এনজাইমের সঠিক সংজ্ঞা কী?

13
এনজাইমের সঠিক সংজ্ঞা কী?

এনজাইম কী?

এনজাইম প্রাণ-রাসায়নিক বিক্রিয়ার হারকে ত্বরান্বিত করে, দেহে স্বল্প মাত্রায় উপস্থিত থাকে এবং এটি এটি একটি প্রোটিন। এটাই হলো এনজাইমের এদেশীয় সংজ্ঞা।

Pop Ads

এ থেকে কি বোঝা যায় কিছু?

পরিস্কার হয় না ব্যাপারটা অথচ আমাদের জীববিজ্ঞানের বইয়ে এমনটাই লেখা থাকে।

আমরা একটু বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।

এনজাইম যে পদার্থের ওপর ক্রিয়া করে তাকে ভেঙে ফেলে, সেই পদার্থকে সাবস্ট্রেট বলে। এই এনজাইম-সাবস্ট্রেটের ক্যাঁচাল বোঝার জন্য বিজ্ঞানীরা লক অ্যান্ড কি হাইপোথিসিস বা তালা-চাবি অনুকল্পের আশ্রয় নিয়েছেন। তালা খুলতে যেমন চাবির প্রয়োজন, তেমনি সাবস্ট্রেটকে ভাঙতেও এনজাইমের প্রয়োজন।
এখানেই মজার বিষয় লুকিয়ে আছে।

এনজাইম ছাড়া (দুয়েকটি ব্যতিক্রম বাদ দিলে- যেমন, নন-এনজাইমেটিক গ্লাইকোসাইলেশন) ছাড়া কোনো প্রাণরাসায়নিক বিক্রিয়াই ঘটে না। কিন্তু আমাদের বইগুলোতে শুধু লেখা থাকে যে এনজাইম বিক্রিয়ার হারকে ত্বরান্বিত করে। এর মানে দাঁড়ায়, এনজাইম না থাকলেও বিক্রিয়া হয়, তবে ধীরে ধীরে—যা আসলে অনেকাংশেই ভুল। এনজাইম প্রাণ-রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতিকে বাড়িয়ে দেয়, যদি এনজাইম না থাকে এমন কোনো পরিস্থিতিকে কল্পনা করে নেওয়া হয়, তাহলে সেই পরিস্থিতিতে রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি এতোটাই ক্ষীণ হবে যে তাকে উপেক্ষা করা যায়।

এনজাইমের অনুপস্থিতিতে তো বেশিরভাগ বিক্রিয়াই হবে না।
আরেকটা ব্যাপার গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেহের সকল প্রাণরাসায়নিক বিক্রিয়ার সঙ্গে এনজাইম জড়িত। এনজাইমগুলো প্রতিদিন কত হাজার বিক্রিয়ায় অংশ নেয়? এতো এতো বিক্রিয়ায় কি স্বল্প এনজাইম অংশ নেবে নাকি এক গাদা এনজাইম লাগবে?

কিন্তু আমাদেরকে পড়ানো হয়েছে যে এনজাইম দেহে স্বল্প মাত্রায় থাকে। আমাদের দেহে প্রায় ১৩০০ প্রকার এনজাইম থাকে যা প্রায় ৫০০০ হাজারেরও বেশি কাজে অংশ নেয়।

১৩০০ প্রকারের এনজাইম, ১৩০০টি নয়।
আরেকটা ব্যাপার, খুব সুন্দরভাবে শিক্ষার্থীরা মুখস্ত করে যে এনজাইম আসলে প্রোটিন। কথাটা সত্য, তবে আংশিক। বেশিরভাগ এনজাইমই প্রোটিন, যাদেরকে আদর করে ‘এনজাইমেটিক প্রোটিন’ কিংবা ‘সিম্পল এনজাইম’ অথবা ‘সরল এনজাইম’ বলা হয়ে থাকে। কিন্তু কিছু কিছু এনজাইমে প্রোটিনের সাথে অপ্রোটিন অংশও যুক্ত থাকে, যাকে প্রস্থেটিক গ্রুপ বলা হয়। এই প্রস্থেটিক গ্রুপ দুই ধরনের হতে পারে। যদি সেটি ধাতব পদার্থের হয়, তবে তাকে কো-ফ্যাক্টর বলে। কিন্তু যদি জৈব পদার্থের হয়, তবে তাকে কো-এনজাইম বলে।

এনজাইম মূলত প্রোটিন দ্বারা গঠিত এমন এক ধরণের যৌগ, যা নির্দিষ্ট সাবস্ট্রেটের সাথে যুক্ত হয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ওই সাবস্ট্রেটের পরিবর্তন ঘটায়, কিন্তু নিজে অপরিবর্তিত থাকে।