ইসি আলোচনায় পরস্পর বিরোধি বক্তব্য, কাদের-ফখরুলের বাকযুদ্ধ

ইসি আলোচনায় পরস্পর বিরোধি বক্তব্য, কাদের-ফখরুলের বাকযুদ্ধ

সুপ্রভাত বগুড়া (জাতীয়): সবক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, নির্বাচন কমিশনকে পুরোপুরি দলীয়করণ করে সরকার একে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। সোমবার রাজধানীতে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স নস্টিটিউশনে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এবং গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা জানান।

২০১৭ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করা নির্বাচন কমিশনাররা গুরুতর অসদাচরণের সঙ্গে জড়িত অভিযোগ করে ১৪ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছেন ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এই ঘটনায় বিএনপির ইন্ধন আছে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। রাজধানীতে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনায় অনলাইনে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, অপরাজনীতির কারণে বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে জনগণ। তাই সবদিক দিয়ে ব্যর্থ হয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করতে চায়।

Pop Ads

কাদের বলেন, নেতিবাচক রাজনীতির কারণে বিএনপি জনগণের কাছ থেকে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে এখন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপকৌশল নিয়েছে। বিএনপি এখন সব দিক থেকে ব্যর্থ হয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করতে চায়। পোলিং এজেন্ট না দিয়ে নির্বাচনে যোগ দিয়ে দুপুর বেলা তারা নির্বাচন বর্জন করে। মূলত নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করতে তারা নির্বাচন বর্জন করে। বিএনপির মহাসচিবকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশ এখন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিটি জনপদে উন্নয়নের ছোঁয়া। আপনারা দেখতে না পেলেও জনগণ দেখতে পাচ্ছে। গণতন্ত্রের এগিয়ে যাওয়ার পথকে মসৃণ করতে দায়িত্বশীল গঠনমূলক রাজনৈতিক দলের ভূমিকা পালন করুন। কাদের আরো বলেন, বিএনপি এখন রাজনীতিতে উভয়সংকটে। একদিকে অপরাজনীতির জন্য জনগণের কাছে নিন্দিত, অন্যদিকে দলের ভেতরেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ সংকটে।

এদিকে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেন, ৪২ বিশিষ্ট নাগরিকের অভিযোগের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। তারা কেউই বিএনপির সদস্য নন। ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের অযোগ্যতা, ব্যর্থতা ও দুর্নীতির করণে গোটা জাতি এখন নির্বাচন কমিশনের অপসারণ চায়। ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিকের রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি সেই সত্যতা প্রমাণ করেছে। ৩০ ডিসেম্বর সেই কলঙ্কময় দিবসের দ্বিতীয় বছর পূরণ হবে।

কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ কী দেখতে চায়, তার জন্য প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার না করে একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিলেই তা বোঝা যাবে। সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের কারণে নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা নেই বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।

ফখরুল জানান, সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও পৌরসভার অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে না পারা ও নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় স্থায়ী কমিটির সভায়।
সম্প্রতি বিএনপির দুই ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন খান ও শওকত মাহমুদকে শোকজ দেওয়ার পর তারা জবাবও দিয়েছেন।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপির ঐক্যবদ্ধ আছে। বড় দলে দু–একটি ঘটনা ঘটবে। এটাকে এত বড় করে যারা দেখছেন, তারা ঠিকভাবে দেখছেন না। বিষয়টি নিয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। একাদশ নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে ৩০ ডিসেম্বর ঢাকাসহ সারা দেশের জেলা শহরে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।