অর্থায়ন আলোচনার গতিতে বাংলাদেশ হতাশ

7
অর্থায়ন আলোচনার গতিতে বাংলাদেশ হতাশ

জলবায়ু তহবিল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চললেও এখনো প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার দিতে উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন না দেখে হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে চলমান বার্ষিক জলবায়ু সম্মেলন কপ২৮-এর মধ্যে গত রবিবার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ মনোভাব জানানো হয়।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আন্ত সরকারি প্যানেলের (আইপিসিসি) সর্বশেষ প্রতিবেদন ও জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থার বার্তা হচ্ছে—এই দশকের মধ্যেই দূষণ দ্রুত কমানো না গেলে প্রাকৃতিক ব্যবস্থাপনা, মানুষ ও তার দৈনন্দিন কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এটি বাংলাদেশের মতো সবচেয়ে বিপদাপন্ন দেশগুলোর ঝুঁকির মাত্রা অকল্পনীয় জায়গায় নিয়ে যাবে।

Pop Ads

বিশ্বনেতাদের মধ্যে প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে অঙ্গীকারের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে মন্তব্য করে ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ‘জলবায়ু অর্থায়ন আলোচনার অগ্রগতিতে বাংলাদেশ হতাশ। বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়া ছাড়াও জলবায়ু অর্থায়ন হিসাবের পদ্ধতি নিয়েও আমাদের তীব্র আপত্তি আছে।’

বাংলাদেশ ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (ইউএনএফসিসি) অর্থায়নবিষয়ক স্থায়ী কমিটির (এসসিএফ) প্রতি দ্রুত জলবায়ু অর্থায়নের সাধারণ সংজ্ঞা ঠিক করার আহবান জানায়।

বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে এরই মধ্যে ২৪টি পার্শ্ব অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। ২০২১ সালে জমা দেওয়া বাংলাদেশের হালনাগাদ জাতীয় ঘোষণায় দূষণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা ২০১৫ সালের তুলনায় তিন গুণ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এতে অভিযোজন ও শ্রশমনে ৫০:৫০ বরাদ্দ এবং প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অভিযোজনে অনুদানভিত্তিক অর্থায়নের পক্ষে মত দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ), লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রিজ ফান্ড (এলডিসিএফ), অ্যাডাপ্টেশন ফান্ড (এএফ) ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ) ট্রাস্ট ফান্ডগুলোকে শক্তিশালী করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনে মিটিগেশন ওয়ার্ক প্রগ্রাম এবং গ্লোবাল স্টকটেকের আওতায় (জিএসটি) কর্মকাণ্ডের অগ্রগতিতেও বাংলাদেশ হতাশা ব্যক্ত করেছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে ন্যায্য ও ন্যায়সংগত রূপান্তরে বড় অর্থনীতির দেশগুলোর ভূমিকা নিয়ে গতকাল দুবাইতে একটি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। সেখানে ২০৫০ সালের মধ্যে প্যারিস চুক্তির দেড় ডিগ্রির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ও দূষণ ব্যাপকহারে কমাতে শক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহবান জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদ্যুৎ খাতকে কার্বনমুক্ত করতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।

সংবাদ সম্মেলনে নবায়নযোগ্য বিদুৎ থেকে বৈশ্বিক চাহিদার ন্যূনতম ৬০ শতাংশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ, বিদ্যুৎ খাতে কয়লা, গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম ব্যবহার বন্ধের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঠিক করাসহ বিভিন্ন দাবি করা হয়।