জেনে নিন নামাজে আত্তাহিয়াতু পড়ার গুরুত্ব, আঙ্গুল নাড়ানোর কারণ ও পেছনের ইতিহাস

জেনে নিন নামাজে আত্তাহিয়াতু পড়া, আঙ্গুল নাড়ানোর কারণ ও পেছনের ইতিহাস।-সুপ্রভাত বগুড়া
সুপ্রভাত বগুড়া (ধর্ম ও জীবন): ইসলামের পাঁচটি ফরজ স্তম্বের মধ্যে নামজ একটি। কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার কাছে নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। যে ব্যক্তি নামাজের হিসাব দিতে সক্ষম হবে সেই সফলকাম।

আল্লাহ তাআলা মুমিনের জন্য প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়াকে ফরজ করেছেন। নামাজে বৈঠক বসা ফরজ কাজ। আর বৈঠকে তাশাহহুদ পড়া ওয়াজিব বা আবশ্যক। প্রতি দুই দুই রাকাআত পর পর বৈঠকে বসতে হয়।

নামাজে বৈঠকে বসে তাশাহহুদ পড়তে হয়: التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

Pop Ads

আত্তাহিয়াতু আসলেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া। এই দোয়াটার পিছনের গল্পটা জানার পর প্রত্যেকের হৃদয়টা কোমল হবে নিশ্চিয় । তাহলে জেনে নেই এই দোয়ার ইতিহাস।

আত্তাহিয়াতু আসলে, আল্লাহর সাথে আমাদের মহানবী (সঃ) কথোপকথন একটা অংশ। যা আমাদের মহানবী (সঃ) ইসরাউল মিরাজ যাত্রার সময় এই কথোপকথন হয়েছিলো মহান আল্লাহর সাথে!
মহানবী (সঃ) যখন আল্লাহর সাথে কথোপকথন শুরু করেন তখন আল্লাহকে আসসালামু আলাইকুম বলেননি!
তাহলে কি বলেছিল??
কারন, আমরা মহান আল্লাহকে বলতে পারব না, আল্লাহ আপনার উপর শান্তি নাজিল হউক! কারন, আল্লাহ নিজেই একমাত্র পৃথিবীর সকল শান্তির এবং রহমতের উৎপত্তিস্থল!
মহানবী (সঃ) আল্লাহকে উদেশ্য করে বলেছিলেনঃ আত্তাহিইয়া-তু লিল্লা-হি ওয়াছ ছালাওয়া – তু ওয়াত্ ত্বাইয়িবা -তু অর্থঃ যাবতীয় সম্মান, যাবতীয় উপাসনা ও যাবতীয় পবিত্র বিষয় আল্লাহর জন্য।
উওরে মহান আল্লাহ বলেনঃ আসসালা-মু’আলায়কা আইয়ুহান্নাবিয়ু ওয়া রহমাতুল্লা-হি ওয়া-বারাকাতুহু।
অর্থঃ হে নবী, আপনার উপরে শান্তি বর্ষিত হউক এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও সমৃদ্ধি সমূহ নাযিল হউক।
এতে মহানবী (সঃ) বলেনঃ আসসালা-মু-আলায়না ওয়া আলা ইবাদিল্লা-হিছছালেহীন।
অর্থঃ আল্লাহর সমৃদ্ধি শান্তি বর্ষিত হউক আমাদের উপরে ও আল্লাহর সৎকর্মশীল বান্দাগণের উপরে।
মহান আল্লাহ এবং মহানবী (সঃ) এই কথোপকথন শুনে ফেরেস্তারা বলেনঃ আশহাদু আল লা-ইলাহা ইলল্লালাহু ওয়া আশহাদুআন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসূলুহু। অর্থঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সঃ) তার বান্দা ও রাসূল। “সুবহানাল্লাহ”।

এবার প্রশ্ন হলো:  আত্তাহিয়্যাতু পড়ার সময় আমরা যে শাহাদাত আঙুল উত্তোলন করি। দেখা যায় যে কিছু কিছু লোক উত্তোলন করে ছেড়ে দেয়, কিছু কিছু লোক আঙুলটাকে আস্তে আস্তে উপরে নিচে নাড়াতে থাকে, আবার কিছু লোক আঙুলটাকে সোজা করে উঠিয়ে আঙুলের দিকে তাকিয়ে থাকে। অনেকে বলেন রাসুলের (সা.) নির্দেশ আঙুলের দিকে তাকিয়ে থাকা। আসলে সঠিক কোনটি?

উত্তর: এ ক্ষেত্রে সহিহ পদ্ধতি হচ্ছে, হাদিস দ্বারা যে টি সাব্যস্ত হয়েছে, নবী (সা.) শাহাদাত আঙুল দিয়ে তাওহিদের ইশারা করতেন, তিনি শাহাদাত আঙুলটাকে নাড়াতেন। যখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করতেন তখন রাসুল (সা.) ইশারা করতেন।

সুতরাং এটা পুরা সময়টাই ইশারা করার বিষয়টি সহিহ হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে। যদি কেউ এভাবে ইশারা করতে চান, তাহলে করতে পারেন। তবে এগুলো মুস্তাহাব বিষয়, এ নিয়ে বাড়াবাড়ির কোনো সুযোগ নেই।

এখন আমি এবং আপনি আত্তাহিয়াতু গুরুত্ব এবং পিছনের ইতিহাস ও আঙ্গুল নাড়ানোর ইতিহাস জানতে পারলাম, এবার একটু চিন্তা করুন তো, এই লেখাটি যদি আপনার মাধ্যমে অন্যান্য মানুষেরাও জানে তাহলে তারাও এই দোয়ার গুরুত্ব বুজতে পারবেন!
তথ্যগুলো দৈনিক সুপ্রভাত বগুড়ার পাঠকদের জন্য [সংগৃহীত]। ভালো লাগলে পোষ্টটি শেয়ার করার অনুরোধ রইলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here