সুপ্রভাত বগুড়া (শিক্ষা-সাহিত্য): করোনায় ঘরবন্দি শিশুদের ভরসা ইন্টারনেট। পড়াশোনা এখন পুরোটাই অনলাইনভিত্তিক। অবসরে বিনোদনের খোরাকও যোগায় মোবাইল কিংবা ল্যাপটপে নানা ধরনের ভিডিও। ইন্টারনেটভিত্তিক সৃজনশীল শিক্ষা শিশুদের বিকাশে রাখতে পারে বড় ভূমিকা। করোনার আগে সকাল সকাল শুরু হত স্কুল যাওয়ার প্রস্তুতি। সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে মায়ের ব্যস্ততা, ছুটোছুটিও শুরু হত ভোর থেকেই। এরপর স্কুলে এসে ক্লাস শুরুর অপেক্ষা।
দেখা হতো বন্ধুদের সঙ্গে। কিন্তু করোনার এই সময়ে এখন আর ক্লাসরুমে খুঁনসুটি, হুল্লোড়ের সুযোগ- কোন কিছুই নেই ভিকারুন্নিসা নূন স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী আফ্রার। তবে সপ্তাহে তিন দিন অনলাইন ক্লাসে দেখা হয় সহপাঠীদের সঙ্গে। ক্লাসের বিরতিতে কথাও হয়। বাড়ির কাজ দেখাতে হয় শিক্ষককে। তবে, অনেক সময়ই পড়া বুঝতে পড়তে হয় সমস্যায়। আফ্রারও ভালো লাগে অনলাইনে ক্লাস করতে। তবে ,অনেক সময় ঠিক সময় শুনতে ও বুঝতে পারে না সে।
ইন্টারনেট বিড়ম্বনায় অনলাইন ক্লাস করানো বন্ধ করে দিয়েছেন নার্সারির ছাত্র তাফিফের বাবা মা। তাই মোবাইল, ল্যাপটপে ভিডিও দেখে কাটে অনেকটা সময়। আধো বুলি ফোটা ছোট্ট ভাইটিই একমাত্র সঙ্গী। বেশ চটপটে স্বভাবের আফিফ জানায়, বাসায় বসে বসে ইউটিউব দেখে সে। ছোটভাইকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন খেলাও খেলে। তার একটা ইউটিউব চ্যানেলও আছে। আর এই করোনাকালে সে নতুন নতুন ছড়া শিখেছে; গানও শিখেছে।
আফ্রার মা জানান, অনলাইনে ক্লাস শুরু হলে অনেক সময় সবাই একসঙ্গে কথা বলে। এতে ম্যাডামরাও ভালো মত শুনতে পান না। আর আফিফের মা সব সময় খেয়াল রাখেন তার সন্তান ইউটিউবে কি কি দেখছে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার বিষয়টি সহজ নয়। অভ্যস্ততার অভাবের পাশাপাশি রয়েছে সংযোগ নিয়ে সঙ্কট। কিছু কিছু স্কুলে নিয়মিত ক্লাস নেয়া গেলেও একেবারেই বঞ্চিত সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
অনেক স্কুলেই বন্ধ রাখা হয়েছে অনলাাইন ক্লাস। আবার ইন্টারনেট সংযোগের দুর্বলতার কারণে শিক্ষার্থীরা সরকারের দেয়া সুযোগ-সুবিধার সঠিক সুফল পাচ্ছে না বলেও জানান শিক্ষকরা। করোনার প্রকোপ কমে গেলে আবার হয়তো স্কুলে ফিরবে শিশুরা। তবে শিশুদের ইন্টারনেটভিত্তিক সৃজনশীল শিক্ষার দিকে নজর দেয়া উচিৎ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।