মৌমাছির প্রতি ভালোবাসার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ক্ষেতলালের আল আমিন

384

এম রাসেল আহমেদ, জয়পুরহাট : মৌমাছির প্রতি ভালোবাসার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার রসুলপুর গ্রামের আলহাজ্ব আল আমিন। তিনি পেশায় একজন কৃষক। ৪০ বছর ধরে তার বাসায় সব সময় প্রায় ডজন খানের মৌমাছির চাক দেখতে পাওয়া যায়। তাঁর বাসা ও বাগানে এসব মৌমাছি লালন করেন বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরও দাবি করেন শুধু মাত্র তার লাগানো গাছেই বেছে বেছে মৌমাছি বাসা বাধে।তার ধারনা মৌমাছি সব গাছে লাগেনা । তাই তিনি এসব মৌমাছিদের যত্ন নেন। তিনি বলেন এই মৌমাছি গুলো আমার পরিবারের অংশ বিশেষ। প্রতি বছর নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত এসর মৌমাছির দল বেশি লক্ষ্য করা যায় তার বাসায়। এসব মৌমাছি আমাদের পরিবারের কোন ক্ষতি করেনা।

মৌমাছিদের যত্ন নেওয়ার ফলে তিনি কোন মৌচাক কাটেন না। কেন কাটেন না তার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন মৌমাছি অনেক পরিশ্রম করে মধু সংগ্রহ করে তাদের আহার মিটানোর জন্য , তাই আমি সেই মধু কেটে নিয়ে তাদের আহার বন্ধ করতে পারিনা। তাছাড়া এই মৌচাক কেটে মধু সংগ্রহ করার সময় অনেক মৌমাছি মারা যায় যা আমার মেনে নিতে কষ্ট হয়, আমি সহ্য করতে পারিনা। আমাদের যেমন জীবন আছে মৌমাছির ও তেমন জীবন আছে। আমাদের মধুর চাহিদা মেটাতে আমি নিরিহ মৌমাছিদের মারতে পারিনা।

Pop Ads

তার কথায় রসুলপুর গ্রামের অনেক মানুষ মৌচাক কাটেনা। রসুলপুর পাঁচপীর নামক দরগায় এখনো প্রায় ডজন খানেক মৌমাছির চাক লক্ষ্য করা যায়। এসব মৌমাছির চাকে মধু ভরপুর লোভ সামলানো দায় তবুও আল আমিন হাজির জন্য কেউ মৌমাছির চাক কাটেনা।মৌমাছিরা মধু খেয়ে চলেয়া মনের আনন্দে। যখন তিনি দেখতে পান কেউ মৌমাছির চাক কেটে মধু সংগ্রহ করছে তখন তিনি অনেক কান্নাকাটি করেন। তার মনে মৌমাছির প্রতি অনেক মায়া। তার প্রতিবেশিদের সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি এসব মৌচাক পাহাড়া দেন যেন মৌমাছিদের কোন সমস্যা না হয়। প্রতিদিন অনেক মানুষ তার বাসার কার্নিশে ঝুলানো মৌমাছির চাক দেখতে ভীর করেন।

তার সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি শুধু মৌমাছির প্রতি মায়া দেখান না দেখান গাছের ও প্রতি মায়া। আক্কেলপুর- ক্ষেতলাল রাস্তার দু পাশে লাগিয়েছের প্রায় ৭-৮ হাজার তাল গাছ যেগুলো রাস্তার শোভা বাড়াচ্ছে। রাস্তা প্রসস্তরণ কাজে তার বহুসংখ্যক তালগাছ কাটা পড়লে তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। তাছাড়া এলাকার ঐতিহাসিক আছরাঙ্গা দীঘি এলাকায় লাগিয়েছেন সারি সারি তালগাছ।তুলসীগঙ্গা নদীর দু পাশে হাজার হাজার গাছ লাগানোর পর নদী সংস্কার করায় সেইসব গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন তিনি। এলাকায় তিনি অনেক সম্মানিত মানুষ লোকজন তাকে ভালবেসে হাজি সাহেব বলে ডাকেন।

সুপ্রভাত বগুড়া / এম রাসেল আহমেদ