১৬০ বছরের পুরোনো পেনশন-সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে আজ মধ্যরাত থেকে রেলকর্মীদের ধর্মঘট, ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা

১৬০ বছরের পুরোনো পেনশন-সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে আজ মধ্যরাত থেকে রেলকর্মীদের ধর্মঘট, ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা

১৬০ বছরের পুরোনো পেনশন-সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে আজ রাত থেকে ধর্মঘটে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারীরা। রোববার (২৭ আগস্ট) সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান এ ঘোষণার কথা জানান।

রেলওয়ের কর্মীরা তাঁদের দৈনিক শ্রমঘণ্টার বাইরে প্রতিদিন যে ওভারটাইম করেন, সেটা পেনশন-আনুতোষিক (পার্ট অব পে) প্রদানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিধান ছিল। ফলে রেলওয়ে বিধিবিধান অনুযায়ী পার্ট অব পের ফলে মূল পেনশনের সঙ্গে অতিরিক্ত ৭৫ শতাংশ সুবিধা পেতেন, যেটা এ দেশে রেল চালু হওয়ার শুরু থেকে ১৬০ বছর ধরে চলে আসছে।

Pop Ads

কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এই সুবিধা প্রত্যাহারের নির্দেশনা দেওয়ায় এবং অবসরে যাওয়া শ্রমিকদের পেনশনের ফাইল আটকে যাওয়ায় ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট থেকে আন্দোলন করে আসছেন রেলকর্মীরা। গত ২০ আগস্ট রেলমন্ত্রী, সচিব ও রেলওয়ে মহাপরিচালক শ্রমিক সমিতিকে ডেকে পাঠান। তবে এ বিষয়ে এক নেতা অভিযোগ করে বলেন, রেলমন্ত্রী সেদিন আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে পারেননি।

তিনি আমাদের হুমকি দিয়েছেন। আমরা তো নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করছি, আর এর মধ্যে ওনাদের প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন বছর সময় দেওয়া হয়েছে। এটা নতুন কোনো বিষয় না, কারণ এটা ১৬০ বছর যাবৎ চলে আসছে। ১৬০ বছর ধরে চলে আসা একটা বিষয় হুট করে বন্ধ করে দেবে, এটা তো রেলের কোনো স্টাফ মেনে নিতে পারেন না।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। চার মাস আগে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনেও আন্দোলন করেছি, কিন্তু কোনো সমাধান আসেনি। উল্টো মিটিং ডেকে মন্ত্রী আমাদের হুমকি দিয়েছেন। অন্যদিকে রেলওয়ে শ্রমিকদের পেনশনের ফাইল আটকে রেখেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আমরা সব সমস্যা সমাধানের দাবিতে আন্দোলনে যাচ্ছি।’

এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় মাইলেজ সুবিধা সীমিত করতে রেল মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়।

ওই চিঠিতে আনলিমিটেড মাইলেজ সুবিধা বাদ দিয়ে তা সর্বোচ্চ ৩০ কর্মদিবসের সমপরিমাণ করার কথা জানানো হয়। এ ছাড়া বেসামরিক কর্মচারী হিসেবে রানিং স্টাফদের পেনশন ও আনুতোষিক ভাতায় মূল বেতনের সঙ্গে পাওয়া অন্য কোনো ভাতা যোগ করার বিষয়টিও বাদ দেওয়া হয়। এর পর থেকেই ক্ষোভ বাড়তে থাকে রেলশ্রমিকদের।