যেভাবে করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে আপনার ব্যবহৃত প্রিয় মোবাইল ফোনটিও !

সাবধান! সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী :

সুপ্রভাতা বগুড়া (জীবন-জীবীকা): আধুনিক জীবনে প্রতিদিন ব্যবহৃত যন্ত্রের মধ্যে মোবাইল ফোন অন্যতম একটি। বর্তমানে পৃথিবীতে বিলিয়ন বিলিয়ন মোবাইল ব্যবহার হচ্ছে। মোবাইল ফোনে বিভিন্ন রকমের জীবানু সংক্রমিত হয়ে থাকে। আর এসব জীবাণু থেকে হতে পারে বিভিন্ন রোগ। 

মোবাইল ফোনগুলি ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসগুলির মতো সংক্রামক রোগজীবাণু বহন করে, এ বিষয়ে একটি গবেষণা চালানো হয়। গবেষকরা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে মোবাইল ফোনগুলো সম্ভবত “ট্রোজান হর্স” হতে পারে যা মহামারীর সময় সংক্রমণের কামউনিটি ট্রান্সমিশনে সহায়তা করে। 

Pop Ads

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ক্ষতিকর জীবানুগুলো স্থানান্তরিত হয় যা মানুষের স্বাস্থের জন্য একটি হুমকি। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রোগজীবাণুগুলো সপাতাল, কর্মক্ষেত্র গণপরিবহণ, জাহাজ এমনকি বিমানেও ছড়াতে পারে। বর্তমানে মোবাইল ফোনগুলি বায়োসিকিউরিটির দৃষ্টিকোণ থেকে অনেকাংশেই অবহেলিত, ফলে এগুলি ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং কোভিড-১৯ এর মতো ভাইরাসের সংক্রমণে সহায়তা করবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

গবেষণা কি দেখায়: ২০০৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৪টি দেশে পরিচালিত সমীক্ষা থেকে গবেষকদের মানদণ্ডগুলি পূরণ করে এমন ৫৬টি সমীক্ষা পর্যালোচনা করা হয়। গবেষণায় ফোনে পাওয়া ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকের দিকে নজর দেওয়া হয়েছিল। 

সামগ্রিকভাবে সমীক্ষায় দেখা গেছে, গড় ৬৮% মোবাইল ফোন দূষিত ছিল। এই সংখ্যাটি আসল মানের চেয়ে কম হতে পারে, কারণ বেশিরভাগ গবেষণার লক্ষ্য ছিল কেবলমাত্র ব্যাকটেরিয়া এবং অনেকক্ষেত্রে কেবলমাত্র নির্দিষ্ট ধরণের ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করা।

গবেষণাটি থেকে যা বোঝা যায়: দূষিত মোবাইল ফোনগুলি সত্যিকারের জৈব সুরক্ষা ঝুঁকি তৈরি করে, জীবাণুগুলিকে সহজেই সীমান্ত অতিক্রম করতে দেয়। ভাইরাসগুলি কয়েকঘন্টা থেকে কয়েক সপ্তাহ ধরে মোবাইলে থাকতে পারে। 

যদি কোনও ব্যক্তি কোভিড-১৯ এ সংক্রামিত হয় তবে খুব সম্ভবত তাদের মোবাইল ফোনটি দূষিত হবে। এরপরে ভাইরাসটি সরাসরি বা অপ্রত্যক্ষ যোগাযোগের মাধ্যমে ফোন থেকে অন্য ব্যক্তির কাছে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফোনগুলি কেন দূষিত হয়: ফোনগুলি রোগের প্রায় আদর্শ বাহক। আমরা ফোনে নিয়মিত কথা বলি। এ সময় মুখ থেকে নির্গত ছোট ছোট জলকনার মাধ্যমে জীবাণু জমা হয়। 

খাওয়ার সময় প্রায়ই মোবাইল আমাদের সাথে থাকে। এতে জীবানু ছড়াতে পারে। বহু লোক এগুলি বাথরুমে এবং টয়লেটে ব্যবহার করে থাকেন, ফলে মোবাইল ফোনগুলো জীবানুর সংস্পর্শে আসে। 

আর আমরা সেগুলো সর্বত্রই বহন করি: বাড়িতে, কর্মক্ষেত্রে, কেনাকাটার সময়, ছুটির দিনে। মোবাইল খুব কমই পরিষ্কার বা জীবাণুমুক্ত করা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, প্রায় তিন-চতুর্থাংশ লোক কখনও তাদের ফোন পরিষ্কার করেন না।

আপনার ফোনটি পরিস্কার রাখুন: বিশেষজ্ঞদের মতে, হাতের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি জীবাণু থাকে মোবাইল ফোনে। তাছাড়া করোনাভাইরাস আক্রমণ করারও অন্যতম মাধ্যম হলো ব্যবহৃত মোবাইল ফোন। তাই প্রতিদিন মোবাইল ফোন পরিষ্কার করতে হবে। মানুষ প্রতিদিন গড়ে ৩ ঘন্টার জন্য মোবাইল স্পর্শ করে। 

তবে অতিরিক্ত ব্যবহারকারীরা ৫ হাজারেরও বেশি বার ফোন স্পর্শ করে। জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে জনসচতেনতা প্রচারণা, মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য টাচ স্ক্রিন ডিভাইসগুলি জীবাণুমুক্ত রাখতে সকলকে উৎসাহিত করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়। এটি ছাড়া বিশ্বব্যাপী হাতধোঁয়ার জন্য জনস্বাস্থ্য অভিযান কম কার্যকর হতে পারে। 

মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য টাচ স্ক্রিন ডিভাইসগুলি প্রতদিনি ৭০ শতাংশ আইসোপ্রপেল অ্যালকোহল স্প্রে বা অন্যান্য জীবানুমুক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে নির্মুল করা উচিত। এই বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়াগুলো বিশেষত সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োগ করা উচিত। 

যেমন- খাবারের দোকান, স্কুল, বার, ক্যাফে, স্বাস্থ্যসেবা, জাহাজ, এয়ারলাইন এবং বিমানবন্দরগুলোতে। মোবাইল সব সময় জীবানুমুক্ত রাখাতে হবে, তবে বিশেষত কোভিড-১৯ মহামারীর মতো মারাত্মক রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় এটির গুরুত্ব অপরিহার্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here