সারা বিশ্ব যদি পারে তাহলে আমরা কেন পারবো না? উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনের কথা বলতে গিয়ে কাঁদলেন ড. আসিফ ! (ভিডিও)

সারা বিশ্ব যদি পারে তাহলে আমরা কেন পারবো না? উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনের কথা বলতে গিয়ে কাঁদলেন ড. আসিফ ! ছবি-সংগ্রহ

সুপ্রভাত বগুড়া ডেস্ক: নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের দাবি করেছে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কোনো প্রতিষ্ঠান এই টিকা উদ্ভাবনের দাবি করল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের পক্ষ থেকে এ দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানটি গত ৮ মার্চ এই টিকা তৈরির কাজ শুরু করে। টিকা উদ্ভাবনে সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন প্রতিষ্ঠানের সিইও ড. কাকন নাগ এবং সিওও ড. নাজনীন সুলতানা। সংবাদ সম্মেলনে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান ড. আসিফ মাহমুদ ভ্যাকসিনটি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। কথা বলতে গিয়ে তিনি এক পর্যায়ে আবেগে কেঁদে ফেলেন। দ্রুত মাইক্রোফোন ত্যাগ করে চোখের জল আড়াল করার চেষ্টা করেন তিনি।

Pop Ads

কিন্তু কেন এই কান্না? আসিফ সারা বিশ্বের ভ্যাকসিনের অগ্রগতি সম্পর্কে বলতে থাকেন। প্রতিটি কোম্পানির ভ্যাকসিন আবিষ্কারের সময়কাল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্ব যদি পারে তাহলে আমরা কেন পারবো না? আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভ্যাকসিনের আশায় বসে থাকবো তা কেন হবে? তারা কবে দেবে আর আমরা কবে নেবো সে আশায় বসে থাকলে চলবে না।’

আসিফ এ সময় দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব একটি ভ্যাকসিন দরকার, যেন আমাদের অন্যের আশায় বসে না থেকে প্রত্যেকটি মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণের সুযোগ পায়। আমরা আর কোনো চাকরি হারাতে চাই না, আমরা আর কোনো সঞ্চয় হারাতে চাই না, আমরা আর কোনো সুখী সময় হারাতে চাই না, আমাদের মধ্য থেকে আমরা আর কোনো মানুষকে হারাতে চাই না। উই কান্ট এফোর্ড টু লুজ এনিমোর…’ বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন আসিফ।

করোনায় ইতিমধ্যেই দেশের মানুষ অনেক কিছু হারিয়েছে। এই হারানোর বেদনা এতো গভীরে দাগ ফেলে যাচ্ছে যা আসলে অনেকেই সামলে নিতে পারছেন না। মানুষ বাসা ভাড়া দিতে পারছে না, চাকরি হারাচ্ছে। এই করোনা কত প্রিয় স্বজনকে কেড়ে নিয়েছে। আসিফ হয়তো এসবের আর কিছুই হারাতে চান না। এজন্যই জান-প্রাণ দিয়ে করোনার ভ্যাকসিনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কথা বলতে গিয়ে আসিফের আবেগের কান্না ছুঁয়ে গেছে  দেশবাসীকেও। তাই তো প্রার্থনা জোড়ালো হয়েছে, ‘এবার আমাদের ভ্যাকসিন হচ্ছে, হোক।’

আসিফ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে করোনার ভ্যাকসিনে সফল হয়েছি। প্রাণী পর্যায়ে এটা সফল হয়েছে।’ তিনি জানান, তিনটি খরগোশের ওপর এই ভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হয়েছে। তার আশা, মানবদেহেও সফলভাবে কাজ করবে এই ভ্যাকসিন। আসিফ আরও জানান, এখন তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যাবেন। এরপর তাদের দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শিগগিরই প্রটোকল তৈরি করে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এটি হস্তান্তর করা হবে। কান্নার এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই আসিফ মাহমুদকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। অনার্সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাইক্রোবায়োলজিতে প্রথম শ্রেণিতে তৃতীয় ও এমএসসিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া আসিফকে নিয়ে একটি শ্রেণি গর্বই করছে।

বলা হচ্ছে, আসিফের সামনে অপার সম্ভাবনা ছিল উন্নত জীবনের। চলে যেতে পারতেন ইউরোপ কিংবা আমেরিকায়। কিন্তু তিনি যাননি। দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে দেশেই থেকে গেছেন।

ভিডিও : https://youtu.be/CLbG8Ishfjk

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here