রুহিয়ায় দিনমজুরের ছেলের বুয়েটে ভর্তির সুযোগ খরচ চালানোর চিন্তায় পিতা-মাতা দিশেহারা 

রুহিয়ায় দিনমজুরের ছেলের বুয়েটে ভর্তির সুযোগ খরচ চালানোর চিন্তায় পিতা-মাতা দিশেহারা 

সজল আলী ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দিনমজুরের ছেলে মেহেদী হাসান বাংলাদেশ  প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েটে) ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।পরিবারের শত প্রতিকূলতার  পরও  সে থমকে না গিয়ে সহপাঠি ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরনায় লেখাপড়া চালিয়ে গিয়ে আজ সে এলাকাবাসীর অনুকরনীয় যুবকে পরিণত হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কুজিশহর ঘুরনগাছ গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন একজন দরিদ্র মানুষ। সংসারের চাহিদা মিটাতে তিনি স্থানীয় হাসকিং মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছেন।২ ছেলে এক মেয়ের মধ্যে মেহেদী হাসান সবার বড়।মা নাছিমা বেগম গ্রাম্য গেরস্থদের ক্ষেত খামারে কাজ করে স্বামীকে সহায়তা করেন।দিনমজুরীর কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে ছেলে মেয়েদের দুবেলা খাইয়ে কোনমতে দিন চলে দরিদ্র ওই পরিবারটির।

Pop Ads

মেহেদী হাসান জেলার রুহিয়া ব্রাইট স্টার কেজি এন্ড মডেল স্কুলে নার্সারী থেকে পড়াশোনা শুরু করেন।পিএসসি  এবং জেএসসিতে জিপিএ-৫ পান তিনি।এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস এবং দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকেও জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসিতে উত্তীর্ন হন।ভাল ফলাফল করার জন্য তিনি প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা পড়াশোনা করতেন।

বই কেনার মতো টাকা পয়সা না থাকায় বাড়ির গাছপালা বিক্রি করে তার বই কিনে দেন দরিদ্র পিতা।মোবাইল কেনার সামর্থ না থাকায় অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন নি।অর্থাভাবে কোচিং করারও সামর্থ ছিল না।অবশেষে প্রথম আলো পরিচালিত গুড্ডি ফাউন্ডেশনের স্মরনাপন্ন হন।মোবাইলের অভাবে গুড্ডি ফাউন্ডেশনের অনলাইন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন নি।পরে কর্তৃপক্ষ  অফলাইনে  মেধা যাচাই  পরীক্ষার ব্যবসআথা নিলে মেহেদী হাসান উত্তীর্ন হন এবং বিনে পয়সায় ঢাকায় গিয়ে কোটিং করার সুযোগ পান।

মেহেদী হাসান বলেন,লেখাপড়ায় ভাল বলে স্কুলের শিক্ষকরা তার প্রতি খোজ খবর নিত এবং বিনা বেতনে প্রাইভেট পড়াতেন শিক্ষকরা।এসএসসি পাশ করার পর কলেজ পর্যায়েও বিনা টাকায় প্রাইভেট পড়ান শিক্ষকরা।সহপাঠি ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় মেহেদী হাসান পেছনের দিকে না তাকিয়ে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পান।

এতে মেহেদী হাসানের পিতা মাতা সহ গ্রামের লোকজন আনন্দিত।কিন্তু দরিদ্র পিতা মাতার পক্ষে তার লেখাপড়ার খরচ সম্ভব নয় ভেবে তারা চাপা কষ্টে রয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো: শামসুজ্জামান জানান,ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রশাসন অত্র এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় সহযোগিতা করা হয়।বুয়েটে চান্স পাওয়া  মেহেদী হাসানের লেখাপড়ার ব্যপারে সকল প্রকার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।