বিকাশ জালিয়াতি চক্রের মুলকেন্দ্র ফরিদপুরের মধুখালীর ডোমাইন গ্রাম থেকে বিকাশ হ্যাকার চক্রের ৯ সদস্য গ্রেপ্তার !

বিকাশ জালিয়াতি চক্রের মুলকেন্দ্র ফরিদপুরের মধুখালীর ডোমাইন গ্রাম থেকে বিকাশ হ্যাকার চক্রের ৯ সদস্য গ্রেপ্তার !

সুপ্রভাত বগুড়া (গরম খবর): রাজধানী, ফরিদপুরের মধুখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিকাশ হ্যাকার চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগ। ডিবি জানায়, আসামিরা তাদের সোর্সের কাছ থেকে বিকাশ এজেন্টের ক্যাশ-ইন রেজিস্ট্রার খাতার পাতা কিনে যাদের মোবাইলে টাকা গেছে তাদের ফোন দিয়ে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিভ্রান্ত করে টাকা হাতিয়ে নিতো। নম্বর লেখা প্রতিটি পাতা ২০০-৩০০ টাকায় কিনতেন তারা।

বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার এ তথ্য জানান। গ্রেফতাররা হলো- মো রানা খান, মো. লিটন, মো. নয়ন শেখ, মো. টিটু মোল্লা, মো. সালমান মোল্লা, আকাশ শেখ, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, মো. রহিম ও মো. তানজিল। গ্রেফতারদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি আইফোনসহ ১০টি মোবাইল, ৩৭টি সিম ও একটি প্রোবক্স গাড়ি উদ্ধার করা হয়।

Pop Ads

তিনি বলেন, গ্রেফতারদের মধ্যে একজন বিভিন্ন বিকাশের দোকানে ক্যাশ-ইন রেজিস্ট্রারের নম্বর লেখা পাতার ছবি সুকৌশলে তুলতেন। এরপর হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ফরিদপুরের মধুখালী থানার ডুমাইন গ্রামে থাকা মূল হ্যাকারদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। নম্বর লেখা প্রতিটি পাতা ২০০-৩০০ টাকায় বিক্রি করতেন। মূল হ্যাকাররা নম্বর দেখে বিকাশের দোকানদার সেজে ভিকটিমকে বিভিন্ন অপারেটরের সিম থেকে কল দিতেন এবং বলতেন তার দোকান থেকে ভুলে কিছু টাকা ভিকটিমের নম্বরে চলে গেছে।

তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিমের অ্যাকাউন্টটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং বিকাশ অফিস থেকে তাকে কল দেয়া হবে। এ সময় বিকাশের সম্পন্ন প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ বলেন, প্রথম ফোনের কিছুক্ষণ পর মূল হ্যাকার বিশেষ অ্যাপ ব্যবহার করে বিকাশ অফিসের নাম করে বিকাশ সেন্টারের মূল নম্বরের সদৃশ্য নম্বর থেকে ভিকটিমকে কল দিতেন। ভিকটিমের নম্বরে তখন +০১৬২৪৭ থেকে কল আসে।

কল সেন্টারের ওই ব্যক্তি ভিকটিমের নম্বরে একটি ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) পাঠাতেন এবং কৌশলে পাঠানো ওটিপি ভিকটিমের কাছে জানতে চায়। ভিকটিম প্রতারিত হয়ে তার কাছে পাঠানো ওটিপি এবং পিন নম্বর বলে দেয়। ডিবির এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ভিকটিম অনেক সময় পিন নম্বর বলতে না চাইলে হ্যাকাররা ভিকটিমকে একটি অংক করার জন্য বলতেন এবং অংক করার ছলে ভিকটিমের কাছ থেকে সুকৌশলে পিন নম্বর জেনে নিতেন (যেমন-আপনার পিন নম্বরের সঙ্গে ১০০ যোগ করলে কত হয়?)। ওটিপি এবং পিন জানার পর হ্যাকাররা ভিকটিমের অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতেন।

ভিকটিমের অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর হ্যাকাররা ভিকটিমের অ্যাকাউন্টের টাকা বিভিন্ন এজেন্ট পয়েন্টে পাঠিয়ে দিয়ে মনোনীত ব্যক্তির মাধ্যমে ক্যাশ আউট করে নিতেন। যে দোকান থেকে ক্যাশ আউট করা হতো তাকে প্রতি ১০ হাজারে ১ হাজার টাকা দেয়া হতো। টাকা ক্যাশ আউট করার পর ওই ব্যক্তি পুনরায় হ্যাকারদের পার্সোনাল বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে দিতেন। এছাড়া প্রতারণার কাজে আইফোন ব্যবহার করতেন।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার আরো বলেন, হ্যাকার চক্র থেকে নিরাপদ রাখতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিকাশ এজেন্ট সেজে কেউ ফোন করে পিন নম্বর অথবা পাসওয়ার্ড চাইলে না দেয়ার জন্যও অনুরোধ জানান তিনি। বিকাশের প্রতারণার ঘটনায় ভাটারা থানায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর একটি মামলা হয়। সেই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here