এবার যৌতুকের বলি গৃহবধু ইয়াসমিন, শরীরে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দিলো স্বামী !!

এবার যৌতুকের বলি গৃহবধু ইয়াসমিন, শরীরে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দিলো স্বামী !! ছবি-সংগৃহীত
সুপ্রভাত বগুড়া (গরম খবর): যৌতুকের জন্য চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় চরম নৃশংসতার শিকার হলো গৃহবধূ ইয়সমিন। পেট্রোল ঢেলে স্বামী রাফেল পুড়িয়ে দিয়েছে তাকে। এতেও ক্ষান্ত হয়নি স্বামী রাফেল। ঐ গৃহবধুর পোড়া শরীরেই চালায় নির্যাতন। ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় রাফেলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে ইয়াসমিনের বাবা বাদী হয়ে হত্যা চেষ্টা মামলা করেছেন। জানা যায়, স্বামী স্ত্রীতে বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে “তোর বিষ কমাচ্ছি” বলেই ইয়াসমিনের যোনি ও পায়ুপথসহ পুরো নিম্নাঙ্গে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন স্বামী।
শরীর ভর্তি দাউদাউ করে জ্বলন্ত লেলিহান শিখা। ৭ বছরের সংসার এবং ৪ বছর বয়সী সন্তানের দোহাই দিয়ে অসহায় ইয়াসমিন স্বামীর কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও স্বামী রাফেলের তাতে কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। উপায়ান্তর না দেখে নিজেকে রক্ষার শেষ চেষ্টা হিসেবে ঘর থেকে বের হবার চেষ্টা করেন ইয়াসমিন। কিন্তু হায়, এখানেও স্বামীর বাঁধা। পুড়ে মরতে হবে, বের হওয়া চলবে না। পুড়তে পুড়তে এক পর্যায়ে শরীরে লেপ্টে থাকা পেট্রোল ফুরিয়ে গেলে ইয়াসমিনের শরীরের আগুনও নিভে যায়। কিন্তু নেভেনি রাফেলের নিষ্ঠুরতার আগুন। এবার নতুন খেলায় মাতে সে।
স্ত্রীর পোড়া শরীর থেকে কাবাব করা মুরগির মতো করে চামড়া তুলে নিতে থাকেন দুই হাতের ঘষায়। একেক ঘর্ষণের সাথে খসে পড়তে থাকে পুড়ে যাওয়া চামড়া, সাথে ইয়াসমিনের মরন আর্তচিৎকার। কিন্তু তাতেও রাফেলের নিষ্ঠুরতায় কোনো হেরফের ঘটে না। উল্টো মেয়ের যন্ত্রণার খানিকটা ভাগ বাবা-মাকেও দিতে ফোন করে ইয়াসমিনের বাসায়। গভীর রাতে জামাইয়ের ফোন পেয়ে উৎকন্ঠিত শাশুড়ী ফোন তুলতেই তাকে সোজা জানিয়ে দেন, ‘তোর মেয়েকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছি। এসে নিয়ে যা’।
রাফেলের পাশবিকতা-হিংস্রতার এখানেই শেষ নয়। পৈশাচিকতার চূড়ান্ত উদাহরণ সৃষ্টি করে আর্তচিৎকার করতে থাকা স্ত্রীকে রেখেই পাশের কক্ষে গিয়ে দিব্যি ঘুমিয়েও পড়েন তিনি। আজ বিকেলে পালানোর চেষ্টারত অবস্থায় এই নরপিসাচ আসামি রাফেলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রেপ্তারের বিষয়ে তার কোনো বিকার নেই। নেই নিজের কৃতকর্মের জন্য ন্যূনতম অনুতাপবোধও। উল্টো খোশমেজাজের সঙ্গে সে পুলিশকে জানায়, সে গরুর মাংস দিয়ে ভাত খেতে চায়।
এদিকে, পোড়া শরীর নিয়ে বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন গৃহবধূ ইয়াসমিন। ভালোবেসে বিয়ে করা স্বামীর নিষ্ঠুরতা ও পাশবিকতার আগুনে মৃত্যুপথযাত্রী ইয়াসমিন। দীর্ঘদিন ধরে ইয়াসমিনের বাবা, রাফেলকে যৌতুকের টাকা দিয়ে আসছিলেন। সর্বশেষ টাকা না পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ইয়াসমিনের শরীরে প্রথমে মোটরসাইকেলের পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয় তার স্বামী। একপর্যায়ে পোড়া শরীরের উপরেও চলে নির্যাতন।গৃহবধূর বাবা জানান, বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবি করেছে। পরে আমি তারে ক্যাবল ব্যবসা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছি। এরপরও সে যৌতুকের দাবি করেছে, না দেওয়াতেই এই ঘটনা।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইয়াসমিনের শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। আশংকাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ঢাকায়। এ ঘটনায় রাফেলের বিরুদ্ধে রাঙ্গুনিয়া থানায় ইয়াসমিনের বাবা বাদী হয়ে হত্যা চেষ্টার মামলা করেছেন। চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুল আলম মিল্কি বলেন, তার শরীরে প্রায় ৪০ পারসেন্ট পুড়ে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক, তাই তাকে নিয়ে আমরা পুরোপুরি আশাবাদী হতে পারছি না।