বগুড়ায় আদমদীঘি থেকে অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রী ঢাকা থেকে উদ্ধার !

বগুড়ায় আদমদীঘিতে থেকে অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রী ঢাকা থেকে উদ্ধার ! ছবি-শিমুল
সুপ্রভাত বগুড়া (শিমুল  হাসান, আদমদীঘি, (বগুড়া), প্রতিনিধি): বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী বশিকোড়া দাখিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রীকে পাচারের উদ্দেশ্যে অচেতন করে অপহরনের ২দিন পর ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহৃত ছাত্রীর বাবা আব্দুল হান্নান মোবাইলের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে শনিবার রাতে সেখান খেকে মেয়ে কে নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।
এ ঘটনায় আদমদীঘি থানায় অপহরণকারি ও তার বাবাকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার সরেজমিন জানা গেছে, উপজেলার কুন্দগ্রাম ইউনিয়নের কড়ই গ্রামের আব্দুল হান্নান একই ইউনিয়নের মঠপুকুরিয়া গ্রামে বিয়ে করে সেখানেই পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। আব্দুল হান্নানের ২মেয়ের মধ্যে হালিমা খাতুন (১২) বড়। সে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ালেখা করছে।
এক সময় একই মাদ্রাসার ছাত্র এবং মঠপুকুরিয়া পশ্চিম পাড়ার বাবু হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন (১৭) এর বন্ধুত্ব হয়। করোনা সংক্রান্ত ছুটির পুর্বে সাব্বির হালিমা কে ফুসলিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখে। খোঁজ পেয়ে বাবা-মা তাদের মেয়েকে অচেতন অবস্থায় সাব্বিরের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। এর পর হালিমার মা ছাবিহা বেগম নিজে মেয়ে কে মাদ্রাসায় নিয়ে যেতেন এবং নিয়ে আসতেন।
এই সময় করোনা সংক্রান্ত কারনে মাদ্রাসা ছুটি হয়ে যায়। এর পর সাব্বির ভ্যান চালানো শুরু করে। সে প্রায় প্রতিদিন হালিমা কে ঢাকায় সাব্বিরের মামা বাড়িতে ভাল কাজ পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখায়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকালে হালিমা খাতুনকে বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে ভ্যানে তুলে নিয়ে উপজেলার মুরইল বাসস্ট্যান্ডে যায় এবং শ্যামলী পরিবহনের টিকিট কাটে এবং অচেতন করার ওষুধ মিশ্রিত পানি খাইয়ে বাসে তুলে দেয় এবং তাকে চান্দুরা শাপলা বোডিং নামতে বলে।
তাকে আরো বলে যে, তার দুই মামা এসে তাকে নিয়ে যাবে। এদিকে বাস ছাড়ার পরই চেতনানাশক ওষুধের কারনে  ঘুমিয়ে পড়ে হালিমা। বাসটি চান্দুরা পার হয়ে আশুলিয়া ইপিজেড বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছলে হামিলার চেতনা ফেরে এবং সে সেখানে নেমে পরে। কিন্তু তাকে কেউ নিতে না আসলে এক সময় কান্নাকাটি করতে থেকে। এ সময় তার দেখা মেলে সেখানে চাকরি সুত্রে অবস্থান করা মটপুকুরিয়া গ্রামের এক ব্যক্তির সাথে।
তিনি সব শুনে কুন্দুগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান এস এম বেলাল হোসেনকে মোবাইল ফোনে ঘটনাটি জানায় এবং শিশু হালিমা কে তাঁর আশ্রয়ে রাখেন। পরে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে খবর পেয়ে হালিমার বাবাব সেখানে গিয়ে মেয়ে নিয়ে শনিবার রাতে বাড়িতে ফেরেন।
রবিবার দুপুরে হালিমার বাবা আব্দুল হান্নান তার মেয়েকে পাচারের উদ্দেশ্যে অপহরন করা হয়েছিল মর্মে মঠপুকুরিয়া গ্রামের ওই দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদমদীঘি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। থানার অফিসার ইনর্চাজ জালাল উদ্দীন অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাটি তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here