বগুড়ার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন ও ছাত্রাবাসের ভাড়া মওকুফ করা হোক : মুকুল

করোনা পরিস্থিতিতে খোলা চিঠি :

সুপ্রভাত বগুড়া (স্বাধীন মতামত): নোভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রভাবে যখন সারাবিশ্বের মানুষ অজানা ও প্রায় অদৃশ্যমান শত্রুর সাথে সচেতন হয়ে যুদ্ধে নেমেছে।

অন্যদিকে বগুড়ায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ও ছাত্রাবাস/ছাত্রীবাস মালিকরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভাড়া নেয়ার অপচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে।

Pop Ads

মে ১, ২০২০ইং এর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ দেখা যায়, সারাবিশ্বে এই ভাইরাসে ১৮৭টি দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ লাখ ৫৬ হাজার ৫৭০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৬৩ জনের।

আমাদের বাংলাদেশে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ২ শত ৩৮জন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৭৪জন ও মৃত্যু হয়েছে ১৭০ জনের। আমাদের বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে বগুড়ায় জেলায় এখন ১৮জন করোনায় শনাক্ত রোগী রয়েছে।

এরমধ্যে আদমদিঘী উপজেলায়  ২ জন, শিবগঞ্জ উপজেলায় ১ জন, নন্দীগ্রাম উপজেলায় ১জন , সদর উপজেলায় ৩ জন, সারিয়াকান্দি উপজেলায় ৩ জন, গাবতলী উপজেলায় ১ জন, সোনাতলা উপজেলায় ৩ জন, দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ১ জন, শাজাহানপুর উপজেলায় ২ জন, ধুনট উপজেলায় ১ জন।

জেলায় বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে- ১৬৩২জন। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতায় অজানা শত্রæর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে জরুরী পরিসেবা, চিকিৎসা সেবা, খাদ্য সরবরাহ ও সংগ্রহ ছাড়া অফিস, আদালত, স্কুল, কলেজ, সপিংমল, দোকানপাট বন্ধ করে জেলা শহরগুলো একেরপর এক লক ডাউন হতে শুরু করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নিদের্শে যখন কর্মহীন হয়েপড়া মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন সমাজের জনপ্রতিনিধি সহ সচেতন ও বিত্তবান মানুষরা। তখন প্রধানমন্ত্রী বাড়িওয়ালাদের ভাড়া নিতে বারণ করেছেন।

দেশের মানুষ যে যেখান থেকে পারছেন সে সেখান থেকে মানুষের পাশে দাড়াতে চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন। করোনার বিস্তার ঠেকাতে মানুষকে ঘরে রাখতে ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে দিনের ২৪ ঘন্টা পুলিশ কাজ করছে, ডাক্তার-নার্স তাদের জীবন বাজি রেখে আক্রান্তদের সেবা করছেন, সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করছেন সাথে যোগ হয়েছে দেশ ভালোবেসে তরুণ প্রজন্ম স্বেচ্ছাসেবী হয়ে কাজ করছেন মানুষ ঘরে রেখে সুস্থ রাখতে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে সারা বিশ্বের ন্যায় দিন দিন এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা আমাদের প্রিয় জন্মভ‚মিতে বেড়েই চলছে। আক্রান্তের সাথে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে প্রাণ।

ঠিক সেই মুহুর্তে বগুড়া জেলার বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল কলেজে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়মিত বেতন আদায়ের চেষ্ঠা করা হচ্ছে। বগুড়া জেলায় বেসরকারি স্কুল কলেজে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের।

যখন নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষদের জীবনযাপনে করোনা পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার যুদ্ধে লিপ্ত, তখনই জেলার বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল কলেজে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়মিত বেতন আদায়ের চেষ্ঠা করা হচ্ছে।

অপরদিকে বগুড়া জেলা উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হওয়ায় এই জেলা শহরে শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটায় আশপাশের বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার মেধাবী শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা করে দেশের উন্নয়নে নিজেকে সামিল করছে।

বগুড়া জেলা লক ডাউনের পর থেকে জেলা ও উপজেলা সদরে যত শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস/ছাত্রীবাস ছিল তা বন্ধ করে দেয়া হয়। বর্তমানে ছাত্রাবাস/ছাত্রীবাস থাকা শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন।

বগুড়ায় অবস্থান করা দুই তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী নিম্নবিত্ত, কৃষক ও অসচ্ছল পরিবার থেকে আসা। যারা নিজেদের পড়াশোনার খরচ চালাতে বিভিন্ন স্কুল-কোচিং এ পার্ট টাইম চাকুরী করে, টিউশনী করে নিজেদের পড়াশোনার খরচ চালায়। আর তাদের উপার্জনের পথ প্রায় ২ মাস হলো বন্ধ হয়ে আছে।

এই অবস্থায় ছাত্রাবাস/ছাত্রীবাস মালিকরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভাড়া নেয়ার অপচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। এবং বিভিন্ন ছাত্রাবাসের মালিকরা দূর্ব্যবহার করছে বলেও জানা গেছে।

করোনা পরিস্থিতিতে তাই এই খোলা চিঠিতে, বগুড়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপুমণি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।

যাতে করে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত বগুড়া বেসরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস/ছাত্রীবাসের ভাড়া মওকুফ করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here