বরখাস্ত (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকির সব সম্পত্তি ক্রোকে আদালতের নির্দেশ !

সুপ্রভাত বগুড়া ডেস্ক: কক্সবাজারের টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকির সব সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এছাড়াও না-মঞ্জুর হয় প্রদীপের জামিন। সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, ক্রোকের আদেশ দেয়া সম্পত্তির মধ্যে প্রদীপের স্ত্রী নামে নগরের পাথরঘাটা এলাকার দুই ইউনিটবিশিষ্ট একটি ছয়তলা বাড়ি, নগরের মুরাদপুর এলাকার সেমিপাকা বাড়ি, কক্সবাজারে ফ্ল্যাট, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কার এবং বেসিক ব্যাংকের আসাদগঞ্জ শাখায় ১৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকা থাকা একটি হিসাব।

এর আগে গত ২৩ আগস্ট প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ বাদী হয়ে মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দীন। এ মামলায় ২৭ আগস্ট আদালতে প্রদীপ কুমার দাশকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জমা দেয়া হয়। ১৪ সেপ্টেম্বর মহানগর সিনিয়র স্পেশাল দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত দুদকের মামলায় প্রদীপ কুমার দাশকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন। সেদিনই প্রদীপের আইনজীবী জামিন আবেদন করলে ২০ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য করে আদালত। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন এবং ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিন কোটি ৯৫ লাখ পাঁচ হাজার ৬৩৫ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।

Pop Ads

২০১৮ সালে প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকী কারণের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে দুদক। ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল তাদের দুজনকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। ১২ মে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এ তারা পৃথক সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।
প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দীন আদালতে করা আবেদনে উল্লেখ করেন, আসামিরা সম্পত্তিগুলো হস্তান্তর ও স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন বলে দুদক জানতে পেরেছে।

এ জন্য এগুলো যাতে বিক্রি করা না যায় কিংবা হস্তান্তর করা না হয়, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্রোকের নির্দেশ দেয়া হোক। মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রদীপের বাবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) একজন নিরাপত্তাপ্রহরী ছিলেন। ১৯৯৫ সালে উপপরিদর্শক (এসআই) পদে যোগ দেন প্রদীপ। ২০০২ সাল থেকে তার সম্পদগুলো দৃশ্যমান হতে থাকে। এসময় নানা কারণে প্রদীপ হতে থাকেন আলোচিত।

এদিকে জামিন আবেদন না-মঞ্জুর হলেও প্রদীপের সাথে দেখা করার অনুমতি চেয়েছে তার আইনজীবিরা। এ বিষয়ে জেলকোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে ওসি প্রদীপসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কক্সবাজার আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করছে র‌্যাব। ওসি প্রদীপ বর্তমানে কারাগারে আছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here