ঘুষ প্রদানের মামলায় আদালত থেকে বেরিয়ে যা বললেন ট্রাম্প

ঘুস প্রদানের মামলায় আদালত থেকে বেরিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
সাবেক পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে অবৈধ সম্পর্কের ব্যাপারে মুখ বন্ধ রাখার জন্য ঘুস প্রদানের মামলায় আদালতে ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই অর্থ দেওয়া সংক্রান্ত মামলায় হাজিরা দিতে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) নিউইয়র্কে ম্যানহাটনের আদালতে উপস্থিত হন ট্রাম্প। তবে আদালতের কাছে নিজের বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগের সবগুলোই অস্বীকার করেছেন তিনি।
আদালতের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ট্রাম্প নিউইয়র্ক থেকে ফ্লোরিডায় চলে আসেন। ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোয় নিজ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি কড়া ভাষায় বিচার সংশ্লিষ্ট সবার সমালোচনা করেন। ট্রাম্প তার বক্তব্য শুরু করেন এই বলে, ‘একমাত্র অপরাধ আমি যেটি করেছি, সেটি হলো যারা আমাদের দেশকে ধ্বংস করতে চায় তাদের কাছ থেকে দেশকে নির্ভয়ে রক্ষা করেছি।’
এছাড়া প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় অভিসংশন করার বিষয়টিরও সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেছেন, একাধিক বিষয়ে তদন্ত করে তাকে আক্রমণ করা হয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, ‘শুরু থেকে, ডেমোক্র্যাটসরা (জো বাইডেনের দল) আমার ক্যাম্পেইনের ওপর নজরদারি চালিয়েছে। তারা আমার ওপর তদন্তের হামলা চালিয়েছে।’
এছাড়া ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপি করে জো বাইডেন জয় পেয়েছেন বলে আবারও দাবি করেছেন তিনি। এরপর নিউইয়র্কের ম্যানহাটন আদালতের জেলা অ্যাটর্নি আলভিন ব্রাগের কড়া সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। এই আলভিন ব্রাগই ট্রাম্পকে আদালত পর্যন্ত নিয়ে যেতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা করেছেন। অ্যাটর্নি ব্রাগকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আলভিন ব্রাগ একজন ক্রিমিনাল। তার বিচার হওয়া উচিত অথবা তার পদত্যাগ করা উচিত।’
ট্রাম্পের দাবি, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তথ্যগুলো মিডিয়ায় ফাঁস করেছেন ব্রাগ। এছাড়া ট্রাম্প বলেছেন, ‘জেলা অ্যাটর্নির অফিসের একটি ওয়েবপেইজও ছিল। যারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এসব করেছে তারা সেখানে বৈঠক করত।’ এরপর ম্যানহাটন আদালতের বিচারক জুয়ান মার্চেনের সমালোচনা করেন ট্রাম্প। সাবেক প্রেসিডেন্টের দাবি, তার বিরুদ্ধে এমন একজন বিচারক বিচার করছেন যার পুরো পরিবার ট্রাম্প বিরোধী। তিনি বলেছেন, ‘আমার একজন ট্রাম্প-ঘৃণাকারী বিচারক আছে, সঙ্গে আছে ট্রাম্প-ঘৃণাকারী স্ত্রী ও পরিবার।’
ট্রাম্পের দাবি, বিচারক জুয়ান মার্চেনের স্ত্রী তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে টুইট করেছিলেন। অপরদিকে তার মেয়ে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের হয়ে কাজ করেছেন। এরপর বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা খারাপ। আমাদের অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। রাশিয়া চীনের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। আপনারা বিশ্বাস করতে পারেন? সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। যদি আমি আপনাদের প্রেসিডেন্ট থাকতাম তাহলে এর কিছুই হতো না।’
এছাড়া ট্রাম্প বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের প্রসঙ্গ টানেন। তিনি দাবি করেন হান্টার বাইডেন নিজের ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ ঠিক করাতে দিয়ে সেটি নিতে ভুলে যান। এরপর ওই ল্যাপটপের ভেতর থেকে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। যেসব তথ্য থেকে জানা যায়, হান্টার তার পরিবারের পরিচয় দিয়ে সুবিধা আদায় করে নিতে চেয়েছিলেন। হান্টার ও জো বাইডেনসহ সবাইকে ‘ক্রিমিনাল পরিবার’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।