সাংবাদিককে হুমকি: তিন পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ

সাংবাদিককে হুমকি: তিন পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ। ছবি-প্রতিবেদক

সুপ্রভাত বগুড়া (নিজস্ব প্রতিবেদক): বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ), চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কমিটির সদস্য ও বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল জয়যাত্রা টেলিভিশনের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা প্রতিনিধি সেলিমকে প্রাণনাশের হুমকি দাতা তিন পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

আজ ২৮শে জুন (রবিবার) দুপুর ২টায় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে বিএমএসএফ এর সদস্যদের উপস্থিতিতে অভিযোগ দাখিল করা হয় বলে জানিয়েছেন বিএমএসএফ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাংবাদিক সোহাগ আরেফিন।

Pop Ads

চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া চুনতী পুলিশ ফাঁড়ির তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে জয়যাত্রা টেলিভিশনের চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি মো. সেলিম উদ্দিনের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে মামলা দিয়ে থানায় চালানের হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ওই তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী মো.সেলিম উদ্দিন।

অভিযুক্তরা হলেন-চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলমগীর, উপ-পরিদর্শক রেজুয়ান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক সিদ্দিক। অভিযোগে জানা যায়, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে তথ্য সংগ্রহের জন্য জয়যাত্রা টেলিভিশনের প্রতিনিধি মো. সেলিম উদ্দিন গত ২২ জুন চুনতি পুলিশ ফাঁড়িতে যান। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই কোন ধরণের কারণ ছাড়াই ফাঁড়িতে কর্মরত এএসআই সিদ্দিক ও এসআই রেজুয়ান তাকে অসভ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।

শুধু তাই নয়, বেশি বাড়াবাড়ি করলে তারা সাংবাদিকের চোখ উফড়ে ফেলারও হুমকি দেন। সেলিম আরো বলেন, আমি এঘটনার কারণ জানতে চেয়ে প্রতিকার পেতে চুনতী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো: আলমগীর এর কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করলেও তিনি অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন এবং কোনভাবেই তিনি তাঁর অধস্তনদের থামানোর চেষ্টাই করেননি।

এই কথোপকথন গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রামের সাংবাদিক মহলসহ সারাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধনসহ একাধিক কর্মসূচি করবে বলেও জানা গেছে সাংবাদিকমহলের পক্ষ থেকে।

উল্লেখ্য যে, চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলায় গত ২২শে জুন বিকেলে চুনতি পুলিশ ফাঁড়িতে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য তথ্য সংগ্ৰহ করতে গেলে বিএমএসএফ সদস্য সাংবাদিক সেলিম উদ্দিনকে তথ্য না দিয়ে উল্টো তাকে পকেটে ইয়াবা দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে চালান দিবে ও জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এএসআই ছিদ্দিক ও এস আই রেজুয়ান।

পরে চুনতি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রেজুয়ান এসে আমাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বলে, “এই শালা বের হ এখন ফাঁড়ি থেকে। আমি কিন্তু অন্য মাল, খুব সাবধান! কইলজা খাইফেলমু, চোখ তুলে ফেলবো শালা” এধরনের আরো উচ্চবাক্য ও অসৌজন্যমূলক আচরন করে আমাকে বার বার জানে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল। পরে আবারো বলছে, “কি আর হবে আমার, বেশি হলে চট্টগ্রামে বদলি করে দিবে”। এ কথা বলতে বলতে আমার(সেলিমের) গায়ে ধাক্কা দিয়ে ফাঁড়ি থেকে আমাকে বের করে দিয়েছিল।

এসব কথোপকথনের একটি অডিও বার্তাও আমার কাছে আছে। আমাকে গালিগালাজ, শারীরিক লাঞ্ছনা ও প্রাণনাশের হুমকি সহ হত্যার চেষ্টার সামিল যা ফৌজদারী অপরাধের সরাসরি অন্তর্ভুক্ত। দেশের করোনা পরিস্থিতির দূর্যোগময় মূহুর্তে বাংলাদেশ পুলিশের অজস্র ইতিবাচক কার্যক্রম যখন সারা দেশে ভূয়শী প্রসংশার দাবী রাখে, ঠিক সেমুহর্তে ওই তিন পুলিশ কর্মকর্তার আচরণে সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে জানান সাংবাদিক মহল।

তারা ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানান। বিএমএসএফ, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম পাইলট ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর পুলিশ কর্তৃক পেশাদার সংবাদকর্মীকে প্রাণনাশের হুমকি এবং অসৌজন্যমূলক আচরনের তীব্র নিন্দা জানান৷ সেই সাথে ঘটনার সুষ্ঠুতদন্তের দাবী জানিয়ে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।

এ বিষয়ে সাংবাদিক সেলিম উদ্দিন সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান মোল্ল্যাকে জানালে তিনি বলেন, আপনি পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দিন। আমাকে দায়িত্ব দিলে এ বিষয়ে তদন্ত করব।

অন্যদিকে এ ঘটনার বিষয়ে “বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম” চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল হাকিম রানা ও সাধারণ সম্পাদক কাইছার ইকবাল চৌধুরী তীব্র নিন্দা জানান এবং কাল বিলম্ব না করে অতি দ্রুত অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আহ্বান করেন।

অপরদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিন আওতাধীন উপজেলা সমূহের প্রস ক্লাব নেতৃবৃন্দরাও এ ঘটনার নিন্দা জানান এবং দ্রুত অভিযুক্তদের বিচার দাবি করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here