ক্ষেতলাল তরমুজ চাষে ছয় কৃষকের সাফল্যে

190

এম রাসেল আহমেদ,জয়পুরহাটঃ জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করা হয়েছে। উপজেলায় পরীক্ষামূলক ভাবে ছয় কৃষক এ তরমুজ চাষ করেছেন। এরই মধ্যে গাছে ফলন আসতে শুরু করেছে। অনেক কৃষক তরমুজ বিক্রি করছেন ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে। তরমুজ চাষে নেওয়া হয়েছে মালচিং ও আর্গানিক পদ্বতি। গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সহযোগিতা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেতলাল 6 জন কৃষকের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করা হয়েছে। প্রায় 1 হেক্টর জমিতে আবাদকৃত তরমুজ ক্ষেতে এরই মধ্যে ফলন এসেছে। প্রতি কেজি তরমুজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণের আওতায় আবাদ করা তরমুজ ক্ষেতগুলোয় নেওয়া হয়েছে আর্গানিক ও মালচিং পদ্বতি। পোকামাড়ক দমনে ব্যবহার করা হচ্ছে ফেরোমন ফাঁদ ও ইয়েলো কার্ড। বর্তমানে ইয়েলো কিং, অনুভব,ইয়োলোবার ও ব্ল্যাকবেবি জাতের তরমুজ চাষ করা হলেও আগামীতে অন্য জাত চাষ করা হবে।
উপজেলার বরাইল ইউনিয়নের কুসুমশহর, বড়তারার কর্নপাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় এ তরমুজ চাষ করা হয়েছে। বড়তারা ইউনিয়নের তরমুজ চাষি কৃষক শ্রী কমল বলেন, ‘আমি এবার শখের বশে 66 শতক জমিতে ব্ল্যাকবেবি, ইয়োলো কিং জাতের গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করেছি। প্রতিটি তরমুজের বর্তমান ওজন দুই থেকে চার কেজি। প্রতি কেজি তরমুজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে 4০-5০ টাকায়। কম খরচ ও পরিশ্রমে তরমুজ চাষ করে ভালো লাভ হয়েছে। এটি যেমন রসালো; তেমনই সুমিষ্ট। কর্নপাড়া গ্রামের তরমুজ চাষি অনিল চন্দ্র, ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি 80 শতক জায়গায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করেছেন। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় 75 হাজার টাকা।বিক্রি হয় তিন লক্ষ টাকা। সম্পূর্ণ অর্গানিক ও মালচিং পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে তরমুজ ক্ষেত। এখানে ইয়েলো কিং,অনুভব ও ব্ল্যাকবেবি জাতের তরমুজ চাষ করা হয়েছে। পোকামাকড় রোধ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে ফেরোমন ফাঁদ ও ইয়েলো কার্ড। তরমুজের গাছের পরিচর্যার জন্য দেওয়া হয়েছে মালচিং পেপার। ওপরে মাচা দিয়ে ফল প্যাকেট জাত করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব জাতের তরমুজের ভেতরের অংশের রং হলুদ ওলাল হয় এবং খেতেও বেশ সুস্বাদু। তিনি বলেন, ‘কৃষি বিভাগ প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবে তরমুজ চাষের জন্য বিনা মূল্যে বীজ, মালচিং পেপার, ফেরোমন ফাঁদ, জৈব সার দিয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় বেশি লাভের আশায় বুক বেঁধেছি। এক সপ্তাহ পর বিক্রি শুরু করবো।’ শুধু কৃষক কমল চন্দ্র নয় একই গ্রামের কৃষ্ণ চন্দ্র সহ ছয় জন চাষি প্রথমবারের মতো চাষ করেছেন গ্রীষ্মকালীন তরমুজ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুর রহমান বলেন, ‘এ অঞ্চলের মাটি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী। চলতি বছর প্রথমবারের মতো ক্ষেতলাল এক হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করা হয়েছে। ছয় জন কৃষকের মাধ্যমে এ তরমুজ আবাদ করা হয়। এছাড়া গ্রীষ্মকালীন তরমুজ উচ্চমূল্যের ফসল হওয়ায় চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কৃষকেরা।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জনাবা মোছাঃ রাহেলা পারভীন, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা এনামুল হক, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) মোঃ শহিদুল ইসলাম সহ উপজেলার অন্যান্য কর্মকর্তাগণ সরজমিনে তরমুজ ক্ষেত পরিদর্শন করেন।