ঈদের খুশী

ঈদের খুশী

মোঃ শহীদুল আলম (শাহীন)

ঈদ মানে আনন্দ। আনন্দের ভাগাভাগি। পরিবার ও পরিবারের বাইরের সবার আনন্দ উপভোগ করার কথা। বছরে দুটি ঈদ মুসলমানদের জীবনে আনন্দ বয়ে আনার কথা। কিন্তু বাস্তবে কি তাই ঘটে। ছোট বেলায় আনন্দ উপভোগ করেছি। কিন্তু এখন আমি পরিবারের একজন কর্তা। চিন্তা করি ঈদ হচ্ছে এখন স্বচ্ছল ব্যক্তিদের জন্যই। গত রোজার ঈদে ছেলেমেয়েদের ঈদের কাপড় দেয়ার পর নিজের তো দুরের কথা স্ত্রীকে পর্যন্ত কাপড় দিতে পারিনি। তাই আনন্দের ভাগাভাগিও জোটে নি।

Pop Ads

স্ত্রীর কাছে শুধু ছোটই হলাম না নিজেকে অপদার্থও মনে হলো। পরিবারের বাইরে যারা আছে যেমন বাসার কাজের মেয়েকে কাপড় দিতে হয়েছে। এরা আমাদের চেয়ে গরীব হলেও ভাগ্যবান। যে সমস্ত বাসায় কাজ করে প্রতিটি বাসা থেকেই কাপড় পায়। অথচ আমার স্ত্রীকে কাপড় দিতে পারিনি। সেজন্য ঈদের আনন্দও ম্লান হয়ে গেছে।

আবার কোরবানী ঈদে পোষাকের কদর না থাকলেও থাকে পশুর কদর। কিন্তু কোরবানীও এখন উচ্চবিত্তদের জন্য কোন ব্যাপার না হলেও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিলাসিতা নয়ত চক্ষুলজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক কষ্টে একটি গরুর সাত ভাগের একভাগের টাকা যোগাড় হলেও পরবর্তিতে অনেক খরচ কাটছাঁট করতে হয় যা পরে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। তখন ঈদের আনন্দ কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়।

আগে মানুষ ঈদে কোরবানী দিতে না পারলেও মাঝে মধ্যে মাংস কিনতে পারত। কিন্তু এখন মাংসের মুল্য বৃদ্ধিতে সে সুযোগটুকুও হারিয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। তাহলে কাকে দোষারোপ করবো। ভাগ্যকে নাকি সামাজিক ব্যবস্থাকে। সামাজিক বৈষম্যকে তরান্বিত করতে পারলে, ধনীকে আরও ধনী হতে না দিলে, সবশ্রেণীর কায়িক ও মানষিক শ্রমজীবীদের ন্যায্য মূল্য দিলে আশা করা যায় বৈষম্য দুর হবে এবং সকল মানুষ ঈদের খুশীতে অংশগ্রহন করতে পারবে। কারণ সব মানুষ কোনও না কোনভাবে দেশ ও দশের সেবা এবং উন্নয়ন কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত।

তাই দেশের সবারই জাতীয় কোন ধর্মীয় বা অন্য কোন উৎসবে অংশগ্রহনের অধিকার রয়েছে। আমাদের ধর্মেও মানুষের মধ্যে সমতা আনার চেষ্টা করা হয়েছে। ঈদের দিনে সামর্থবানদের অসহায় আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের পাশে দাঁড়াতে এবং আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বলেছে। সবশেষে বলতে পারি মানুষ মানুষের জন্য। সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।

মোঃ শহীদুল আলম (শাহীন)
০১৭৩৮-৪৮৯২০৬