রমজানে কিছু কিছিু পণ্যের দাম কমেছে

সুপ্রভাত বগুড়া (ব্যবসা-বাণিজ্য): পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগে জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বাড়লেও এখন সেই বাড়তি দাম আর নেই। চালসহ রোজার ইফতারির প্রয়োজনীয় খেজুর, ছোলাসহ অন্তত ৯ ধরনের পণ্যের দাম কমেছে। তবে ছোট দানার মসুর ডাল, রসুন, শুকনো মরিচ ও এলাচের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজার শুরুতেই ক্রেতারা অতিরিক্ত পণ্য কিনে রেখেছেন।

যে কারণে গতাকল শুক্রবার বাজার কিছুটা শান্ত ছিল। ক্রেতাদের মধ্যে পণ্য কেনার প্রতি আগ্রহ কম থাকায় এ সপ্তাহে বেশিরভাগ পণ্যের দাম বাড়েনি বলে জানান বিক্রেতারা। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ’র (টিসিবি) প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, রোজার এক সপ্তাহে মাত্র দুইটি পণ্যের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮টি পণ্যের।

Pop Ads

রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ বাজার, কারওয়ান বাজার, বাদামতলী বাজার, সূত্রাপুর বাজার, শ্যাম বাজার, কচুক্ষেত বাজার, মহাখালী বাজার, উত্তরা আজমপুর বাজার, রহমতগঞ্জ বাজার, রামপুরা এবং মিরপুর-১ নম্বর বাজারের পণ্যের দামের তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।

দাম কমা পণ্যগুলোর সবকটিই রোজায় অন্য সময়ের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকে। এর মধ্যে রয়েছে- পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মসুর ডাল, লুজ সয়াবিন তেল, খেজুর, ছোলা, পাম অয়েল এবং চাল। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ভোক্তারা রোজা শুরু হওয়ার এক-দুই সপ্তাহ আগে থেকেই রোজার পণ্য কেনা শুরু করেন। বেশিরভাগ ক্রেতা রোজার এক মাসের পণ্য একবারে কিনে নেন।

এ কারণে রোজার শুরুতে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়ে যায়। কিন্তু রোজা মধ্যে সবকটি পণ্যের চাহিদা কমেছে। ফলে এক দিকে বিক্রি কমেছে, অন্যদিকে দামও কমেছে। টিসিবির হিসাবে রোজার মধ্যে সব থেকে বেশি দাম কমেছে আদার। রোজার মধ্যে দেশি আদার দাম ৩৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং আমদানি করা আদার দাম ৪১ দশমিক ৫৪ শতাংশ কমেছে।

৩০০-৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আমদানি করা আদার দাম কমে ১৮০-২০০ টাকায় নেমেছে। আর ২৫০-৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া দেশি আদার দাম কমে হয়েছে ১৫০-২০০ টাকা। রোজায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে পরিচিত খেজুরের দাম রোজায় ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ কমেছে বলে টিসিবির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ২৫০-৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সাধারণ মানের খেজুরের দাম কমে ২২০-৩০০ টাকা হয়েছে। রসুনের দাম গত এক সপ্তাহে কমেছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। ১৫০-১৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আমদানি করা রসুনের কেজি কমে ১৪০-১৬০ টাকা হয়েছে। বড় দানার মসুর ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫-৯৫ টাকা, যা রোজার আগে ছিল ৯০-১০০ টাকা।

৯৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া লুজ সয়াবিন তেলের কেজি কমে ৯২-৯৩ টাকা হয়েছে। রোজায় অত্যাবশ্যকীয় হিসেবে পরিচিত আরেক পণ্য ছোলার দাম রোজার মধ্যে কমেছে ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। ৭৫-৮৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ছোলার দাম কমে ৭৫-৮০ টাকায় নেমেছে। পাম অয়েলের (সুপার) ৮০-৮৫ টাকা থেকে ৮০-৮৩ টাকা হয়েছে। সরু চালের দাম ৬০-৬৮ টাকা থেকে কমে ৫৮-৬৫ টাকা হয়েছে। আর মাঝারি মানের চালের কেজি ৪৮-৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮ থেকে ৫৫ টাকা।

রোজার মধ্যে নতুন দাম বেড়েছে ছোট দানার মসুর ডাল ও এলাচের। এর মধ্যে ছোট দানার মসুর ডালের দাম বেড়েছে ৮ শতাংশ। এক সপ্তাহ আগে ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পণ্যটির দাম বেড়ে এখন হয়েছে ১৩০-১৪০ টাকা। আর ছোট এলাচের দাম ৪০০০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪২০০ টাকা। দামের পার্থক্য থাকলেও টিসিবির প্রতিবেদনে যেসব পণ্যের দাম কমার তথ্য উঠে এসেছে, রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ীরাও সেসব পণ্যের দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, তৃতীয় রোজায় অর্থাৎ ২৭ এপ্রিল দেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের পেঁয়াজের দাম কমেছে। এরমধ্যে দেশি পেঁয়াজের দাম ১৩ দশমিক শূন্য চার শতাংশ এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ কমেছে। বর্তমানে দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা, যা আগে ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমে হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি।

এদিকে সবজির বাজারেও কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছে। অধিকাংশ সবজির দাম আগের মতোই রয়েছে। এখনও প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতিকেজি গাজর ৩৫-৪০ টাকা। প্রতিকেজি শসা ৩০ থেকে ৪৮ টাকা, বেগুন ৪০-৫০ টাকা। শুক্রবার সজনের ডাটার প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা। টমেটো বিক্রি হয়েছে ২০ টাকা, করলার কেজি ৩০-৪০ টাকা, বরবটি ৪০-৫০ টাকা কেজি, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা কেজি, পটল ৪০-৫০ টাকা, ঝিঙা ৪০-৫০ টাকা এবং চিচিংগার দাম প্রতিকেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here