হাসপাতালের কোটি টাকার যন্ত্রাংশ চুরি , থানায় অভিযোগ

13
হাসপাতালের কোটি টাকার যন্ত্রাংশ চুরি , থানায় অভিযোগ

বন্ধ হাসপাতালের কোটি টাকার যন্ত্রাংশ চুরি, থানায় অভিযোগ
পরিচালকদের দ্বন্ধে দীর্ঘ আট মাস বন্ধ থাকা কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের রোকেয়া স্পেশালাইজড হাসপাতালের কোটি টাকার যন্ত্রাংশ চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার নাঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন হাসপাতালের চেয়ারম্যান ইয়াছিন আরাফাত।

আরাফাতের অভিযোগ, হাসপাতালের ম্যানেজার দয়াল খোকন ও হাসপাতালের ভবন মালিক মোবারক হোসেন হাসপাতালের মালামাল চুরি করেছেন। একই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালের পরিচালক দাবি করে ম্যানেজার দয়াল খোকনও বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

Pop Ads

উল্লেখ্য, মালিকানার দ্বন্দ্বে রোকেয়া স্পেশালাইজড হাসপাতালটি দীর্ঘ আট মাস বন্ধ থাকার পর পরিচালকদের একটি পক্ষ নাঙ্গলকোট টাওয়ার হাসপাতাল নাম দিয়ে পুনরায় সেটি চালু করে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২২ সালে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উত্তর পাশে কয়েকজন অংশীদার নিয়ে রোকেয়া স্পেশালাইজড নামের একটি হাসপাতাল চালু করেন ইয়াছিন আরাফাত। পরে অংশীদারদের সিদ্ধান্তে ইয়াছিন আরাফাতকে ওই হাসপাতালের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। হাসপাতালটি চালু করতে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয় হয়।

চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালটির পরিচালকদের মধ্যে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কারণে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জেরে কয়েক দিন পর সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্তের ফলে হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যায়। সালিশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাসপাতালের চাবি স্থানীয় সমাজপতি এ কে এম নুরুল আফছার নয়নের কাছে এবং পরিচালকদের ননজুডিশিয়াল স্টাম্প গুলো স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর সাখাওয়াত হোসেন সুমনের কাছে জমা রাখা হয়।

মীমাংসা হওয়ার আগ পর্যন্ত কাউন্সিলর সুমনের কাছে স্টাম্প গুলো জমা থাকার কথা থাকলেও, ওই ননজুডিশিয়াল স্টাম্প গুলো কৌশলে নিজেদের কাছে নিয়ে গিয়ে রাতারাতি হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করে নাঙ্গলকোট টাওয়ার হাসপাতাল নাম করণ করে প্রতিপক্ষ হাসপাতালটি চালু করে।

এ ঘটনায় রোকেয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল চেয়ারম্যান ইয়াছিন আরাফাত বাদী হয়ে স্টাম্প উদ্ধারের জন্য কুমিল্লার আদালতে একটি মামলা দায়ের করলে আদালত পিবিআইকে তদন্তের নিদের্শ দেন। সম্প্রতি মামলাটিতে ইয়াছিন আরাফাতের পক্ষে রায় দেন বিজ্ঞ আদালত।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ২০ ডিসেম্বর রাতে হাসপাতাল থেকে ম্যানেজার দয়াল খোকন ও ভবন মালিক মোবারক হোসেন আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন, ইসিজি মেশিন, কম্পিউটার প্রিন্টার ৭টি, প্যাথলজি বিভাগের মালামাল ও সিসিটিভি ক্যামেরার মনিটর, ডিবিআরসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। এতে হাসপাতালটির প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এ বিষয়ে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ‘হাসপাতাল ম্যানেজার দয়াল খোকন ও ভবন মালিক মোবারক হোসেন দুইজনে হাসপাতালের প্রায় কোটি টাকার মালামাল সরিয়েছে।

আমি এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
হাসপাতাল ম্যানেজার দয়াল খোকন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে ভবন মালিক ফোন করে আমাকে হাসপাতালে চুরি হওয়ার বিষয়টি জানায়। আমি এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’

ভবন মালিক মোবারক হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে আমি ভবনে এসে দেখি হাসপাতালের মূল ফটকে তালা নেই। তাৎক্ষণিক আমি বিষয়টি হাসপাতাল ম্যানেজার দয়াল খোকনকে অবহিত করি।’

স্থানীয় সমাজপতি এ কে এম নুরুল আফসার নয়ন বলেন, ‘সালিশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমার কাছে চাবি রাখলেও পরে ভবন মালিক তালা গুলো ভেঙ্গে নতুন তালা লাগিয়েছে এবং হাসপাতালের মালিকদের একটি পক্ষ হাসপাতাল পুনরায় চালু করেছে।’

এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট থানার ওসি দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, ‘উভয় পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।