রংপুরে গাইনি ডাক্তারের সাথে নাপিতের বিয়ে নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড়

সুপ্রভাত বগুড়া (গরম খবর): সম্প্রতি দেশে গণমাধ্যমে একটি খবর প্রকাশ করা হয় সেখানে একজন নাপিত এবং একজন গাইনি ডাক্তার নিজেদের মধ্যকার বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে বিয়ে করেন তবে এই বিয়ে নিয়ে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে এই বিয়ের বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক ভাবে আলোচনা চলছে সর্বত্র মূলত রংপুর নগরীর সেনপাড়া এলাকার গাইনি চিকিৎসক ছিলেন ওই নারী। একজন ডাক্তার নাপিতকে বিয়ে করলে পুলিশের সমস্যা কোথায়? বিয়ে করা অন্যায় বা অসামাজিক কাজ কি-না? ’ডাক্তারকে বিয়ে করে নাপিত অপরাধ করেছে’ বলে পুলিশের কর্মকর্তা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা খুবই অন্যায় করেছেন।

বরং ওই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।” বলছিলেন মানবাধিকার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সালমা আলী। নাপিতকে এক নারী চিকিৎসক বিয়ে করে অন্যায় করেছেন বলে সম্প্রতি রংপুরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাসের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সালমা আলী এ কথা বলেন।

Pop Ads

গত ২৩ ডিসেম্বর রংপুরে সিআইডির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস। সেখানে ওই নারী চিকিৎসক, তার স্বামী (নাপিত) ও সন্তানকে হাজির করে পুলিশ। মিলু মিয়া বিশ্বাস সংবাদ সম্মেলনে জানান, ওই নারী চিকিৎসকের বাবা তার মেয়ে (৩৪) অপহৃত হয়েছেন বলে মামলা করেছিলেন। প্রায় ২১ মাস পর তাদের সবাইকে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে উদ্ধার করা হয়।

অভিযোগ এনে ওই চিকিৎসকের স্বামীকে কারাগারেও পাঠানো হয়। আদালতে উপস্থাপনের পরপরই ওই নারী জানান, তিনি স্বামী–সন্তান নিয়ে সুখে সংসার করছিলেন, এই বক্তব্যের পরপরই তাকে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেন আদালত।

গত ২৩ ডিসেম্বর ওই নারী চিকিৎসক, তার স্বামী ও সন্তানকে সংবাদ সম্মেলনে হাজির করে পুলিশ

পরে পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস একটি জাতীয় দৈনিককে বলেন, ’একজন নাপিতকে বিয়ে করায় নারী চিকিৎসক অন্যায় করেছেন। স্বাধীনতা আছে বলেই তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন না। তিনি শুধু পরিবার নয়, চিকিৎসক সমাজকে লজ্জায় ফেলেছেন।’

তার এ বক্তব্যে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। পুরো ঘটনাটিতে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা হতে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মতামত জানতে চাওয়া হয় অ্যাডভোকেট সালমা আলীর কাছে। বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সাবেক এ নির্বাহী প্রধান নারী ও মানবাধিকার বিষয়ে কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। বিশেষ করে নারী পাচাররোধ এবং প্রবাসী নারী শ্রমিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখছেন তিনি।

সালমা আলী বলেন, ’গণমাধ্যমে খবরটি দেখে অবাক হয়েছি। পুলিশের ভূমিকা এত লজ্জাজনক হতে পারে! একজন নাপিত এবং একজন ডাক্তার নিজেদের মধ্যকার বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে বিয়ে করেছেন। এতে সমাজ বা রাষ্ট্রের পরিপন্থী কোনো কাজ করেননি তারা। কে কাকে বিয়ে করবে তা তো পুলিশ বলে দিতে পারে না। আমরা কোন সমাজে বাস করছি? এটি বলে পুলিশ অফিসার অপরাধ করেছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।’

তিনি আরও বলেন, ’একটি স্বাধীন দেশে প্রাপ্তবয়স্করা নিজেদের সিদ্ধান্তে বিয়ে করতেই পারেন। ধর্ম ত্যাগ করেও তো বিয়ের ঘটনা ঘটে। এমন বিষয় নিয়ে রাষ্ট্রে কোনো বাধা নেই। নাগরিকের মৌলিক এ অধিকার সংবিধান সংরক্ষণ করে। অথচ আইন প্রয়োগকারী পুলিশ কর্মকর্তা নাগরিকের অধিকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এটি সংবিধানবিরোধী।’

প্রাপ্ত বয়স্ক একজন নারী কাকে বিয়ে করছেন তা নিয়ে সিআইডির এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে নাপিতের সাথে গাইনি ডাক্তারের বিএফ এই প্রসঙ্গে এখানে পুলিশ আদালতের নির্দেশনা এবং আইন লংঘন করেছে বলে অনেকেই দাবি করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে পুলিশের এই কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে