সুপ্রভাত বগুড়া (আবদুল ওহাব বগুড়া প্রতিনিধি): বাজারে পেয়াজের ঝাঝ থামতেই শুরু হয়েছে মরিচের সীমাহীন ঝাল। স্মরণকালের সর্বোচ্চ দরে বিক্রি হচ্ছে এখন কাচামরিচ। হঠাৎ করেই বাজারে দাম আকাশ চুম্বি হওয়ায় মানুষের নাভীশ্বাস উঠেছে। ফলে করোনার এই দুর্যোগে মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে আরও দুর্বিসহ।
তবে এর কারন হিসেবে কাচা মরিচের আমদানী কম ও পথে ঘাটে অতিমাত্রায় খাজনা আদায়কে দোষছেন ব্যাপারীরা। পাইকারী দরের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন দামে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। বগুড়ার শাজাহানপুর, শেরপুর, গাবতলী ও মহাস্থানের হাট-বাজারগুলোতে দেখাগেছে, পাইকারী দরে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি।
পাশেই খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা কেজি। পাইকারী দরের চেয়ে খুচরা বাজারে প্রায় দ্বিগুন দামে বিক্রি করার কারন জানতে চাইলে দোকানীরা যুক্তি সংগত কোন কারন জানাতে পারেনি। তবে পথে ঘাটে ও হাটে বাজারে খাজনা, পরিমানের তুলনায় বেশী বলে জানিয়েছেন অনেকে। এছাড়াও দোকানীরা কেউ জানেনা সরকারী নিয়ম অনুযায়ী প্রকৃতপক্ষে কোন দোকানীর সঠিক খাজনা কত টাকা।
ইজারাদাররা যা চান তাই দিতে বাধ্য হয় দোকানীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিক্রেতারা বলছেন, একে তো কাচামরিচ সহ পণ্যের আমদানী কম। তারপর আবার পথেঘাটে ইচ্ছেমত ইজারাদারদের খাজনা আদায় বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। খাজনা / টোল আদায়ের সাইনবোর্ড থাকার বিধান থাকলেও একটি বাজারেও তা মানা হয়না। কৃষক জমিতে ফসল বিক্রি করলেও হাটের ইজারাদারের লোকজন পথে ঘাটে থেকে তাদের কাছ থেকে প্রতিটি বস্তার জন্য ৪০-৫০ টাকা করে নেয়।
এরপরও রয়েছে সড়কে পরিবহনে টোল আদায়। তারা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, সীমিতমুল্যে হাটবাজার ইজারা দেয়া হলেও খাজনার পরিমান সীমাহীন। প্রতিটি ছোট ছোট দোকানীর কাছ থেকেও ৫০ থেকে ১ শত টাকা করে খাজনা নেওয়া হয়। এসব টাকা আসবে কোথা থেকে ?
আর ক্রেতা সাধারন বলছেন, ৩‘শ ৪‘শ টাকা কেজি দামের মরিচ ধনীরা ক্রয় করতে পারলেও দরিদ্রদের ক্রয় করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। করোনায় একে তো আয় রোজগার কম, তারপর আবার অস্থিতিশিীল বাজার তাদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে।
বাজার করতে আসা লোকজন বলেন, ইচ্ছেমত খাজনা আদায়ের জন্যই সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলা হয়। তাই কোন দোকানী জানেনা প্রকৃতপক্ষে সরকারীভাবে খাজনা কত টাকা। অথচ এই সাইনবোর্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনা কেউ।
তাই ইজারাদারদের নিয়ন্ত্রন, বাজার দরের তদারকি এবং পথে ঘাটে খাজনার নামে চাদাবাজি বন্ধ করতে না পারলে বাজার দর নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে। বিধায় করোনার এ দুর্যোগে মানুষের জীবন আরও দুর্বিসহ যাতে না হয় সে লক্ষ্যে বাজার নিয়ন্ত্রনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া একান্ত জরুরী বলে মনে করছেন সচেতন জনসাধারন।