শাজাহানপুরে হরি’র চাল হরিলুট !

শাজাহানপুরে হরি’র চাল হরিলুট ! ছবি-ওহাব

সুপ্রভাত বগুড়া (আবদুল ওহাব শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি): হরি-হরি ডাকে আসন্ন দূর্গাপূজা সার্বজনীন ও আনন্দ উৎসবে পালন করার লক্ষ্যে বগুড়ার শাজাহানপুরে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত জিআর চাল নিয়ে চালবাজীতে অতি অল্পমুলে ডিও লেটার বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে পূজা ব্যবস্থাপনা কমিটি। ফলে এবারের পূজার ব্যায় বহন করা তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। সিন্ডিকেটটি অফিস নিয়ন্ত্রন করে বাজারের চেয়ে নামাত্র মুল্য দিয়ে এসব ডিও লেটার হাতিয়ে নিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ২০ অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এসব তথ্য জানান। তারা বলেন, এবারে দুর্গাপূজা আনন্দ উৎসবে পালন করার লক্ষ্যে সরকার শাজাহানপুর উপজেলায় প্রতিটি দূর্গাপূজা মন্ডপের সভাপতি সাধারন সম্পাদকের অনুকুলে অর্ধ মেট্রিক টন জিআর চাল বরাদ্দ দেয় এবং সোমবার বিকেলে এসব চাল বিতরণ করা হয়।

Pop Ads

শাজাহানপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সুত্রে জানাযায়, উপজেলায় ৫৩টি পুজা মন্ডপের জন্য সাড়ে ২৬ টন জিআর চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। আর সরকারী হিসেব ও বর্তমান পাইকারী বাজার মুল্যে একটন চালের দাম ৪৪ হাজার ৭ শত ৬৬ টাকা। আর অর্ধ মেট্রিক টন চালের মুল্য বাইশ হাজার টাকারও বেশী। আর পূজা মন্ডপগুলোর সভাপতি সাধারন সম্পাদকগণ জানান, বরাদ্দকৃত প্রতি অর্ধটন চালের জন্য পনেরো হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। হিসেব অনুযায়ী প্রতিটন চালের মুল্য ৪৪ হাজার টাকা হলে ২৬ টন চালের মুল্য দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ টাকা। অথচ এর বিপরীতে দেওয়া হয়েছে তিন লক্ষ নব্বই হাজার টাকা।

এভাবে সাত লক্ষাধিক টাকা হরিলুট করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। বঞ্চিত করা হয়েছে দরিদ্র হিন্দু সম্প্রদায়কে।
এ প্রসংেগে জানতে চাইলে উপজেলার গোহাইল পালপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের সভাপতি শ্রী সুদেব চন্দ্র জানান, পূজা উ্দযাপনের জন্য তার মন্ডপে অর্ধ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দকৃত চালের জন্য পনেরো হাজার তিন শ টাকা দেওয়া হয়েছে এবং বলেছে যা পেলে এটাই বেশী। এখানে দেরী করোনা টাকা নিয়ে চলে যাও। আশেকপুর কালীবাড়ী সার্বজনীন দুর্গাপুজা মন্ডপের সভাপতি শ্রী তাপস চন্দ্র বলেন, জিআর বরাদ্দের চালের রশিদ হাতে দেয়নি। শুধু বললো, পনেরো হাজার পাচশ টাকা নিয়ে যাও। এখানে দেরী করোনা।

কিন্তু এ টাকায় তো আনন্দে পূজা করা সম্ভব হবেনা। সুজাবাদ দহ পাড়া সার্বজনীন দেব মন্দিরের সভাপতি শ্রী পরিমল চন্দ্র জানান, বরাদ্দের চাল অন্য কেউ ক্রয় করার সুযোগ না পাওয়ায় এ টাকা নেওয়া ছাড়া কোন উপায় নাই। এভাবে নামমাত্র মুল্যে চালগুলো নিয়েছে। তবে কেবা কারা এভাবে চালগুলো সিন্ডিকেট করে ক্রয় করেছে এ প্রসংগে তারা কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে বলেন, কারা কিনতে পারে সবই তো জানেন। কার কথা বলবো। তাদেরকে সবাই চিনে। নাম বললে অসুবিধা হতে পারে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন হিন্দু ধর্মাবলম্বিরা জানান, ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীরা এভাবে নামমাত্র দাম দিয়ে চালের বিপরীতে ডিও লেটার ক্রয় করে নিয়ে নিয়েছে। এবিষয়ে বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, র্কাযালয় থেকে সিন্ডিকেট করে ডিও ক্রয় বিক্রয় অন্যায়। তবে বিষয়ট খতিয়ে দেখা হবে। আর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, বরাদ্দকৃত ডিওগুলো সঠিকভাবে বিতরণ করাই তাদের কাজ। বাহিরে কেকি করলো সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের না।