বিএনপিকে লবিস্ট নিয়োগের টাকার ব্যাখ্যা দিতে হবে

বিএনপিকে লবিস্ট নিয়োগের টাকার ব্যাখ্যা দিতে হবে

লবিস্ট নিয়োগের টাকা কোথা থেকে পেয়েছে বিএনপি তার ব্যাখ্যা দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনা ও সমাপনী বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়া সন্ত্রাস দমনে সফল র‍্যাব কর্মকর্তাদের ওপরই ক্ষুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র। আর এর পেছনে দেশের কিছু ব্যক্তির যোগসাজস রয়েছে বলে সংসদে জানান তিনি।

বিএনপির লবিস্ট নিয়োগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে শুধু র‍্যাব নয়, দেশবিরোধী অপপ্রচারও চালাচ্ছে দলটি। দেশ সব থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, এটি যাদের পছন্দ নয় তারাই শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের সর্বনাশ করছে। এত বিপুল অর্থ কোথায় থেকে আসল, বিদেশে খরচ হলো- এর জবাব ও ব্যাখ্যা বিএনপিকে দিতে হবে। আর দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে লবিস্ট নিয়োগের খরচের পাই পাই হিসাব নেয়া হবে।

Pop Ads

তিনি বলেন, এদের কোনো দেশপ্রেম নেই, দেশের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তাই দেশের অগ্রযাত্রাকে বন্ধ করতে, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে নানা চক্রান্ত করছে। বিএনপি দেশকে ধ্বংস করা, লুটপাট করা, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস সৃষ্টি করা ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। কিন্তু দেশের জনগণের প্রতি আমার আস্থা ও বিশ্বাস আছে যে, কোনো অসত্য অপ্রপ্রচার ও মিথ্যাচারে দেশের জনগণ বিভ্রান্ত হবে না। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই।

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেছে উল্লেখ করে, এর টাকার উৎস খুঁজে বের করা হবে বলেও জানান তিনি। সম্প্রতি র‍্যাবের সাবেক-বর্তমান ৭ কর্মকর্তাদের ওপর আসে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। সংসদের ১৬তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এর সমালোচানা করেন প্রধানমন্ত্রী।

আর এজন্য শুধু মার্কিন প্রশাসন নয়, দেশেরই কিছু মানুষের চক্রান্ত রয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, হলি আর্টিজন হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্য করেন, পরে তা প্রত্যাহারও করেন।

নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে দেশের জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষা করা, কেড়ে নেয়া নয়। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন তার বড় প্রমাণ। বিএনপি এই নির্বাচনেও নানা খেলার চেষ্টা করেছে, কিন্তু পারেনি।

বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষাসহ সব কিছু আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল। আওয়ামী লীগের আমলেই দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত থাকে।

এছাড়া, নির্বাচন কমিশন আইন গঠনের মধ্য দিয়ে দেশবাসীর ভোটাধিকার আরো সুরক্ষিত করা হয়েছে বলেও জানান সংসদ নেতা। নির্বাচন কমিশন আইন গঠন আইন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৭ সালে মহামান্য রাষ্ট্রপতি যখন আমাদের সকলকে ডেকেছিলেন তখনই তিনি বলেছিলেন, আমাদেরও প্রস্তাব ছিল। অনেক দিন থেকে মোটামুটি প্রস্তুত করে রেখেছিলাম।

গত ১৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসনিা বলেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যখন ডায়ালগ করতে গেলাম, তখন তিনি বললেন, বিলটা তাড়াতাড়ি পাস করে দিলে? তিনি চান এই বিলের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন এবং প্রধান কমিশনার এবং কমিশনাররা নির্বাচিত হোক।

আমরা পার্লামেন্টে নিয়ে আসলাম। কিন্তু প্রস্তুতি তো আমাদের বহু আগে থেকে ছিল। অন্য কোনো দল করেনি। আওয়ামী লীগ আবার করল। করে জনগণের ভোট সুরক্ষিত হল এবং নির্বাচনের আরেকটা ধাপ আমরা এগিয়ে গেলাম। গণতন্ত্রকে আরও আমরা শক্তিশালী করলাম। জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।