ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে মাছের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে মাঠে নেমেছে মৎস্য বিভাগ

সুপ্রভাত বগুড়া ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড খুলনা, সাতক্ষীরাসহ দেশের উপকূলীয় অঞ্চল। ২৮ জন মৃতের মধ্যে খুলনা বিভাগেই ১১ জন। কাঁচা বাড়িঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হওয়ায় অনেকের নেই মাথা গোঁজার ঠাঁই।

কোথাও কোথাও বেড়িবাধ ভেঙ্গে পানিবন্দি আছেন অনেক মানুষ। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে খুলনা বিভাগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১তে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যে যশোরে ৬ জন, সাতক্ষীরা ২ জন, ঝিনাইদহে ১ জন ও চুয়াডাঙ্গায় ২ জনের প্রাণহানি হয়েছে। বিভাগে ১৩ লাখ মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Pop Ads

পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী আড়াই লাখেরও বেশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছ। ভেসে গেছে কয়েক হাজার মৎস্য ঘের। আম্পানে জোয়ারের জলোচ্ছ্বাস ও অতিবর্ষণে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের রামপাল, মোংলা, বাগেরহাট সদর, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।

ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের। জলোচ্ছ্বাসে মাছের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে মাঠে নেমেছে মৎস্য বিভাগ। এদিকে, উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে করোনা পরিস্থিতি ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছেন জেলা প্রশাসন।

আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত মোংলার সাড়ে তিন হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে কোস্টগার্ড। উপজেলার জয়মনি এলাকায় অসহায় এসব মানুষের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন স্টাফ অফিসার অপারেশন লেফটেন্যান্ট ইমতিয়াজ আলম।

সাতক্ষীরায় ২২ হাজার ৭শ’ ১৫টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত এবং প্রায় ৬১ হাজার ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। কৃষি খাতে ক্ষতি প্রায় একশ’ ৩৭ কোটি ৬১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। মৎস্যসহ প্রাণী সম্পদের ক্ষতিও ব্যাপক। এদিকে, ৮১ কিলোমিটার রাস্তা ও ৫৭ দশমিক ৫০ কিলোমিটার বেড়িবাধের ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া, দেড় শতাধিক বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। এদিকে, সাতক্ষীরায় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে। এসময় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেন।

আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড চুয়াডাঙ্গাও। ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে পড়ে ব্যাহত হয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। অন্যদিকে, ঝড়ের সাথে ভারি বর্ষণে মাগুরায় ঘর-বাড়ি, গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

বিশেষ করে কৃষকের বাণিজ্যিক আবাদের লিচু, আম, পেপে, কলা, ধান, সব্জিসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী এ ঝড়ে সব মিলিয়ে জেলায় শত কোটি টাকার ক্ষতির আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বরিশালে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ আছে বড় দুর্ভোগে।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভরপাশা ও নলুয়া ইউনিয়নে দু’টি বাধ ভেঙ্গে ফসলী জমিগুলো এখনও পানির নিচে। এদিকে, জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার টিন বিতরণ করা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে। এছাড়া, জয়পুরহাটে আম্পানের কারনে ঝড়ে ও প্রচুর বৃষ্টিপাতে বিশেষ করে ধান ও সবজি ক্ষেতের খুব ক্ষতি হয়েছে কৃষকের।

তবে কৃষি অফিস জানায়, তারা এখনো ক্ষতির হিসাব করতে পারেনি, কারন দু’দিনে প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে মাঠে কাজ করা যায়নি। জয়পুরহাটের কালাইয়ে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতির হয়েছে। টানা ভারী বৃষ্টিপাত এবং ভারী বাতাসে পাকা ও কাঁচা ধানের গাছগুলো ক্ষেতে হেলে পড়ে মাটির সঙ্গে লেগে পানির নিচে ডুবে আছে।

ডুবে যাওয়া ধানগুলো নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য কৃষকেরা মাঠে নেমে তাদের ধানের চারাগুলো রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। কৃষকদের স্বপ্নের পাকা ও কাঁচা ধান ক্ষেতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অভাবনীয় ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে, মোংলা, চট্টগ্রামসহ দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোতে পণ্য উঠা-নামার কাজ চলছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here