হারিয়ে যাচ্ছে নীতি নৈতিকতা-সাংবাদিক আব্দুল ওহাব

হারিয়ে যাচ্ছে নীতি নৈতিকতা-সাংবাদিক ওহাব

সুপ্রভাত বগুড়া (আবদুল ওহাব সাংবাদিক ও কলামিষ্ট): হারিয়ে যাচ্ছে মানুষের নীতি, নৈতিকতা ও আদর্শ। সামাজিক অবক্ষয় সমাজকে রুগ্ন করে তুলেছে। দিনদিন হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে আগামী প্রজন্ম। সমাজে এমন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে নীতি ও নৈতিকতার কথা এখন আর কেউ ভাবে না। আগেকার দিনে লোকমুখে একটা প্রবাদ ছিল, নিজে ভালো তো জগৎ ভালো। এখন বাস্তবে এ প্রবাদ প্রতিফলিত হয়না। এখন ভালো থাকাকে একদল মানুষ দুর্বলতা মনে করে। খারাপ কাজ করে কিছু মানুষ গর্বিত হয়ে নিজেকে ঘোষণা দিয়ে জাহির করে। একটা সময় ছিল তখন মানুষকে চেনা ও জানা যেত। এখন যায় না। শর্টকার্ট পথে সবাই উপরের সিড়িতে উঠতে চায়।

সততা, নিষ্ঠা, দায়িত্ববোধ গুরুত্বহীন। আবার কিছু মানুষ রাজনীতির আড়ালে দ্রæত বিত্তশালী হতে অপকর্ম করে অবাধে। গডফাদারদের দাপট চলছে মাদক ও মানব পাচার। খাদ্যে ভেজাল মেশাচ্ছে নির্লজ্জ কিছু ব্যবসায়ী। বিপন্ন এই সমাজে অর্থলোভে মানুষ খুন করছে মানুষকে। অন্যায় কাজ করে, মনের সুখে কিছু মানুষ বুক ফুলিয়ে সমাজে চলছে। এই নির্লজ্জ মানুষদের কাছে জিম্মি সাধারন জনগন। নৈতিকতার চরম এই অবক্ষয়ে দুর্ণীতি আজ সীমাহীন। তথাপি বিপথগামী হয়েও তারা সমাজের মুল ¯্রােতে। তাই সমাজের অসুস্থতা আজ স্তরে স্তরে।।

Pop Ads

কিন্তু এভাবে কতকাল ? মানব জীবনের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে এই অসুস্থতা থেকে সমাজকে রক্ষা করতে হবে। সমাজকে বাঁচাতে হবে। সুস্থতা ও আলোর পথ দেখাতে হবে। কিন্তু কীভাবে সম্ভব, সে পথ খুঁজে বের করতে হবে। শুধু সামাজিক সচেতনতা নয়, আদর্শগত মানুষ সৃষ্টি করতে সু শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।আনতে হবে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন এবং সেই সাথে তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। মাদকসেবী ও ধুমাপায়ীদের সরকারী চাকুরী থেকে অযোগ্য করতে হবে। অবাধে ধুমপান ও তামাক পণ্য বিক্রি বন্ধ করতে হবে। দুনীতিবাজদের চাকুরীচ্যুত করতে হবে।

প্রবীন, শিক্ষিত, সমাজসেবক ও গুণীজনদের সমাজের দায়িত্বে আনতে তাদের উজ্জীবিত করে নেতৃত্বে আনতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে নীতি ও নৈতিকতার জায়গাগুলো। সর্বস্তরের মানুষকে ঘুম ভাঙিয়ে জাগিয়ে তুলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে মানুষের মাঝে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে অন্যায়কে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া নয়। অন্যাায়ের বিরুদ্ধে সবাইকে প্রতিবাদী হওয়ার নামই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। আর এই চেতনাকে ধারণ করেই অর্থনীতি ও রাজনীতিকে ফিরিয়ে আনতে হবে স্বাভাবিকতার পথে।

আদর্শিক ভাবধারা জাগিয়ে হৃদয় থেকে উপলব্ধি নিয়ে রাজনীতি করলে সমস্যা নেই। তবে রাজনীতিকে ব্যবসায় রূপান্তর করা যাবেনা। অনেকের কাছে রাজনীতি লাভজনক ব্যবসা। এ ব্যবসায় বিনিয়োগ করে সবাই বড়লোক হতে চায় ঝটপট। আর সমস্যাটা এখানেই। অনেক রাজননৈতিক নেতা এখন জনসেবা না করে কর্মীসেবা করে ভোটের আগে জনগনের মতামতের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়। ফলে ভীতি সঞ্চার হয় জনমনে। জনতার ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়না। ওই নেতার মদদে দুর্ণীতিবাজরা সমাজের বারটা বাজিয়ে ছাড়ে। এভাবে দিনেদিনে ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হতে থাকে সরকারের। অবক্ষয় হয় সমাজ ও রাষ্ট্রের।

শুধু কি তাই, তথাপি গুণীজনদের চরম নীরবতায় আধিপত্য বিস্তার করে বখাটেরা। এভাবে গলে পচে যায় সমাজ রাষ্ট্র। একবুক কষ্ট নিয়ে সাধারন মানুষ বেঁচে থাকে ছলছল চোখে। কিন্তু বলার কোন ভাষা থাকেনা। কিন্তু এ থেকে বেরিয়ে আসার দায়িত্ব রাজনীতিবিদদের। তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সবকিছুর অবসান ঘটিয়ে সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়া দেখতে চায় জাতী। আসুন, রাষ্ট্র যন্ত্রকে অন্যায়ের বিবুদ্ধে বলিষ্ঠ করে গড়ে তুলি। আগামী প্রজন্মের জন্য সোনার বাংলা গড়ি…।

লেখক: আব্দুল ওহাব                                                                                      শাজাহানপুর,বগুড়া প্রতিনিধি                                                                                          এশিয়ান টেলিভিশন, যায়যায় দিন, সুপ্রভাত বগুড়া অন-লাইন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here