মেসির কারণে বদলে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল

11
মেসির কারণে বদলে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল

৩৬ বছর বয়সে এসে মেজর লিগ সকারের দল ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিয়েছেন লিওনেল মেসি। যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে মেসির আগমনে পেয়েছে ভিন্ন মাত্রা। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেয়া এবং তার প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের খেলাধুলার জগত বদলে যাওয়াকে ‘মেসি ইফেক্ট’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। লিগের কমিশনার ডন গারবার বলছেন, মেসি যোগ দেওয়ায় ২০২৩ সাল ছিল মেজর সকাল লিগের আমূল পরিবর্তনের বছর।

মেসির আগে যুক্তরাষ্ট্রের লিগে ব্রাজিলের কিংবদন্তী পেলেও খেলে গেছেন। সত্তরের দশকে তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেলের নিউ ইয়র্ক কসমসে যোগ দেয়ার ঘটনাকেও সে সময় বলা হয়েছিল যে আমেরিকার ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তবে মেসি যোগ দেওয়ার পর যেভাবে ব্র্যান্ড ভ্যালু, দর্শক চাহিদা, টাকার অংক, সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়তে থাকা ফ্যান-ফলোয়ার বা মেসিকে ঘিরে ব্যবসায়িক কার্যক্রমের প্রসার বেড়েছে, সেদিক থেকে মেসির আগমনকেই এগিয়ে রাখা হচ্ছে।

Pop Ads

আমেরিকার ফুটবলে মেসির প্রভাব কতটুকু, সেটা একটা উদাহরণ দিলেই আপনার বুঝে ফেলার কথা।

গত ২২ জুলাই ক্রুজ আজুলের বিপক্ষে মায়ামির হয়ে প্রথম ম্যাচ ছিল মেসির। ম্যাচের মাস খানেক আগে ওই ম্যাচের টিকিটের দাম ছিল ১২২ ডলার, যা ৭ই জুন বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭৩ ডলারে। টিকেট বিক্রির ওয়েবসাইট টিকেটস্মার্টারের তথ্য অনুযায়ী সেই ম্যাচের টিকিটের গড় দাম ছিল ৭১২ ডলার, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২০০ ভাগেরও বেশি। শুধু তা-ই নয়, মেসির কারণে টিভি স্বত্ত্ব কিনতে যেমন বিপুল অর্থ খরচ করছে বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো, তেমনি মেসি, ইন্টার মায়ামি ও মেজর লিগের খবরাখবর জানানোর জন্য ডিজিটাল স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ও সংবাদ মাধ্যমগুলোও বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে, যার ফলে তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।

মেসির কারণে সেখানকার তরুণদের মধ্যে ফুটবলের প্রসারণ ঘটছে। ইন্টার মায়ামির ম্যাচ মানেই জনসমাগম তৈরি হওয়া। মায়ামির এক সমর্থক যেমন বলেছেন,’মেসি যখন শহরে আসে, তখন এটি শুধু খেলা থাকে না। সব মানুষকে একত্রিত করার এক উৎসবে পরিণত হয় এটি।’

মেজর লিগের কমিশনার ডন গারবার মেসিকে নিয়ে বলেছেন,’লিওনেল মেসি তার ক্যারিয়ার আরো সমৃদ্ধ করতে নানা বিকল্প ছিল।

মেজর লিগ সকারে যোগ দিয়েছেন বলে অতিরিক্ত বলা যাবে না। একজন বিশ্বকাপ জয়ী খেলোয়াড়, ৮বার ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা খেলছেন আমাদের লিগে। আমরা শুধু খেলাধুলার বৈশ্বিক কথোপকথনের অংশ নই, বিশ্বের সবচেয়ে বড় গল্পগুলোর মধ্যে একটি।’
গারবারের তথ্য মতে, শুধু মাত্র মেসির কারণে এ বছরে প্রায় ১২ মিলিয়ন দর্শক মেজর লিগ সকারের ম্যাচ দেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলের এই উন্নতি আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদী গারবার,’সাফল্যমণ্ডিত একটি বছর ছিল। আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও অনেক ছাড়িয়ে গেছে। এটি কেবল শুরু। আগামী বছরেও এই সাফল্য অব্যাহত থাকবে।’

আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রে হবে কোপা আমেরিকা। ২০২৬ বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজকও দেশটি। এছাড়া ক্লাব বিশ্বকাপের আসরও আয়োজিত হবে। আন্তর্জাতিক ফুটবলের এই ব্যস্ততার মাঝে ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আয়োজন সফল ভাবে সম্পন্ন করার চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন গারবার।