এখন বিলুপ্ত প্রায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী “ধানের গোলা”

এখন বিলুপ্ত প্রায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী "ধানের গোলা" । ছবি-এমরান মাহমুদ

সুপ্রভাত বগুড়া (এমরান মাহমুদ প্রত্যয় নওগাঁ থেকে): গ্রামবাংলার সমৃদ্ধির প্রতীক ধানের গোলা এখন বিলুপ্ত প্রায়। অথচ এক সময় সমাজের নেতৃত্ব নির্ভর করত কার ক’টি ধানের গোলা আছে এ হিসেব কষে। কন্যা পাত্রস্থ করতেও বর পক্ষের বাড়ী ধানের গোলার খবর নিতো কনে পক্ষের লোকজন। যা এখন শুধু কল্পকাহিনী।

গ্রাম অঞ্চলে বাড়িতে বাড়িতে বাঁশ দিয়ে গোল আকৃতির তৈরী করা ধানের গোলা বসানো হতো উচুঁতে। গোলার মাথায় থাকত টিনের তৈরী মিশরের পিরামিড আকৃতির টাওয়ার। যা দেখা যেত অনেক দুর থেকে। বর্ষার পানি আর ইঁদুর তা স্পর্শ করতে পারতনা। মই বেয়ে গেলায় উঠে তাতে ফসল রাখতে হতো।

Pop Ads

এই সুদৃশ্য গোলা ছিল সম্ভ্রান্ত কৃষক পরিবারের ঐতিহ্য। সে সময় ভাদ্র মাসে কাদা পানিতে ধান শুকাতে না পেরে কৃষকরা ভেজা আউশ ধান রেখে দিতো গোলা ভর্তি করে। গোলায় শুকানো ভেজা ধানের চাল হত শক্ত।

কিন্তু বর্তমানে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও আধুনিক কলের লাঙ্গল যেন উল্টে পাল্টে দিয়েছে গ্রাম অঞ্চলের চালচিত্র। গোলায় তোলার মত ধান আর তাদের থাকে না। গোলার পরিবর্তে কৃষকরা ধান রাখা শুরু করে বাঁশের তৈরী ক্ষুদ্রাকৃতি ডোলায়। ধান আবাদের উপকরন কিনতেই কৃষকের বিস্তর টাকা ফুরায়।

কৃষকের ধানের গোলা  এখন শহরের বিত্তশালীদের গুদাম ঘরে পরিনত হয়েছে। এ ব্যপারে আত্রাই উপজেলার আহসাগঞ্জ ইউনিয়নের দমদমা  গ্রামের কৃষক মোঃ সালাম উদ্দিন বলেন, আগে আমাদের বাব-দাদারে কাছে শুনেছি বর্ষার সময়ে কৃষকরা ধান মাড়াই করে গোলায় কিংবা বড় আকারের মাটির তৈরী পাত্রে রাখা হতো ধান।

তা শুকনো মৌসুমে বের করে শুকিয়ে বাজারজাতসহ নিজেদের জন্য রাখা হতো। এখন আর এগুলো দেখা যায় না। কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গ্রামের কৃষকরা উৎপাদিত ধান-চাল লোহার তৈরী ড্রামের মধ্যে রাখে এবং শহরে পরিনত হয়েছে গুদাম ঘরে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কে এম কাওছার  বলেন,আগে চেয়ে কৃষকদের আবাদি ও বাসেস্তানের জমি কমে যাওয়া,গোলা তৈরীতে যায়গা বেশি লাগা,গোলাকে বায়ুরোধী রাখতে না পারার জন্য পোকা ও রোগের আক্রমনের সম্ভনা দেখা দেয়া এবং অঙ্কুরোদবম ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ নানা কারনে ধানের গোলা এখন গুদাম ঘরে পরিনত হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here