এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন, ধান কাটার শুরুতেই দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট !

সুপ্রভাত বগুড়া (কৃষি সংবাদ): এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সুনামগঞ্জে জেলার বিভিন্ন হাওরে আগাম জাতের ধান পাকায় ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। করোনা প্রাদুর্ভাব ও লকডাউনের কারণে ধান কাটার শুরুতেই শ্রমিক সংকটে পড়েছেন জেলার বোরো চাষিরা। আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার সকল নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকায় হাওরে ধান নিয়ে বিপাকে রয়েছেন তারা।

শ্রমিকের অভাবে সময় মতো ধান কাটতে না পারলে অকালবন্যা দেখা দিলে পাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। জানা যায়, বোরো প্রধান জেলা সুনামগঞ্জে এবার ২ লাখ ২৩ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে বোরো ধান। গত বছরের চেয়ে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতীয় ধান বেশি হওয়ায় উৎপাদন অনেক বেড়ে যাওয়ার আশা রয়েছে।

Pop Ads

এবার চালের দিক দিয়ে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিকটন চাল। যা অন্য বছরের চেয়ে প্রায় ২৪ হাজার মেট্রিকটন বেশি। পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে নিরাপদে ধান গোলায় তুলতে পারবেন বলে আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগ। বছরের একটি মাত্র ফসল বোরো ধানের ওপর নির্ভর করে হাওর অধ্যুষিত এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহ হয়। এপ্রিলের প্রথম দিকেই জেলার বিভিন্ন হাওরের আগাম জাতের ধান পাকতে শুরু করেছে। কিন্তু করোনা প্রাদুর্ভাব ও লকডাউনে শ্রমিক সংকটে পড়েছেন চাষিরা।

করোনা সংক্রমণসহ নানা কারণে এবার অন্য জেলা থেকে ধান কাটার শ্রমিকরা আসতে চাচ্ছেন না। আসলেও শ্রমিকদের বেশি মজুরি ও সুযোগ সুবিধা দিয়ে ধান কাটতে আনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। অন্য জেলা থেকে অন্যান্য বছরের চেয়ে শ্রমিক কম আসা ও স্থানীয়ভাবে লোকবলের সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রমিক সংকট নিরসন না হলে ক্ষেতের পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়তে পারেন হাওর পাড়ের চাষিরা।

এদিকে চলতি সপ্তাহে বৃষ্টিপাত হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। বাড়তে পারে সুরমাসহ জেলার সবকটি নদীর পানি। এখনও শতভাগ শেষ হয়নি ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ। এমন পরিস্থিতিতে নির্বিঘ্নে বোরো ধান গোলায় তোলা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন হাওরের কৃষকেরা। তাই সময় মতো ধান কাটতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ধান কাটার মেশিনসহ অন্য জেলা থেকে শ্রমিক আসার সুব্যবস্থা করে দিতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন কৃষকরা।

বৃষ্টিপাত ও অকালবন্যার আগে একটিমাত্র ফসল নির্বিঘ্নে ঘরে তোলার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সুনামগঞ্জের বোরো চাষিরা। বেলাল হোসেন নামে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের এক কৃষক বলেন, এবার হাওরে ভালো ধান হয়েছে। তবে ধান কাটা নিয়ে আমার চিন্তায় রয়েছি। করোনার কারণে অন্য জেলাগুলো থেকে শ্রমিক আসতে চাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সময় মতো ধান ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।