প্রেমের স্কুল প্রেমানন্দের

12
প্রেমের স্কুল প্রেমানন্দের

বিনা মূল্যে নিভৃত পল্লীর শিশু, কিশোর-কিশোরীদের মেধা বিকাশ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নৈতিক শিক্ষায় আলোকিত করার এক ব্যতিক্রমী পাঠশালা শিশুকানন গীতা স্কুল। মানুষ এটিকে এখন প্রেমানন্দের প্রেমের স্কুল নামেই চেনে। লিখেছেন মো. আহছান উল্লাহ

প্রেমের টানেই এখানে সবাই আসে। তবে এই প্রেমের স্বাদ একটু ভিন্ন।

Pop Ads

বাল্যবিবাহ, মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা, প্রাকৃতিক উপায়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়, পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতনতা, নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয় এখানে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে শিশুদের মধ্যে স্বাস্থ্যসচেতনতা সৃষ্টি করা হয়।
আনন্দ-বিনোদনের মাধ্যমে পড়ালেখায় মনোযোগী করাসহ নানা লক্ষ্য নিয়ে ২০১৯ সালে স্কুলটির যাত্রা শুরু। প্রথম দিকে শিক্ষার্থী ছিল ১৭ জন।

এখন আছে শতাধিক। শুধু কিশোর-কিশোরীরা নয়, প্রাকৃতিক উপায়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষার কৌশল জানতে বয়স্করাও আসছেন।
সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিন দুই ঘণ্টা পাঠদান করা হয়। বরিশালের গৌরনদী উপজেলার প্রত্যন্ত চাঁদশী গ্রামের বাসিন্দা প্রেমানন্দ ঘরামী।

ব্যক্তি উদ্যোগে প্রথমে ‘শারদাঞ্জলি গীতা নিকেতন’ নামের স্কুলটি চালু করেন নিজ বসতঘরের বারান্দায়। শিক্ষার্থী বেড়ে গেলে উত্তর চাঁদশী গ্রামের ঘরামীবাড়ি সর্বজনীন রাধা-কৃষ্ণ ও কালীমন্দিরের সামনে স্কুলটি পাঠদানের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
এখন স্কুলটির নামে ১০ শতক জমি দান করেছে এলাকাবাসী।
চলতি বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশের ভারতীয় হাইকমিশনের উপহাইকমিশনার ইন্দ্রজিত সাগর স্কুলটি পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। একজন স্থায়ীসহ বর্তমানে স্কুলটিতে মোট তিনজন শিক্ষক রয়েছেন।

স্কুলের শিশু শিক্ষার্থী রওনক ঘরামী, তৃষা মণ্ডল ও তিথি দাস বলে, বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আমরা এখানে যোগব্যায়াম ও নৈতিক শিক্ষা নিতে আসি। শিক্ষক সুজন ঘরামী বলেন, মানসিক ও দৈহিক সুস্থতার জন্য নিয়মিত যোগচর্চাসহ মাদক, সন্ত্রাস নির্মূল ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কোমলমতি শিশুসহ বয়স্কদের মধ্যে সচেতনতামূলক শিক্ষা প্রদান করা হয় এখানে।

স্থানীয় বাসিন্দা জতিন বাড়ৈ বলেন, ‘এটি একটি ভালো উদ্যোগ। অনেক শিশু মোবাইল ফোনে আসক্ত ছিল। এখানে এসে তাদের সেই আসক্তি কেটেছে।’

স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রেমানন্দ ঘরামী বলেন, ‘শৈশব থেকে নৈতিক শিক্ষা পেলে অপরাধমূলক কাজের দিকে ধাবিত হবে না শিশুরা। সেই চিন্তা থেকেই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা। শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য স্কুলটিতে নিয়মিত ইয়োগা ও মেডিটেশন করা হয়। তবে অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে অনেক সময় পাঠদান ব্যাহত হয়। এ জন্য সবার সহযোগিতা দরকার।’