অমানসিক নির্যাতনের স্বীকার মেঘলা

266

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইলমা চৌধুরী মেঘলার ওপর অমানসিক নির্যাতন চালাত স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মেঘলার সহপাঠী এবং শিক্ষকরা এ অভিযোগ করেছেন। মঙ্গলবার রাতে মেঘলার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ছুটে আসেন তার সহপাঠী এবং শিক্ষকরা। মেঘলার স্বজনরা বলেন, ‘দেশে ফিরেই মেঘলার স্বামী ওকে মারধর করেছে। মেঘলার শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলেছেন, ও ঘুমের ওষুধ খেয়েছে। কিন্তু ঘুমের ওষুধ খেলে কী শরীরে দাগ হয়। খবর পেয়েই আমরা হাসপাতালে চলে এসেছে। ওর সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন।’

Pop Ads

রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে মেঘলার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মেঘলার খালু ইকবাল হোসেন জানান, ‘৬ মাস আগে কানাডা প্রবাসী ইফতেখার আবেদীনের সঙ্গে বিয়ে হয় মেঘলার। পাঁচ দিন আগে কানাডা থেকে ঢাকার বাসায় আসে তার স্বামী। আমার ভাগ্নিকে স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেরে ফেলেছে। মেঘলার শরীরে আমরা অনেক আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। গলায়ও আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। মেঘলা আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

মেঘলার সহপাঠী মজিদা নাসরিন মম বলেন, ‘বিয়ের আগ পর্যন্ত বেগম সুফিয়া কামাল হলে থাকতো মেঘলা। বিয়ের পর থেকে  শ্বশুরবাড়িতে থাকতো। গত সেপ্টেম্বরে তার সঙ্গে শেষ দেখা হয়। একটি পরীক্ষা দিতে আসছিল। এর পরে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। আমরা শুনেছি তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিত না। প্রতিনিয়ত সন্দেহ করতো ওকে। ফোন দিলেও শাশুড়ি রিসিভ করতো। আমরা ওর শরীরের আঘাতগুলো দেখেছি। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

 

নৃত্যকলা বিভাগের প্রভাষক তামান্না রহমান বলেন, ‌‘আমরা ইলমার শরীরের আঘাত দেখেছি। এটা কোনোভাবে আত্মহত্যা হিসেবে মেনে নেওয়া যায় না। আমি শুনেছি মেঘলা যখন গত সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছিল তখন ওর সঙ্গে একজন বডিগার্ড ছিল। কতটা অবিশ্বাস এবং সন্দেহ করতো তাকে।’

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আজম মিয়া জানান, মেঘলার শরীরের অনেক জায়গায় পুরাতন ও নতুন জখম রয়েছে। পরিবারের লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।