দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইতালির ফ্যাসিবাদী শাসক বেনিতো মুসোলিনির নির্দেশে নির্মিত বাংকার সম্প্রতি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ১৯৪০ সালের জুনে ইতালি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এর পরপরই মিত্রপক্ষের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে নিজের রোমের জমকালো বাসভবন কমপ্লেক্স ভিলা তোরলোনিয়ার নিচে সুরক্ষিত বাংকার নির্মাণ করেছিলেন মুসোলিনি। মুসোলিনি ও তাঁর পরিবারকে বাঁচাতে মোট তিনটি বাংকার নির্মাণ করা হয়েছিল।
প্রথমটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৪০ সালে, বাড়ির আঙিনায় পুরনো ওয়াইন সেলারে। ভিলা তোরলোনিয়া কমপ্লেক্সের যে ভবনটিতে মুসোলিনি থাকতেন তার নাম কাসিনো নোবিলে। দ্বিতীয় বাংকারটি নির্মাণ করা হয়েছিল এর বেইসমেন্ট অর্থাৎ ভূগর্ভস্থ কক্ষের নিচে। ওই বাংকারের দেয়াল ছিল চার ফুট পুরু জোরদার কংক্রিটের।
ঘরগুলোতে গ্যাসপ্রতিরোধী দরজা এবং বাতাস পরিশোধন ও উন্মুক্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা ছিল। যুদ্ধ পরিস্থিতি বিবেচনায় পরে সাঁজোয়া বাংকার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন মুসোলিনি। এর অবস্থান ছিল কাসিনো নোবিলের সামনে। মাটির ২০ ফুট গভীরে বাংকারটি নির্মাণ করা হয়।
১৯৪২ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণকাজ শুরু হওয়া ওই বাংকার আয়তনে অন্য দুটির তুলনায় বেশ বড় করার পরিকল্পনা ছিল মুসোলিনির। তবে পানিপ্রতিরোধী দরজা, বাতাস চলাচল ও টয়লেটের সুব্যবস্থা করার আগেই ১৯৪৩ সালের ২৫ জুলাই তিনি আটক হন। এরপর আর বাংকারটির নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। বাংকারটি প্রথমবার ২০০৬ সালে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। দুই বছর পর তা বন্ধ হয়ে যায়।
পরে আবার কয়েক দফা তা সাময়িকভাবে খোলা ছিল। সর্বশেষ বন্ধ করা হয় ২০২১ সালে। এবার বাংকারটির দরজা জনসাধারণের জন্য আবার খুলে দেওয়া হয়েছে।
বাংকারটি পরিদর্শনে যাওয়া দর্শনার্থীদের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রোমের বিভিন্ন ঘটনার দৃশ্য মাল্টিমিডিয়ার সাহায্যে প্রদর্শন করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৪ সালের মধ্যে রোমে মিত্রপক্ষের ৫১টি বোমা হামলা, বেসামরিক লোকজনের জন্য বিমান হামলার সতর্কতা ব্যবস্থা ইত্যাদি। বাংকারগুলো ঘুরে দেখার টিকিটের দাম ১২ ইউরো।