শিবগঞ্জে অপহরণ করে হত্যা মামলায় মহিদুল চেয়ারম্যান সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা !

শিবগঞ্জে অপহরণ করে হত্যা মামলায় মহিদুল চেয়ারম্যান সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা ! ছবি-বাপ্পী
সুপ্রভাত বগুড়া (অভিজিৎ বাপ্পী শিবগঞ্জ প্রতিনিধি): বগুড়ায় আদালত থেকে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে  শিমুল মিয়া (২৭) নামের এক যুবককে অপহরণের পর হত্যা করে লাশটি গোবিন্দগঞ্জে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। গত ২১/১২/২০ ইং সোমবার রাতে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলপুকুরিয়া বাজার থেকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
নিহত শিমুল মিয়া বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ৭ নং বিহার ইউনিয়নের মোন্নাপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের পুত্র। এ ঘটনায় সোমবার রাতেই শিবগঞ্জ উপজেলার বিহার ইউপি সদস্য ও নিহতের ভাই রায়হান মিয়া বাদী হয়ে ঐ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলামসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে গোবিন্দ গঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়,সোমবার শিমুল মিয়া ধর্ষণ মামলার হাজিরা দিতে বগুড়ার আদালতে যান,আদালতে হাজিরা শেষে বাড়ি ফেরার পথে সদরের টেংরা বন্দরে সিএনজি অটোরিকশা থেকে নামলে কালো রঙের মাইক্রোবাসে তাঁকে টানা হেচড়া করে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা,পরে শিমুলকে হত্যা নিশ্চিত ভেবে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গুমানীগঞ্জ ইউনিয়নের আলীপুর এলাকায় রাস্তার পাশে বস্তাবন্দী লাশ ফেলে রেখে যায় তারা।
এসময় পথচারীরা রাস্তার পাশে বস্তাবন্দী শিমুলের বাঁচার আকুতি ও গোংগানি শুনে তাঁরা তাঁকে উদ্ধার করে ফুলপুকুরিয়া বাজারে একটি পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়,খবর পেয়ে পুলিশ সোমবার রাতে ফুল পুকুরিয়া বাজার থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে,ময়না তদন্তের জন্য মঙ্গলবার লাশটি গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়,এঘটনায় নিহতের বড়ভাই ইউপি সদস্য রায়হান ইসলাম বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে,একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এ মামলার প্রধান আসামী হলেন,৭ নং বিহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম,পিতা হাফিজুর রহমান শুকটু বিহার উত্তরপাড়া, মিনহাজ ইসলাম (৩৫) পিতা মোখলেছার রহমান, মোন্তেজার রহমান নূরুন্নবী (৩৩) পিতা মৃত লোকমান হোসেন,জিল্লুর রহমান (৪০)পিতা মৃত ছবেদ আলী,শাহ জালাল (৩০) পিতা আকবর , শামীম(৪২), পিতা মৃত তছলিম উদ্দিন, হেলা আজিজুল (৩২) পিতা সোহরাব হোসেন, ডন (৩০) পিতা মৃত মোফাজ্জল  হোসেন, সোহেল (৩০) পিতা তোফা মিয়া, মেহেদুল ইসলাম মিষ্টার (৩৬) মৃত মোজাহার আলী, আপেল (২৮) পিতা শাহজাহান,ছোহেল (২৮) পিতা খয়বর আলী।
তারা সবাই বিহার ইউনিয়নের বাসিন্দা। এঘটনায় নিহতের বড়ভাই ইউপি সদস্য রায়হান ইসলাম বলেন, বিহার ইউপি নির্বাচনের পর থেকে চেয়ারম্যান মহিদুল আমার ভাইকে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে ব্যবহার করত। আমার ভাই সেগুলোর প্রতিবাদ করে চেয়ারম্যানের কাজ থেকে সড়ে যায়। একারণে চেয়ারম্যানের সাথে  সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তারপরেও তাকে দলে ফেরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তার বিরুদ্ধে ৯/১০ মামলা দিয়ে হয়রানী করে। সর্বশেষ তাকে হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা।
আমি প্রশাসনের কাছে তদন্তপূর্বক আমার তার ভাই এর হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। গোবিন্দগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফজাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শিমুলকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়। তাঁর একটি পা কোপানো ও ভাঙা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। নিহত শিমুলের একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান রয়েছেন