আমাজন জঙ্গলে বিশাল এক প্রাচীন শহর খুঁজে পাওয়া গেছে। কয়েক হাজার বছর ধরে ঘন গাছগাছালির আড়ালে শহরটি লুকিয়ে রয়েছে। বলা হচ্ছে, শহরটি খুঁজে পাওয়ায় আমাজন অঞ্চলের মানুষের ইতিহাস সম্পর্কে বিদ্যমান ধারণা অনেকখানি বদলে যাবে।
সংশ্লিষ্ট গবেষকরা বলেছেন, সড়ক ও খালের মাধ্যমে দূরবর্তী এলাকার সঙ্গে প্রাচীন শহরটির যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল।
আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে মানুষজন শহরটি ছেড়ে চলে গিয়েছিল বলে মাটি পরীক্ষা করে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের তদন্ত পরিচালক অধ্যাপক স্টিফেন রোস্টেনের নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণায় শহরটি খুঁজে পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ‘এটি আমাজনে আমাদের জানা অন্য যেকোনো স্থানের চেয়ে পুরনো আবাসস্থল। সভ্যতার ব্যাপারে আমাদের ইউরোপীয় যে দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, এই আবিষ্কারের কারণে সেই ধারণা পাল্টাতে হতে পারে।
আমাজনের সংস্কৃতিকে আমরা যেভাবে বিবেচনা করি, এই আবিষ্কার তা পরিবর্তনের তাগিদ দিচ্ছে।’
প্রতœতাত্ত্বিকরা বলছেন, বনের মধ্যে পাওয়া শহরটি আড়াই হাজার বছর আগে গড়ে উঠেছিল। সেখানে এক হাজার বছরের বেশি সময় ধরে জনবসতি ছিল।
৩০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় সমীক্ষার জন্য লেজার সেন্সর ব্যবহার করে মাটির ঢিবির ওপর আবাসিক এবং অনুষ্ঠানের জন্য নির্মিত ভবনের অস্তিত্ব পেয়েছেন প্রতœতাত্ত্বিকরা।
সেখানে ৬৬ ফুট দীর্ঘ, ৩৩ ফুট প্রশস্ত এবং দুই-তিন মিটার পুরু ছয় হাজারের বেশি আয়তক্ষেত্র শনাক্ত করা হয়েছে। সেখানে ৪৫৯ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১৩১ ফুট প্রস্থের একটি ভিত এবং ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কপথও আবিষ্কার হয়েছে।
প্রতœতাত্ত্বিকদের ধারণা, স্থানীয় দুটি খাল থেকে সুপেয় পানি পেত শহরের বাসিন্দারা। শহরের প্রবেশপথে বড় ধরনের খাদ চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের ধারণা, নিকটবর্তী অন্য জনগোষ্ঠীকে হুমকি বিবেচনা করে তাদের রুখতে ওই গর্ত করা হয়েছিল।