ডিসলাইকের হিড়িক পড়েছে মোদির ভাষণে !

সুপ্রভাত বগুড়া (আন্তর্জাতিক): গত ছয় বছরে, যবে থেকে নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, ততদিন এই ছবি সামনে আসেনি। মোদির ‘মন কি বাত’-এ লাইকের থেকে ডিসলাইক বেশি। সম্প্রতি ভারতের দুইটি ঘটনায় ক্ষোভ-বিক্ষোভের আঁচ ভালোভাবেই টের পাচ্ছেন বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব। ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়ার আর্জি খারিজ করে দিয়ে, বিরোধীদের কথা না শুনে প্রায় জোর করেই করোনাকালে ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নেয়া। আর দেশের অর্থনীতিতে সংকট দেখা দেয়া।

গত রোববার রেডিওতে তার ‘মন কি বাত’ বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি নিয়ম করে ‘মন কি বাত’ বলেন। সেটা বিজেপি-ও প্রচার করে। ইউটিউবে দেয়া হয়। সবসময়ই তাতে লাইকের সংখ্যা থাম্বস ডাউন বা ডিসলাইকের থেকে অনেক বেশি থাকে। এবার ব্যতিক্রম হলো। বিজেপি-র ইউটিউব চ্যানেলে ৬৮তম ‘মন কি বাতে’ এক লাখ ২০ হাজার লাইক আর সাত লাখ ৪০ হাজার ডিসলাইক পড়ল। একই ঘটনা ঘটল ইউটিউবের অন্য সরকারি চ্যানেলেও। পিএমও-র চ্যানেলে দেখা যাচ্ছে, ৮২ হাজার লাইক এবং এক লাখ ৭০ হাজার ডিসলাইক।
সেই সঙ্গে মন্তব্যের দিকে চোখ মেললে ক্ষোভের আঁচ ভালোভাবেই বুঝতে পারা যাবে। একজন লিখেছেন, যখন ছাত্রছাত্রীদের বিষয়ে কথা বলার দরকার ছিল তখন তিনি কুকুরের ব্রিডিং, খেলনা নিয়ে কথা বললেন। আরেকজন লিখেছেন, ”আমি কেবল পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্নের জবাব চাই।” কেউ বলছেন, ”যাদের গাড়ি আছে, হোটেলে থাকতে পারেন, তারা কি কেবল এই সব পরীক্ষা দেবেন? গরিবরা কি দিতে পারবেন না?”

দ্য প্রিন্ট জানাচ্ছে, বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় দাবি করেছেন, মাত্র ২ শতাংশ ডিসলাইক ভারত থেকে হয়েছে। বাকি বিদেশ থেকে।

Pop Ads

দলের মুখপাত্র বিজয় শোনকরের মত হলো, এটা কংগ্রেসের কাজ। কংগ্রেসের জবাব, এটাই প্রত্যাশিত। যে কোনো সমস্যা হলেই তার দায় কংগ্রেস বা জওহরলাল নেহরুর ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়াটা বিজেপি-র কৌশল। এটা দেশের লোক জেনে গেছে। রাহুল গান্ধী টুইট করে বেলেছেন, ”মোদি সরকার দেশের ভবিষ্যৎকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। ছাত্রছাত্রীদের ন্যায্য দাবি তারা ঔদ্ধত্যের জন্য খারিজ করে দিল।”

এই ধরনের ঘটনা মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে কখনো হয়নি। সবসময়ই তার লাইকের সংখ্যা অনেক বেশি থাকে। বিরোধীদের মতে, ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভকে এভাবে উড়িয়ে দেয়ার ফল পাচ্ছেন মোদি। অন্য বড় সমস্যা হলো ভারতের জিডিপিতে ধস। এই প্রথম জিডিপির সংকোচন হয়েছে প্রায় ২৪ শতাংশ। করোনাকালে এমনিতেই লোকের চাকরির ওপর কোপ পড়েছে।

তার ওপর অর্থনীতির এই দশা মানে দেশে মন্দা শুরু হয়ে গেল বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, করোনার ঘাড়ে দায় চাপালে চলবে না। তার অনেক আগে থেকেই অর্থনীতির হাল খারাপ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেছেন, ২০১৬তে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি ছিল ৮ শতাংশ। সেখান থেকে ১৯-২০তে হলো চার দশমিক দুই শতাংশ।

জানুয়ারি থেকে মার্চ বৃদ্ধির হার ছিল তিন দশমিক এক শতাংশ। কেন? তখন তো করোনা ছিল না। তখন থেকেই উৎপাদন শিল্প, রফতানি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের অবস্থা শোচনীয় ছিল। বিরোধীদের অভিযোগ, মোদি সরকার দেশের অর্থনীতিকে সামাল দিতে ব্যর্থ বলেই এই হাল। এর প্রতিফলনও সামাজিক মাধ্যমে আসতে শুরু করেছে। ডয়চে ভেলে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here