৯৯৯-এ কল মিলবে নির্বাচনী সেবা

15
৯৯৯-এ কল মিলবে নির্বাচনী সেবা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে অভিযোগ করা যাবে। এরপর অভিযোগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার বা সংস্থাকে জানানো হবে। অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন রিটার্নিং অফিসার। জননিরাপত্তা বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জাতীয় জরুরি সেবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ৯৯৯-এ কল করার পর নির্বাচনসংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে ২ চাপতে হবে। আচরণবিধি লঙ্ঘন সংক্রান্ত অভিযোগ হলে ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ কলটি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে সংযোগ করে দেবে। আর আইন-শৃঙ্খলাসংক্রান্ত অভিযোগ হলে সংশ্লিষ্ট থানার ওসি, এসপি বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সংযোগ করে দেওয়া হবে। এই কার্যক্রম পরিচালনা করবেন ৯৯৯-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

Pop Ads

আর তদারকি করবে জননিরাপত্তা বিভাগ। এ জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ গত ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচনসংক্রান্ত আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় সেল গঠন করেছে। এই সেলের প্রধান সমন্বয়ক জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি) এ কে এম টিপু সুলতান, সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্বে আছেন এই বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পুলিশ ও এনটিএমসি) এস এম রেজাউল মোস্তফা কামাল, সেলের দৈনন্দিন কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবেন যুগ্ম সচিব আবুল ফজল মীর ও হায়াত-উদ-দৌলা খান।

পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান বলেন, নির্বাচনসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা ৯৯৯-এ জানানো যাবে।

এরপর সেই অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব আবুল ফজল মীর বলেন, জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে। কার্যক্রম পরিচালনা করবে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯। অভিযোগের পরিমাণ বেশি হলে কিভাবে সমন্বয় করা হবে—এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়টি দেখভাল করবে জাতীয় জরুরি সেবা।

চাপ বাড়বে জাতীয় জরুরি সেবায়

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে ৯৯৯-এ প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৫ হাজার কল আসে।

এর মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ইস্যু যুক্ত করা হলে কলের চাপ অনেক বেড়ে যাবে। জাতীয় নির্বাচনের মতো এই পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করবে, সেই পরিকল্পনা করছেন ৯৯৯-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা বলেন, ‘৯৯৯-কে জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্তের ফলে ঝামেলার মধ্যে আছি। অল্প সময়ের মধ্যে নতুন করে এই সিস্টেম ডেভেলপ করতে হবে, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এটা কোনো সহজ বিষয় নয়। ৯৯৯-এ এমনিতেই জনবল কম। এর মধ্যে এ নিয়ে প্রতিনিয়তই নির্দেশনা পরিবর্তন হচ্ছে।’

নির্বাচন কমিশন (ইসি), জননিরাপত্তা বিভাগ, দেশের সব রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে এই সেল স্থাপন করা হবে। গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। জরুরি পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুর্ঘটনা বা অপরাধের শিকার ব্যক্তিকে সেবা দিচ্ছে ৯৯৯ টিম। জাতীয় নির্বাচনসংক্রান্ত বিষয়ে কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সেবা দেওয়ার জন্য ৯৯৯ টিমকে সংযুক্ত করার জন্য পুলিশ বিভাগকে প্রস্তাব করে জননিরাপত্তা বিভাগ। এরপর পুলিশ বিভাগ বিষয়টি যাচাই-বাছাই শেষে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে ২০১৫ সালের অক্টোবরে জাতীয় পর্যায়ে সর্বস্তরের জনগণের জন্য মোবাইল ফোনভিত্তিক হেল্পডেস্ক বাস্তবায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। দেশের জনগণের জন্য জরুরি সেবা অর্থাৎ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এবং অ্যাম্বুল্যান্স সেবা দ্রুত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর কাঠামো স্থাপন ও কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। পরবর্তী সময়ে জাতীয় জরুরি সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ পুলিশ কর্তৃক এর পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে