৫০ বছরে বিলুপ্ত সাগর

8
৫০ বছরে বিলুপ্ত সাগর

জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিরূপ প্রভাব এখন প্রকৃতিতে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এমনকি প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মাত্রা বছরজুড়েই ১.৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়কালের উষ্ণায়ন ১.৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। তবে গত এক দশকের বেশি সময় আগে যখন বৈশ্বিক উষ্ণায়নের এই ধরনের বিরূপ প্রভাব ততটা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠেনি, তখন বিশ্ব একটি সাগরের পুরো জলরাশিকে শুকিয়ে যেতে দেখেছে।

আর এই দুর্ভাগ্যময় পরিণতি ঘটেছে আরাল সাগরের।
আরাল সাগর আদতে কাজাখস্তান আর উজবেকিস্তানের মধ্যে অবস্থিত একটি ভূবেষ্টিত হ্রদ। এর জলরাশি প্রধানত ২০১০ সালের মধ্যেই শুকিয়ে যায়। এর নেপথ্যে রয়েছে সোভিয়েত আমলের একটি সেচ প্রকল্প।

Pop Ads

৬৮ হাজার বর্গকিলোমিটারের সুবিশাল জায়গাজুড়ে প্রসারিত ছিল আরাল সাগর। এটি ছিল বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অন্তর্দেশীয় জলাশয়। ১৯৬০-এর দশক থেকে এই সাগর সংকুচিত হতে শুরু করে। কারণ যে নদীগুলো জলাশয়টিতে পানি সঞ্চারিত করত, সেগুলোর গতিপথ বদলে দেওয়া শুরু হয়।

ওই সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন সরকার কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান ও তুর্কিমেনিস্তানের শুষ্ক ভূমিতে ফসল ফলাতে বিশাল সেচ প্রকল্প হাতে নেয়। পানি শুষ্ক জমিতে তুলা ও অন্যান্য ফসল ফলাতে ওই অঞ্চলের দুটি প্রধান নদী সির দরিয়া ও আমু দরিয়ার সেচের জন্য ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোভিয়েত সরকারের ওই সেচ প্রকল্পের ফলে কৃষিতে তখন উন্নয়ন ঘটলেও নদীর পানির অভাবে আরাল সাগরের বিলুপ্তির ধারা শুরু হয়ে যায়। চিরতরে মুছে যাওয়ার আগে উত্তর থেকে দক্ষিণে ২৭০ মাইল বিস্তৃত এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমের দিকে ১৮০ মাইল বিস্তৃত ছিল আরাল সাগর। কিন্তু নতুন কৃষিজমি তৈরি করতে নদীর পানি ব্যবহার করা হলে আরাল সাগর তার টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়।

নদীর পানির অভাবে শেষ পর্যন্ত ধীরে ধীরে আরাল সাগরের শেষ বিন্দু পানিও শুকিয়ে যায়। সূত্র : এনডিটিভি।