কর্নিয়া কোনো কারণে যেন আঘাতপ্রাপ্ত না হয়

17
কর্নিয়া কোনো কারণে যেন আঘাতপ্রাপ্ত না হয়

চোখের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ অংশের একটি হচ্ছে কর্নিয়া। কর্নিয়া চোখের সামনের ভাগের স্বচ্ছ অংশ। এটি আইরিশ ও পিউপিল ঢেকে রাখে। পিউপিল হলো আইরিশের মাঝখানের ছিদ্র, যা ছানিমুক্ত চোখে কালচে দেখায় এবং ছানিযুক্ত চোখে ছানির পরিপক্বতার মাত্রা অনুসারে ধূসর বা সাদা দেখায়। স্বাভাবিক দৃষ্টির জন্য কর্নিয়া স্বচ্ছ থাকা জরুরি। এতে কোনো রক্তনালি না থাকায় কর্নিয়া স্বচ্ছ হওয়ার অন্যতম কারণ। স্বচ্ছতার কারণে এর ভেতর দিয়ে আলো চোখের ভেতরে প্রবেশ করে। পেছনের রেটিনার ওপর পড়তে পারে। তখন আমরা কোনো বস্তু দেখতে পাই।

কর্নিয়া আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে যেভাবে : যেহেতু চোখ শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তাই সাবধান থাকা জরুরি। তবে যে কোনো কারণেই চোখের কর্নিয়ায় আঘাত লাগতে পারে। নখের আঁচড়, নখ কাটার সময় তা ছিটকে চোখে লাগা, কলম বা পেনসিলের খোঁচা লাগা, ঝালাইয়ের কাজের সময় কোনো ধাতব কণা ছিটকে চোখে লাগা, চোখ প্রচণ্ডভাবে চুলকালে, চোখে কোনো রাসায়নিক পদার্থ পড়া, কৃষিকাজের সময় ধান- গমজাতীয় ফসলের ধারাল অংশের আঘাত লাগা- এমন অসংখ্য কারণে কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।

Pop Ads

ক্ষতিগ্রস্ত বুঝবেন যেভাবে : কর্নিয়ায় আঘাত লাগলে চোখে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে- চোখে ব্যথা, আলোর দিকে তাকাতে না পারা, পানি পড়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে জ্বালাপোড়া করা ইত্যাদি। সমস্যা হলে মনে হতে পারে, চোখের ভেতর কিছু একটা রয়ে গেছে। চোখ বন্ধ করতে বা পলক ফেলতে ব্যথা বেড়ে যায়। কর্নিয়ার আঘাত গুরুতর হলে রোগী চোখ বন্ধ করতে পারবেন না। ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যাবে অস্বস্তি।

করণীয় : রাসায়নিকের কারণে কর্নিয়া আঘাতপ্রাপ্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে অবশ্যই বেশি করে পানির ঝাপটা দিয়ে চোখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। তার পর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। রাসায়নিক বস্তু ছাড়া অন্য যে কোনো পদার্থ চোখে ঢুকে পড়লে দুয়েকবার পানি দিয়ে ধুয়ে দেখতে হবে পদার্থটি বেরিয়ে আসে কিনা। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবশ্যই চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে তার পরামর্শ নিতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক মলম দিয়ে প্যাড ও ব্যান্ডেজের সাহায্যে চোখ বিশ্রাম দিতে হবে। চোখে আঘাত লাগলে নিজে থেকে কোনো ওষুধ ব্যবহার করা মোটেও উচিত নয়। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। চিকিৎসক চোখ পরীক্ষা করে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেবেন।এই রোগের ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা না করালে তা আরও গভীর হয়ে চোখে ছিদ্র হতে পারে। আর এ কারণে রোগী হারাতে পারেন চোখ দিয়ে দেখার ক্ষমতা। সমস্যার কারণে কর্নিয়ায় এক ধরনের অস্বচ্ছতা বা দাগ সৃষ্টি হয়। এ কারণে ভালোভাবে দেখতে পারা বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে।

সতর্কতা : পেশাগত কারণে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে হয়। তবে কাজের সময় অবশ্যই নিরাপত্তামূলক চশমা পরে নিতে হবে। ধুলাবালি বা ক্ষুুদ্র কণা ওড়ে (যেমন- নির্মাণকাজ), এমন স্থানে রোদচশমা পরতে হবে। তবেই কর্নিয়া ভালো ও সুস্থ থাকবে।