহাব

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যোগ-সাজসের অভিযোগ !

সুপ্রভাত বগুড়া (আবদুল ওহাব শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি): বগুড়ার শাজাহানপুরে চাঙ্গুইর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রায় শতবর্ষী বয়সের ১২ টি প্রাচীন গাছ নিজেদের দাবী করে কেটে নিয়েছে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি শাহ আলমের পিতা মকবুল হোসেন। এ ঘটনায় প্রতিবাদ করার কেউ সাহস পাচ্ছেনা। প্রধান শিক্ষিকাও সীমাহীন নীরবতা পালন করছেন। ফলে একদিকে হাতছাড়া হচ্ছে স্কুলের ভুমি।

অপরদিকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার ২২ ডিসেম্বর এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, মকবুল হোসেনের দাদা ভুমি দান করলে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী লোকজন ১৯৩১ সালে চাঙ্গুইর প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এ কারনে প্রায় শত বছর যাবত ওই ভুমি স্কুলমাঠ হিসেবে ব্যাবহার হয়ে আসছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠাকালীন সময়েই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও কমিটি স্কুলভুমির চারিদিকে গাছ রোপন করে। এভাবে পেরিয়ে যায় প্রায় শতবছর। গাছগুলোও হয়ে উঠে বিশাল আকৃতির।

Pop Ads

তারা আরও জানান, কিছুদিন হলো কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য দাতাদের উত্তরসুরী শাহ আলম অনেক চেষ্টা তদবীর করে সভাপতি হয়। এরপর থেকে তারা স্কুলের জমির মালিকানা দাবী করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগসাজস করে বিদ্যালয়ের গাছগুলো কেটে নেওয়া হচ্ছে।

এ প্রসংগে ওই গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম ও কফির উদ্দিনের ছেলে আবদুল জলিল বলেন, এ গ্রামের ধুলোবালিতেই বড় হয়েছি। ছোটবেলায় দেখেছি এ ভুমি স্কুলের এবং এ জন্য বিদ্যালয় থেকে গাছ লাগানো হয়েছে এবং শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীরাই পরিচর্যা করে বড় করেছে। দীর্ঘ প্রায় ১০০ বছর পর জমির ও গাছের নতুন মালিক সৃষ্টি হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সন্দেহজনক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

তথাপি প্রধান শিক্ষক কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। তবে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির পিতা মকবুল হোসেনকে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই জমি আমাদের এবং বিশ হাজার টাকা স্কুলে দিয়ে এসব মিমাংসা করেছি।

জমির মালিকানা বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা সাবিস্তান বলেন, বিদ্যালয়ের সবজমি বুঝে নেওয়া হয়নি। তবে কিভাবে জমির মালিকানা দাবী করে ও গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, তারা বলেছে ওই জমি তাদের তাই কাটতে বলেছি।

আর বিদ্যালয়টির সভাপতি শাহ আলম বলেন, এভুমি ও গাছ বিদ্যালয়ের না ব্যাক্তি মালিকানাধীন। তাই কেটে নেওয়া হচ্ছে। তবে শত বছর পর মালিকানা দাবী ও স্কুলের ভুমি কতটুকু এবং কি করে নিশ্চিত হলেন এবং নথি অনুযায়ী তা সঠিক আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওসব প্রধান শিক্ষকের বিষয়। আমার বিষয় না। এদিকে বিশ্বস্ত সুত্রে জানাযায়, কিছুদিন আগে ওই এলাকায় তিনি বঙ্গবন্ধুর ছবি মুছে ফেলে ছিলেন।

এ ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করা হলে জেল-হাজতের পর তিনি জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। স্কুল মাঠের গাছ কাটার বিষয়ে শাজাহানপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি জেনেছি তবে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।