সুপ্রভাত বগুড়া (আবদুল ওহাব শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়া শাজাহানপুরে প্রেমের টানে তিনদিন ধরে বাড়ি থেকে পালিয়ে উধাও হয়েছে এক কিশোর ও কিশোরী। তথাপি তাদের খোজাখুজি করতে কোন আগ্রহ বা তৎপরতা নেই পরিবার দু’টির। কিন্তু ছেলে-মেয়ে দু’টি নাবালক-নাবালিকা হলেও তাদের বিয়ের আয়োজনে ব্যাস্ত সময় পার করছেন তাদের অভিবাকগণ।
আর ঘটনার এই পারিবারিক চিত্র দেখে হতবাক হয়ে পড়েছেন এলাকার আবাল বৃদ্ধ বণীতা। শুধু তাই নয়, ঘটনাটি চাঞ্চল্য ও তোলপাড় সৃষ্টি করেছে এলাকা জুড়ে। সোমবার ১৪ সেপ্টেম্বর ঘটনার বিবরণে জানাযায়, উপজেলার ক্ষুদ্র ফুলকোট গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের মেয়ে সীমা (১৩) উপজেলার রাধানগর আজিরণ মহিলা মাদরাসায় নবম শ্রেনীর ছাত্রী।
অপরদিকে একই গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে লিখন (১৭) বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেনীর প্রথম বর্ষের ছাত্র। মাদরাসা ও কলেজে যাওয়ার পথে দুজনের দেখা হয় প্রতিদিন। দিনেদিনে গড়ে উঠে ভালবাসার সম্পর্ক ও দুজনার প্রতি দু’জনের আকর্ষন। তাছাড়া দুজনেরই পাশাপশি বাড়ি হওয়ায় সময়ে অসময়ে লুকোচুড়ি সহ ভালবাসার গভীরতাও প্রকট হয়ে পড়ে। এভাবে পরিবার ও সমাজকে ফাকি দিয়ে প্রায় এক বছর যাবত চলতে থাকে তাদের ভালবাসার পরিণয়।
এমনই ধারাবাহিকতায় করোনার এ দুর্যেগে লিখনের কলেজ ও সীমার মাদরাসা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় অবাধে দুজনের দেখা, কাছে আসা ও ভালবাসার বিনিময়ও অনেকটা বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে হৃদয়ের ব্যাকুলতা আষাঢ়ের বৃষ্টিতে ঝড়তে থাকে। প্রতিবেশীরা জানান, এমনই পরিবেশে দিন কাটে সীমা ও লিখনের।
সীমার মা শাহীনুর বেগম জানান, গত শনিবার বেলা দশটার দিকে বোনের বাড়ি যাওয়ার কথা বলে সীমা বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে প্রতিেিবশীরা তাদেরকে জানায়, পথে পাশের বাড়ির লিখনের মোটর সাইকেলে উঠে সীমা পালিয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, সীমা বয়সে ছোট। এতো ছোট বয়সে প্রেম-ভালবাসা করেছে কোনদিন বুঝতেও দেয়নি। সীমার চাচা সফিকুল ইসলাম জানান, পরিবারের চোখ ফাকি দিয়ে ভিতরে ভিতরে এতোদুর কোনদিন কল্পনাও করতে পারিনি।
তবে নাবালিকা ছোট একটি মেয়ে কোথায় উধাও হলো সেবিষয়ে খোজখবর নেয়া এবং না পাওয়া গেলে থানা পুলিশকে কেন অবগত করছেন না। এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, প্রেমের টানে দুজনে পালিয়েছে। এতে কি করার আছে। কয়েকদিন পড়ে আসলে বিয়ে পড়িয়ে দেয়া হবে। অপরদিকে একই বিষয়ে লিখনের মা লাভলী বেগমের নিকট জানতে চাইলে তিনিও একই সুরে কথা বলেন।
তিনি জানান, ওদের ভাল লেগেছে বলেই পালিয়েছে। থানায় অভিযোগ বা ডাইরী করে কি লাভ। বাড়িতে আসলে পাড়ার সবাইকে নিয়ে বিয়ে পড়িয়ে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে পাড়ার সচেতনরা জানিয়েছেন, এতো ছোট বয়সে কিশোর-কিশোরীর বিয়ে পড়িয়ে দেয়াটা ঠিক নয়। এভাবে চলতে থাকলে সমাজ বাল্যবিয়ের কড়াল গ্রাসে পড়বে। তাই বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কল্পে তারা প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।