করোনা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে আইনি নোটিশ

করোনা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে আইনি নোটিশ

সুপ্রভাত বগুড়া (শিক্ষা-সাহিত্য): করোনাভাইরাস সম্পূর্ণ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা এবং শতভাগ ক্লাস অনলাইনে নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে সরকারকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে বুধবার এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

নোটিশ পাওয়ার ৭দিনের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত বাতিল করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও প্রচার করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নোটিশে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ নোটিশ পাঠানোর তথ্য সাংবাদিকদের জানান ওই আইনজীবী। নোটিশে অনলাইনে শতভাগ ক্লাস নেওয়া তথা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৩০ দিনের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে যৌথ কমিটি গঠন করে অনলাইনে শতভাগ ক্লাস নেওয়া তথা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন এবং প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা পর্যায়ে ডিজিটাল শিক্ষা কনটেন্ট তৈরির পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

Pop Ads

আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার বলেন, দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগ ক্লাস রুম ছোট, পর্যাপ্ত পরিষ্কার টয়লেট নাই এবং স্থানের স্বল্পতাও আছে। ফলে করোনাকালীন সময়ে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করা অসম্ভব। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা হলে শিক্ষাথীর সঙ্গে অভিভাবকরাও যাবেন। ব্যাপক যানবাহনের সমাগম হবে। ফলে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হবে না। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকার বয়স ৪০ বছরের উপরে হওয়ায় তাদেরও মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা ছোট হওয়ায় মুখে সব সময় মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মানা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিয়ে ব্যাপক সংশয় আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হলে শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলবে, ক্লাস রুমে একে অন্যের সঙ্গে মেলামেশা করবে। ফলে শিক্ষার্থী, শিখ্ষক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত সকলের মধ্যে দ্রুত করোনা ছড়িয়ে পড়ায় আশংকা রয়েছে। একারণে করোনা মহামারী নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সঠিক হবে না।

তিনি আরো বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠক, বিচারিক কার্যক্রম, টেলিমেডিসিন সেবাসহ বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম অনলাইন মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। করোনা মহামারি সময়ে বাংলাদেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ, ই-কমার্সে কেনাকাটা বেড়েছে ৫০ শতাংশ এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ৫০ লাখ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির

প্রকাশিত জুন ২০২০ মাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটি ৩৪ লাখ ৭৬ হাজার। এর মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯ কোটি ৪৯ লাখ ৫ হাজার। এ তথ্যানুযায়ী অনলাইন মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সুযোগ রয়েছে। সুতরাং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরাসরি খুলে দেওয়া সঠিক হবে না।