সীতাকুণ্ডের আগুন কেলেঙ্কারি : মালিকপক্ষের গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে তদন্তে

সীতাকুণ্ডের আগুন কেলেঙ্কারি : মালিকপক্ষের গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে তদন্তে

সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় মালিকপক্ষের অবহেলা ছিল। এ দুর্ঘটনার জন্য মালিকপক্ষ ও তদারকি সংস্থা দায়ী। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি বলেছে, এক মাস আগে বেসরকারি ওই কনটেইনারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মালিকপক্ষ এবং তদারকির দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলো দায় এড়াতে পারে না।

Pop Ads

তদন্ত কমিটির সদস্যরা বুধবার বিকালে চট্টগ্রমের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।  কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, “ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনার কারণ, দায়-দায়িত্ব নিরূপণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে সুপারিশ প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের ওপর। সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তারা তদন্ত করেছেন।”

কমিটির প্রতিবেদনে ২০টি সুপারিশ রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা দুর্ঘটনাস্থলে সরেজমিনে গিয়েছি এবং কারা এর জন্য দায়ী তা নির্ধারণের চেষ্টা করেছি। এটাকেই চূড়ান্ত বলা যাবে না। এ ঘটনায় বৃহত্তর তদন্তও হতে পারে।”

বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “দুর্ঘটনার পর সরকারের নির্দেশে এ তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আমরা এ প্রতিদেন মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে পাঠাবো। সেখান থেকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ হবে।”

তদন্ত কমিটির এক কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের প্রতিবেদনটি ছিল ২৪ পৃষ্ঠার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাত সাড়ে ৮টায় ডিপোর কনটেইনারে ধোঁয়া দেখা গেলেও তখন পর্যন্ত আগুন লাগেনি। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করা হয়। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারীদের সেখানে রাসায়নিক থাকার বিষয়টি জানানো হয়নি। ডিপোর নিরাপত্তা বজায় না রেখে সেখানে পোশাক ও অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে বিপজ্জনক পণ্যসহ রাসায়নিক রাখা হয়েছিল।”

গত ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর একের পর এক বিস্ফোরণে তা ছড়িয়ে পড়ে। ডিপোতে থাকা রাসায়নিকের কারণে ছড়িয়ে পড়া ওই আগুন ৮৬ ঘণ্টা পর বিভিন্ন বাহিনীর চেষ্টায় নেভানো হয়।

ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত অর্ধশত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ। দুর্ঘটনার পর মোট ছয়টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর এবং বিভাগীয় কমিশনারের গঠিত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিল।