স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পূর্বপরিকল্পিত : কৃষিমন্ত্রী

সুপ্রভাত বগুড়া (জাতীয়): স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনের নামে হেফাজতে ইসলামের সহিংস কর্মকাণ্ডকে পূর্বপরিকল্পিত বলে দাবি করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। রোববার (২৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ মিলনায়তনে মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন দাবি করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয় এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। এ সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং সারা পৃথিবীতেই আলোড়ন তুলেছে। সারা পৃথিবী উদযাপনে সামিল হয়েছে। বিশ্বের যেসব দেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেনি, স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন দেয়নি, বিরোধিতা করেছে; সেসব দেশও এ উদযাপনে সামিল হয়েছে।

Pop Ads

বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। অথচ স্বাধীনতাবিরোধী, পাকিস্তানের এ দেশীয় দোসর-সহযোগী ও ধর্মান্ধরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উদযাপনকে ভণ্ডুল ও  কালিমা লিপ্ত করার জন্য অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। এই ধর্মান্ধদের ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সম্প্রতি ২০ নাগরিকের দেওয়া বিবৃতি প্রসঙ্গে ড. রাজ্জাক বলেন, বিএনপি-জামায়াত ও ধর্মান্ধরা যখন প্রতিবাদের নামে জ্বালাও-পোড়াও, জনগণ ও সরকারি সম্পদ নষ্টসহ সাধারণ নাগরিকের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে তখন এ তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা সবসময়ই নীরব থাকেন।

ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে নিয়ে আসা হয়েছে। কোনো স্বৈরাচারকে নিয়ে আসা হয়নি। এটা নিয়ে ধর্মান্ধরা দেশে তাণ্ডব চালাচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতিবাদের নামে জ্বালাও-পোড়াও, জনগণ ও সরকারি সম্পদ নষ্টসহ সাধারণ নাগরিকের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। এ ধরনের আন্দোলন ও প্রতিবাদের অধিকার দেশের কোনো নাগরিকের নেই। শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার সব নাগরিকের রয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, পৃথিবীর বহু দেশের তুলনায় শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ। বিশ্বনেতারাও আজ বাংলাদেশের প্রশংসায় মেতেছেন। তিনি আরও বলেন, অর্থনীতির সব ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কৃষিতে এখনও অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। সেগুলোকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, দেশে দুটি শক্তি বিরাজমান। একটি উন্নয়নের পক্ষে আরেকটি ধ্বংসের পক্ষে। যারা দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল তারাই আজ এ দেশের উন্নয়নের বিপক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আগামী প্রজন্ম যেন উন্নত রাষ্ট্রে নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে বাস করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে।

মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বরেণ্য ইতিহাসবিদ ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, কৃষিতে অভাবনীয় সাফল্যের কারণেই দেশে খাদ্য সংকট নেই। স্বাধীনতার পর সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ছিল না। চাহিদা মেটাতে হতো বিদেশ থেকে আমদানি করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১৬ কোটির বেশি হলেও দেশে উদ্বৃত্ত খাদ্যের মজুত রয়েছে।

তবে অনুৎপাদনশীল খাতে বাজেট কমিয়ে উৎপাদনশীল কৃষিখাতে বাজেট বাড়ালে কৃষিখাতে আরও উন্নয়ন হবে। কৃষিবিদদের জন্য স্বতন্ত্র পে স্কেল হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ওয়াহিদা আক্তার ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ।