আদমদীঘিতে করোনা ঝুঁকির মধ্যে সেবা দিচ্ছেন পল্লী ডাক্তাররা

সুপ্রভাত বগুড়া (শিমুল হাসান , আদমদীঘি, বগুড়া প্রতিনিধি): করোনা ভাইরাস আতঙ্কের কারণে সারা দেশে যখন হাসপাতাল, প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক যেখানে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে চাইছে না, কেউ আবার স্বল্পপরিসরে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। আবার কোন কোন চিকিৎসদের হাসপাতালে বা  ক্লিনিক গেলে খুঁজে পাওয়া যায় না। 

ঠিক সেই সময়ে বগুড়ার আদমদীঘিতে প্রায় ১৫০ জন পল্লী চিকিৎসক (আরএমপি) ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত প্রত্যন্ত গ্রামে ঘুরে অথবা তাদের নিজস্ব চেম্বারে বসে অসুস্থ্য রোগীদের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। যার ফলে কিছুটা হলেও সাধারন মানুষজন চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। করোনা প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) কোন কোন চিকিৎক নিজ উদ্যোগে কিনেছেন আবার কেউ পিপিই ছাড়াই তারা রোগীদের সেবা দিয়ে আসছেন।

Pop Ads

এতে করে চিকিৎসক, রোগীসহ সাধারণ মানুষ করোনা ঝুঁকি থাকলেও তো চিকিৎসা সেবা অব্যহত রয়েছে। সরেজমিনে আদমদীঘি উপজেলার সদর, সান্তাহার পৌর শহর, সান্তাহার ইউনিয়নের, ছাতিয়ানগ্রাম, চাঁপাপুর, কুন্দগ্রাম, নশরৎপুরে বিভিন্ন গ্রামে পল্লী চিকিৎসকদের চেম্বারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি চিকিৎসকের চেম্বারে ৮-১০ জন রোগী রয়েছেন চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য।

তারা সরাসরি চেম্বার কক্ষেই বসেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। মুখে মাস্ক পড়ে আর সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দুরে বসে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শতকরা ৯০ ভাগ রোগী সাধারন জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশিসহ লক্ষণ রয়েছে। করোনা আতঙ্কে হাসপাতালের যাওয়ার রোগীর সংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে বেশির ভাগ রোগীই চিকিৎসা নিতে ভিড় করছেন পল্লী চিকিৎসকের দ্বারে। সারা দেশে কার্যত লকডাউনে থাকায় ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের লোকজন এখন গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন।

এ কারণে পল্লী চিকিৎসকদের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এ দিকে করোনা মধ্যেও আদমদীঘি উপজেলা ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপেক্স হাসপাতালে ডাক্তাররা জরুরী রোগীদের সেবা দিতে দেখা যাচ্ছে। তবে সারাদেশে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ এ ধরনের গুজবের কারনে এখন পল্লী চিকিৎসকগণ কাছে প্রতিনিয়ত ভীড় করছে সাধারন রোগীরা।

করোনাকে মোকাবেলা করে ব্যক্তি সুরক্ষা পিপিই, গাভস, মাস্ক এবং অন্য কোনো সাপোর্ট ছাড়াই তারা প্রতিনিয়ত রোগীদের সেবা দিয়ে চলছেন নিরলস ভাবে। সেবা নিতে আসা দমদমা গ্রামে বাসিন্দা সরেফুল ইসলাম বলেন, আমার নাতির কয়েক দিন ধরে জ্বর হয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে নাকি ডাক্তাররা চিকিৎসা দিচ্ছে না  তাই বাধ্য হয়ে পল্লী চিকিৎসক কে দেখালাম।

আমার নাতির জ্বর ছিল পল্লী চিকিৎসক দেখে মেডিসিন দেয়ার পর এখন শরীর ভালো আছে। সরকারি ডাক্তারের মতো যদি পল্লী চিকিৎক আমার নাতি কে না দেখত তাহলে যে কি উপায় হতো। এ ব্যাপারে সান্তাহার হার্ভে মোড়ের পল্লী চিকিৎসক মো. মাজেদুর রহমান বলেন, প্রতিদিন আমি ৫০-৬০ জন রোগীর সেবা দিয়ে থাকি।

এখন হাসপাতাল গুলোতে রোগী না যাওয়ার ফলে চাপ বেশি আমাদের কাছে। সর্তকতার সঙ্গে ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিয়েই রোগীদের সেবা দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের দাবি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সুরক্ষায় সরকারি ডাক্তারের মতো আমাদেরও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) দেয়া হোক।

সান্তাহার নাগরিক কমিটি অন্যতম নেতা সহকারী অধ্যাপক রবিউল ইসলাম রবিন বলেন, আদমদীঘি উপজেলার প্রায় ১৫০ জন পল্লী চিকিৎসক রয়েছেন। তারা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছেন। জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে করোনা মোকাবিলায় এ সব পল্লী চিকিৎকদের সুরক্ষা সরঞ্জামের সামগ্রী দেওয়া জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আর্কষন করছি।    

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here