বগুড়ায় পুলিশের ফিল্মি স্টাইলের অভিযানে জীবন ফিরে পেল অন্তঃসত্ত্বা নারী,পাষন্ড স্বামী গ্রেফতার !

বগুড়ায় পুলিশের ফিল্মি স্টাইলের অভিযানে জীবন ফিরে পেল অন্তঃসত্ত্বা নারী,পাষন্ড স্বামী গ্রেফতার ! ছবি-ওহাব

সুপ্রভাত বগুড়া (আবদুল ওহাব ):  বগুড়ার ধুনটে পুলিশের ফিল্মি ষ্টাইলে অভিযানে রহিমা খাতুন নামে এক অন্তঃসত্বা নারী জীবন ফিরে পেয়েছে। হত্যার জন্য উদ্যোত হওয়া পাষন্ড স্বামী পলাশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ১১ আগষ্ট উপজেলার নিমগাছী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে এবং বগুড়া পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রায় বার বছর পূর্বে বগুড়া জেলার ধুনট থানার নিমগাছি ইউনিয়নের মাঝবাড়ী গ্রামের পলাশ (৩৫) এর সাথে পার্শ্ববর্তী নিমগাছি গ্রামের জিল্লুর রহমানের মেয়ে রহিমা(৩০) এর বিয়ে হয়। অভাবের সংসারে প্রায় অশান্তি লেগে থাকত। এর মাঝেই আট বছর পূর্বে তাদের ঘরে জন্ম নেয় সন্তান। নাম নিরব।

Pop Ads

অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা আনার জন্য রহিমা তিন বছর আগে সৌদি আরবে যায় এবং সেখানে দুই বছর কাজ করে গত বছর দেশে ফিরে আসে। দেশে ফিরে রহিমা পলাশকে গরু ব্যবসার জন্য টাকা দেয়। কিন্তু অলস পলাশ টাকা পয়সা নষ্ট করলে সংসারে অশান্তি নেমে আসে। ইতিমধ্যে রহিমার পেটে আবারো সন্তান আসে।বর্তমানে সে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

এমতাবস্থায় সংসারে অশান্তি তীব্র হলে রহিমা স্বামীর বাড়ী ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে পলাশ ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। সে তার স্ত্রীর উপর প্রতিশোধ নিতে চায়। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বেলা ১২ টার দিকে   ছেলে নিরব বাইরে গেলে আচমকা সে তার স্ত্রীকে ঘরে রেখে দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়। এরপর স্ত্রীকে খাটে  শুইয়ে  গলায় ধারালো ছুরি ধরে।

স্ত্রী কান্নাকাটি শুরু করলে বাইরের লোকজন জানতে পেরে বাড়ির চারিদিক ঘিরে ফেলে। তারা পলাশকে বুঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পলাশ কারো কথা না শুনে বার বার বলতে থাকে যে ”তোমরা চলে যাও। আমি রহিমাকে জবাই করে নিজে আত্মহত্যা করব”।

স্থানীয় লোকজন  ধুনট থানা পুলিশকে অবহিত করলে এসআই প্রদীপ কুমারের নেতৃত্বে ধুনট থানা থেকে পুলিশের একটি টিম যায় কিন্তু পলাশ এসআই প্রদীপের কোন কথায় কর্ণপাত না করে রহিমার গলায় ছুরি ঠেকিয়ে সবাইকে চলে যেতে বলে।

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃপা সিন্ধু বালা বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেরপুর সার্কেল মোঃ গাজিউর রহমানকে জানালে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা করেন এবং বিষয়টি অনতিবিলম্বে পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম স্যারকে জানালে তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(অপরাধ) জনাব মোঃ আব্দুর রশিদকেও দ্রুত ঘটনাস্থলে যেতে বলেন।

অতিঃ পুলিশ সুপার(অপরাধ), অতিঃ পুলিশ সুপার শেরপুর সার্কেল এবং ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছে  বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করতে থাকে। পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশনায় তারা পলাশের সাথে বিভিন্নভাবে কথা বলে তাকে ব্যস্ত রাখে এবং ঘরের অন্যদিক দিয়ে সিঁধ কাটে।

পরে রাত আটটার দিকে এক সাথে সিঁধ কাটা অংশ দিয়ে এবং দরজা ভেঙ্গে ফিল্মি স্টাইলে ঘরে ঢুকে পলাশকে ছুরিসহ আটক করা হয় এবং তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে উদ্ধার করা হয়। এভাবে প্রায় ৩ ঘন্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে রক্ষা পায় রহিমা ও পলাশের জীবন। তবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পলাশকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here