নওগাঁ বদলগাঁছীতে কোলা হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের মহোৎসব !

নওগাঁ বদলগাঁছী তে,কোলা হাটে,অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের মহোৎসব। ছবি-বুলবুল

সুপ্রভাত বগুড়া (বুলবুল  আহম্মেদ ,নওগাঁ  বদলগাঁছী  প্রতিনিধি): নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কোলা হাটে খাজনা,  আদায়ের নামে ক্রেতা বিক্রেতার নিকট থেকে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের মহোৎসব চলছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এলাকাবসী জানায় উপজেলা চেয়ারম্যান অতিরিক্ত খাজনা আদায় বন্ধ করতে দীর্ঘ দিন থেকে লড়াই করে চলেছে। কিছুদিন পরিস্থিতি ভালো ছিল। আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তথ্য সংগ্রহকালে জানা যায়, চলতি বছরের পহেলা বৈশাখ থেকে কোলা হাটের রাজস্ব ভূমি অফিস থেকে খাজনা আদায় করছে।

রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে রয়েছেন তহশীলদার অধির চন্দ্র রায়। শুরু থেকে নীতিমালা অনুসারে শুধু ক্রেতাদের কাছ থেকে টোল আদায় করা হতো। গত তিন সপ্তাহ থেকে অতিরিক্ত হারে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ের নিকট থেকে খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে কাশিমালা গ্রামের নয়ন জানায়, ৫৫০ টাকা দরে দুই মণ পটল বিক্রি করেছে সে। তার কাছ থেকে ২ মণে ৩০ টাকা খাজনা নিয়েছে। হলুদবিহার গ্রামের বাদল মন্ডল জানায়, তার কাছ থেকে ১৫ টাকা মণ খাজনা নিয়েছে।

Pop Ads

সে খাজনা না দেওয়ার জন্য বাকবিতন্ডা করেছে। শেষে ১৫ টাকা হারে খাজনা দিয়ে চলে আসতে হয়েছে। আরো অর্ধশতাধিক কৃষকের সাথে কথা বললে তারা একই কথা জানায়। কয়েকজন পাইকারী ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, হাটের সাবেক ইজারাদার ফেরদৌস সরদার হাটের খাজনা আদায় করছেন। ১০০ কেজি ওজনের এক বস্তা পটল, বেগুন ও আলুর জন্য খাজনা দিতে হয় ৫০ টাকা। নীতিমালা অনুসারে এক ভ্যান পটল বিক্রি করলে ক্রেতার নিকট থেকে ১২ টাকা খাজনা নিতে পারবে।

সেখানে কৃষকের কাছ থেকে প্রতিমণ ১৫ টাকা খাজনা জোর পূর্বক আদায় করছে এবং ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে নিচ্ছে বস্তা প্রতি(১০০ কেজি ওজনের) ৫০ টাকা। অন্যান্য মালামালের খাজনা আদায়ের চিত্র আরো ভিন্ন। একটি গরু বিক্রি হলে খাজনা চারশত টাকা তারা নিচ্ছে। কিন্তু ছাগল, ভেড়ার জন্য গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত মাশুল। নিয়ম অনুসারে প্রতিটি ছাগল, ভেড়ার খাজনা ১৫০ টাকা। সেখানে তারা জোরপূর্বক আদায় করছে ২৫০ টাকা।

ভগবানপুর গ্রামের সাইফুদ্দিন জানান, তিনি ৫০ হাজার টাকা মূল্যে একটি গরু এবং ৭ হাজার ৮০০ টাকা দিয়ে একটি খাসি ক্রয় করেছেন। গরুর জন্য ৪ শত টাকা এবং ছাগলের জন্য খাজনা দিতে হয়েছে ২৫০ টাকা। আরো ১০/১৫ জন ক্রেতার সঙ্গে কথা বললে তারাও অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের কথা জানালেন। রাজস্ব আদায়ের রশীদ ফাঁকা রয়েছে। কত টাকা টোল আদায় করা হচ্ছে তা রশীদে উল্লেখ করা হচ্ছে না। রশীদে টোল আদায়ের পরিমাণ উল্লেখ করা হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে ২ জন আদায়কারী জানায়, এভাবেই সবসময় রশীদ কাটা হয়।

খাজনা আদায়কারী সাবেক ইজারাদার ফেরদৌস সরদার জানায়, হাট খাস কালেকসন হচ্ছে। ক্রেতা বিক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত খাজনা, কেন নেওয়া হচ্ছে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান আমরা নীতিমালা অনুসারে খাজনা  আদায় করছি। অতিরিক্ত খাজনা  নিচ্ছি না। এ বিষয়ে খাস রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে থাকা তহশীলদার অধির চন্দ্র রায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি জানান, একটা সিদ্ধান্ত মোতাবেক এক সপ্তাহে দুই হাট মঙ্গলবার ও শুক্রবার ৭১ হাজার টাকা চুক্তি ভিত্তিতে ফেরদৌস সরদারকে হাটের খাজনা আদায় করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তবে অতিরিক্ত খাজনা যদি সে আদায় করে থাকে তাহলে তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহা. আবু তাহির এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, কোলা হাট খাস রাজস্ব আদায় হচ্ছে। রাজস্ব আয় যাতে ভালো আসে সে ব্যবস্থা করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here