বগুড়ায় ১২শ কোটির টাকার ভুয়া চেক ও নিয়োগপত্র জব্দ, প্রতারক ডিজে শাকিলসহ আটক ৩!

বগুড়ায় ১২শ কোটির টাকার ভুয়া চেক ও নিয়োগপত্র জব্দ, প্রতারক ডিজে শাকিলসহ আটক ৩! ছবি-হেলাল
স্টাফ রিপোর্টার : সুইস ব্যাংকসহ বিশ্বের অন্তত তিনশ’ ব্যাংক থেকে লোন, এমনকি সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকা পাইয়ে দেয়া ছাড়াও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি প্রদানের ফাঁদ পেতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে সিদ্ধহস্ত এক প্রতারক ডি জে শাকিলসিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় নিজ গ্রামে বসেই তৈরী করতেন তিনি বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর করা জরুরি কাগজপত্র, এমনকি চেকের পাতাও।
প্রতারণার স্বীকার বগুড়ার দুই যুবকের করা মামলায় ইন্টারন্যাশনাল লোন সার্ভিস কোম্পানি নামের প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ডি জে শাকিল ও তার দু্ই সহযোগিকে ১২শ’ ১ কোটি টাকার চেকসহ গ্রেপ্তার করে বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতাররা হলেন, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও তাড়াশের খাঁ পাড়া এলাকার কাজী গোলাম মোস্তফার ছেলে রাব্বী শাকিল ওরফে ডিজে শাকিল (৩২), কুসুমদ্বী এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে আইটি এক্সপার্ট হুমায়ূন কবির মিলন (২৮) এবং নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার গাড়ীক্ষেত্র এলাকায় সাইদুর রহমানের ছেলে হারুন রশিদ ওরফে সাইফুল ইসলাম (২৬)।

 

পুলিশ জানায়, বুধবার বিকেলে তাড়াশ উপজেলা পরিষদ গেট সংলগ্ন রিশান গ্রুপের প্রধান কার্যালয় থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রতারক চক্রের এ দলটি দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া অনলাইন পেজ চালিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ও লোন সার্ভিস নামে একটি অনলাইন পেজে দেশে-বিদেশে ঋণ করে দেওয়ার ভুয়া বিজ্ঞাপন প্রচার করে তারা। বিজ্ঞাপন দেখে বগুড়া সদর উপজেলার মালতিনগর এলাকার বাসিন্দা ও আমায়রা এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী আমানতউল্লাহ তারেক ও অভি এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. আশিক দৌলতানা নামের দুই উদ্যোক্তা তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। তারা ব্যাংক ঋণ নেওয়ার জন্য ওই প্রতারক চক্রের শাকিলের সাথে কথা বলেন।

Pop Ads

কথাবার্তায় শাকিল ঋণের ৫ শতাংশ কমিশন হিসেবে দাবি করেন এবং ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ১৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা নেয় শাকিল। এরপর তাদের বগুড়া যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সাড়ে চার কোটি টাকার দুটি চেক দেন। ওই চেক ব্যাংকে জমা দেওয়ার পর তারা জানতে পারেন চেকগুলো ভুয়া এবং তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। প্রতারিত ব্যক্তিরা এ বিষয়ে বগুড়া ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ করেন।

এর ভিত্তিতেই ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, প্রতারক চক্রের ওই তিন সদস্যকে গ্রেফতারের সময় তাদের অফিসের কম্পিউটার, কয়েকটি ফাইল এবং ১২ শ’ ১ কোটি ৭২ লাখ ১০ হাজার টাকার ভুয়া চেক জব্দ করা হয়। এ প্রতারক চক্রটি তিন শতাধিক ব্যাংক লোন দেওয়ার নামে বিভিন্ন অনলাইনে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি ছাড়ে।

তারা সামরিক বাহিনী, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার নিয়োগ পত্রসহ আইডি কার্ডের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করতেন। তিনি বলেন, প্রতারণার কাজ করতে তারা ২২ টি নিউজ পেপার, ১২টি ফেসবুক আইডি এবং ৩৫টি ফেসবুক পেজ তৈরি করেছে। তাদের আটকের কথা জানতে পেরে প্রতারিত হওয়া প্রায় ২০ জনের মতো সাধারণ মানুষের ফোন কল আসে। আজ বৃহস্পতিবার এদেরকে আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানা গেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here