কপিরাইট অফিসে শফিক তুহিন মিথ্যা হলফনামা পেশ করেছেন: আসিফ

বাংলাগানের যুবরাজ আসিফ আকবর বামে ও সুরকার শফিক তুহিন ডানে। ছবি-সংগৃহীত

সুপ্রভাত বগুড়া (বিনোদন): দু’বছর আগে ২০১৮ সালের ৪ জুন গীতিকার-কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিন রাজধানীর তেজগাঁও থানায় বাংলা অডিও গানের যুবরাজ খ্যাত আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় কারাগারেও যেতে হয় ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ খ্যাত এই গায়ককে।

তবে আসিফ বলছেন কপিরাইট অফিসে শফিক তুহিন মিথ্যা হলফনামা দিয়েছেন। এদিকে কপিরাইট কর্মকর্তা বলছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে তারা একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারবেন। শফিক তুহিন অভিযোগ আনেন, অন্যের গান ডিজিটালে রূপান্তর করে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করছেন আসিফ।

Pop Ads

এদিকে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে বিষয়টি নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন কর্মকর্তারা। কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা জানান আগামী সপ্তাহের মধ্যে তারা একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারবেন। কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব আইন সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশে প্রথম হয়েছে ২০০০ সালে। যা পরবর্তীতে ২০০৫-এ সংশোধিত হয়।

সাহিত্যকর্ম, চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, শিল্পকর্ম, সাউন্ড রেকর্ডিং ইত্যাদি কপিরাইট করে রাখা হয়। একটি গানের মূল মালিক গীতিকার এবং সুরকার। কপিরাইটের একচ্ছত্র অধিকার তাদের। গীতিকার একাই কপিরাইট করে ফেলতে পারে। কিন্তু সুরকার কপিরাইট পেতে চাইলে গীতিকার এবং শিল্পীকে প্রয়োজন হয়। শিল্পী সেটির রিলেটেড রাইট পেতে পারেন কেবল।

তবে সেক্ষেত্রেও বাকি দু’জনকে আবশ্যক। সঙ্গীতের ক্ষেত্রে এই আইন লঙ্ঘনের শাস্তি সর্বোচ্চ চার বছরের জেল এবং দু লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা। তিনি আরো বলেন, একটি গানের গীতিকবিতা থেকে কম্পোজ করে সঙ্গীতে রূপান্তর করা হলো। সুর করার পর তা অন্যকে দিয়ে গাওয়ানো হলো, তখন গানটির মালিক হলেন সুরকার।

আর গীতিকার শুধু তার অংশের মোরাল রাইটটুকু পাবেন। এই কর্মকর্তা আসিফ আকবর ও শফিক তুহিনের গানগুলো প্রসঙ্গে বলেন, এখন যে গানগুলোর কথা বলছিলাম গীত রচনা করেছিলেন শফিক তুহিন। মিউজিক কম্পোজ করেছিলেন অন্য কেউ। কিছু কিছু গানের মিউজিক কম্পোজিশন শফিক তুহিনও করেছেন। আর কিছু গানের পরিবেশন করেছেন আসিফ আকবর।

শফিক তুহিন আমাদের কাছে গানের গীতিকার হিসেবে আবেদন করেছেন। বিষয়টি নিয়ে কপিরাইট অফিসে একটি শুনানি হয়েছিল। সেখানে আসিফ আকবরও উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরো বলেন, শফিক তুহিন গানের গীতিকার তা আমি অস্বীকার করি না। কিন্তু সমস্যা হয়েছিল তিনি এই গানগুলো নিয়ে এখানে একটি স্টেটমেন্ট দিয়েছেন।

কপিরাইট দাবি করতে গেলে, আমাদের কাছে একটি অঙ্গীকারনামা দিতে হয়। সেই অঙ্গীকারনামায়  তিনি তাতে বলেছেন, কারও সাথে কোনো দ্বন্দ্ব নেই, আদালতে কোনো মামলা নেই। কিন্তু মামলার কারণে কিন্তু জেলে গিয়েছিলেন আসিফ।

যার কারণে শফিক তুহিনকে গীতিকার হিসেবে  আমাদের কপিরাইট দিতে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে আসিফ আকবর বলেছেন, শফিক তুহিন কপিরাইট অফিসে তুহিনের মিথ্যা হলফনামা দিয়েছেন। তিনি তো গানগুলো নিয়ে মামলা করেছেন। আর তার ওই মামলায় আমাকে জেলে যেতে হয়েছে, জেলও খেটেছি। তাহলে মামলা নেই মানে তো তিনি মিথ্যা স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। তাহলে এইটা কিভাবে হবে?

শফিক তুহিন আমাদের বলেছেন, তার সঙ্গে আমার মামলাটি ফৌজদারি মামলা। এই গানগুলো নিয়ে মামলা করিনি।  বিষয়টি আমি এখন যাচাই-বাছাই করছি। বেশকিছু ডকুমেন্টও আমার কাছে জমা দেয়া হয়েছে। আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে আপনাদের সামনে বিষয়টি তুলে ধরতে পারবো। বিষয়টি জানতে শফিক তুহিনের ফোনে কয়েকদফা যোগাযোগ করা হলে তার ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here